সুদীপ চট্টোপাধ্যায়
শ্লোক
বিবিধ জলের ধর্ম আমি তো যাচনা করি তোকে
মনে শুধু উচাটন, বিষ নিয়ে অহর্নিশ ঘুরি
ঘুরি পথে ক্লান্ত পায়ে, রক্ত ঝরে গমকে গমকে
মানি না নিজের ছায়া, ছিঁড়ে নিয়ে দেহজ কস্তুরী
দিয়েছি হাঁ-মুখে তোর, বলেছি খা, দ্রুত কর সাঙ্গ
বায়ুমাতা জলমাতা—অগণন শিরাউপশিরা
তোদের রমণ দেখি, দেখি শতশত জননাঙ্গ
বিছিয়ে রয়েছে তীরে, অতৃপ্ত পিশাচী উপোসিরা
শরীরে ধারণ ক’রে আমাকে সন্তানস্নেহে ডাকে
আমি তো বেদেনি ছাড়া এ-জন্মে জননী কন্যা জায়া
কিছুই চিনি না, শুধু বিষথলি আসন্ন বিপাকে
ভর্তি হয়ে এলে, দেহ খুঁজি, খুঁজি অনঙ্গ বেহায়া
বিবিধ জলের ধর্ম, অতঃপর বাঞ্ছা করি তোকে
গরল আধারে ঢুকি পুনরায় আনন্দে ও শোকে
বিসর্জন
প্রথমে তিলার্ধ ঘূর্ণি, হাত রাখো, ভেবেছ ক্ষতি কী
সেও তো জটিল রন্ধ্র, শুরুতে নিরীহ যেন কূপ
যেন জল আছে তাতে, পানযোগ্য, এমনই প্রতীকী
ধীরে ধীরে বাড়ে ব্যাপ্তি, দেখি আলো ফোটে অপরূপ
এবার মন্থনকাল, বাড়ে অন্তরের কোলাহল
দু’দিকে প্রবল টান, শুভাশুভ মিশে একাকার
যাবে কোন দিকে, কোন পক্ষে গেলে তুমি হলাহল
ব্যতিরেকে পাবে সুধা, জানে শুধু সেই টীকাকার
গোপনে যে লিখে রাখে অভিসার, চারিচন্দ্রভেদ
যাচ্ঞা কর তাকে খুব—বিধিবাম পরাস্ত নজর
ঘূর্ণন তথাপি বাড়ে—দেখা দেয় মৃদুমন্দ স্বেদ
লেহন করহ বাছা অগ্নিরস, না-শুনি ওজর
অমনি মুখ পুড়ে যায়, হাহা রবে জল চাও জল
এভাবে তলিয়ে গেলে, টের পাও ফুটেছে কমল
Comments