Posts

Showing posts with the label নির্বাচিত প্রকাশ

কবিতা—নয়ন রায়

Image
  অলংকরণ-নম্রতা বালা (১) চিহ্ন নেই এমন শোকের দিনেও দারুণ উন্মাদনায় টইটুম্বুর কিশোরীর ঠোঁট। উলঙ্গ পায়ে দু'কদম হেঁটেই– ভীষণ ক্লান্ত! মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে গেয়ে উঠলো আবদুল গাফফার চৌধুরীর– দুটো লাইন। "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি" আমি কি তোমায় ভুলিতে পারি? অথচ তার মনে সামান্য রক্তের চিহ্নও নেই। হায় দুমুখো মানুষ এমন শোকের দিনেও শান্তির খোঁজে বিহ্বল… (২) শোকগাথা স্ফটিকগিড়ি হতে নেমে আসেন দেবাদি-দেব বাতাসে বাতাসে তখন একটিই ধ্বনি,একটিই সংবাদ,একটিই শোকগাথা বিবাহযোগ্য কুমারীর প্রয়াণ তাও এক অকালকুষ্মাণ্ডের জন্য। (৩) আকুতি রাত্রি গভীর হলে আরো গভীরে যাই মনে পড়ে— বিক্ষুব্ধ সৈনিকের আকুতি! আহা প্রেম! আমার উন্মাদ কৈশোরকে তুমি এনে দিতে পারতে, একটি সোনালী দুপুর অথবা বিশুদ্ধ বসন্ত। (৪) অভিশাপ জ্যাকেট জানে── কত জল খেয়ে সে প্রতিদিন ক্ষয় হয়। হে সুশ্রী নারী,শুধু তুমি জানলে না জলের বিন্দুগুলো একেকটি অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। (৫) দহন একটি রাতের মাঝামাঝি এসে যখন দেখি আমার সৃজনের থালা শূন্য তখন বুকে ভীষণ রকম জ্বালা হয়। সেদিন যেভাবে জ্বালা হয়েছিল প্রিয়তম মানুষের কষ্ট কুড়ানো দেখে…

কবিতা/অন্যের ডায়রি পড়তে নেই--শুভদীপ রায়

Image
অলংকরণ-নম্রতা বালা   প্রথম রাত একটা একটা পাঁজর সাজিয়ে বাক্স বানিয়েছি। বিদ্যুৎবিবর্ণ ডায়রির পাতাগুলো লুকিয়ে রাখতে হবেই, কারণ এরপর আমি আর কিছু দেখতে চাইনা।  " আমাকে প্রিভিলেজ গ্রাস করিয়াছে " চন্দ্রগ্রহণ হেলেনের কম্বল টেনে খুলে মেঝের বমি পরিষ্কার করব, এর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে খুব মুশকিল- আমি ভালো মানুষ এটা বিশ্বাস করাতে করাতেই  আমার গা গুলিয়ে উঠছে একশোবার। ঐ পোকাগুলোর উপর করুণা হয়- একটুপরেই একসাথে ফ্লাস করে দেব সবশুদ্ধ, তখন ওদের লাশ ঘিরে জন্মের ভোজ ভিখিরি আর পূর্ণিমারাত একশোহাত কাপড় নেমে গেছে সিঁড়ির পাশ দিয়ে। কলঘরের জানলায় চোখ রেখে গোটা সিলেবাস শেষ করে এখন পরীক্ষার জন্য তৈরী হয়েছি- কিন্তু এতগুলো নারকেল দড়ি একসাথে এই ফ্যানে কি ঝোলানো যাবে? আমার জানলার দরজা খুলে যায়- জ্যোৎস্নায় মাখামাখি হয়ে একে একে সব বহুব্যবহৃত গৃহবধূরা হুহু করে ঘরে ঢুকে আসে, বিছানায় এলিয়ে দেয় রমণক্লান্ত শরীর, অনাঘ্রাতা যৌবনের গল্প শোনাতে থাকে  হাসিমুখে, আর থেকে থেকে ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আপশোষ জানায়; আমার পাখায় যে সমস্ত প্রেমিকের ঠিকানা- একথা অজানাই ছিল এতকাল এতকাল পর আমার শরীরে আবার শিহরণ জাগ

কবিতা/বৈদূর্য্য সরকার

Image
  পালটি রোদ বা বৃষ্টির সাথে যারা পালটে নিয়েছে দল তাদের পকেটে ঢোকে অনেক হাসিমুখের ছবি, আমাদের চোখ টাটালেও কেয়ার করিনি কিছু খেলা দেখে গেছি দশ বিশ বছরের কৃষিকাজ।  অনেককিছুর ওপর যারা মুতবে বলেছিল শেষমেশ অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে সরকারি ভাতে, যারা সমাজ বদলে দেবে বলেছিল আজকাল দেখি তারা জড়ো হয় বিলিতি মদের সস্তা ঠেকে  যারা কবিতা দিয়ে ভাঙতে চেয়েছিল দেওয়াল তারা আনমনে লিখে যাচ্ছে 'বিজ্ঞাপন দেবেন না'।  কাউকে গিলে নিয়েছে প্রতিষ্ঠান কাউকে বা দল কেউ মরেছে সংসারে আবার কারো টাকা অসুখ, যারা বাজারে এখন করেকম্মে খাচ্ছে; বোঝা যায় কার কোথায় কী যেন চুলকে যাচ্ছে নিয়ম মেনে ।  কেরানি মাস্টার কর্পোরেট দলগত বুদ্ধিজীবী  সকলের গুহ্যদ্বারে শূল হয়ে প্রবেশ করব যে জিনিস তাকে বলা যেতে পারে প্রকৃত কবিতা,  কেউ কেউ চেষ্টা করেছিলেন যদিও সফলতা ধরা দেয়নি বড় সহজে, কেননা আমরা জানি কোনোদিন প্রসব বেদনা ছিল না খচ্চরদের ।  হিল টপ পাহাড়ে সুইসাইড পয়েন্ট দেখতে এসে বরাবর আমার মনে হয়েছে, সত্যি কি এখানে আদৌ কেউ... যেকোনো হত্যা লোককে ডেকে এনে দেখানো যায় কি !  কারোকারোর মুখে শুনেছি সুন্দর দৃশ্য দেখলে লোকে নাকি পেগলে মরার জন্যে ছটফট করে, সে

নির্বাচিত তারককুমার পোদ্দার

Image
নির্বাচিত কবিতা ছয় তারককুমার পোদ্দার  স্বপ্নময় দিন এই যে হাওয়া, উতল হাওয়া আসলে কোথাও বৃষ্টি থমকে আছে। সেদিকেই অভিমুখ, জলজ সম্পন্ন পরিতাপ পাতায় পাতায় অন‍্য গান, মৃদু আলো, স্বপ্নময় দিন মনে করো একটা ছবি স্থির অথচ স্থির নয় দিগন্ত কাঁপিয়ে বেজে উঠছে করতালি একটা কিছুর ভেতর সাংঘাতিক জন্ম নিচ্ছে একটা কিছু তেমন কোথাও ভাঙা সিঁড়ি, শ‍্যওলামাখা ঘাট, তোমার আঁচলের গন্ধ আর ফুরিয়ে যাওয়া একটা রাস্তা দু'ধারের গাছ থেকে ফিসফিস কথামাখা রাস্তা সেখানে পড়ে আছে ভাঙা অক্ষর আর অজস্র ঝরা ফুল! অচেনা হরফ তবু সেই চিরচেনা, গড়িয়ে যাচ্ছে নমিত স্তবক আর স্তব্ধতাটুকু তখনই ঝমঝম আলো এমনই নীরব তার অজস্রতায় তুমিও আসমানী চমৎকার পালকের ছবি বাইরে তখনো কিছু উন্নাসিক চোখ কি করে বোঝাব এত আলো চাইনি কখনো ফিরে আসছি ফটক পেরিয়ে পকেটে ভাঁজ করা অচেনা হরফ বোতামখোলা বিকেলগুলোয় আঙুল নাড়িয়ে ফিরে আসছি সিঁড়ি ভেঙে যেদিকে নেমে গেছে কথা আজও মাঝরাতে স্মৃতির মেদুরতায় দ‍্যুতিগুলো ছড়িয়ে পড়ে! নমিত স্তবক আর স্তব্ধতাটুকু গন্তব‍্য কেউ জিতে গেছে মানে তুমি হেরেগেছো, তা কিন্তু নয় জীবন মানে কি শুধুই জড়িয়ে থাকা কিছু প্রচ্ছন্ন ঋতু! জীবন মানে এমন উচ্চতায় পৌছো

তন্ময় ভট্টাচার্য

Image
এক গুচ্ছ কবিতা তন্ময় ভট্টাচার্য   (ক) অমোঘ আর কে কে মনে রাখবে, ভুলে-যাওয়া কোন নারীর স্মৃতিতে ফিরে-ফিরে আসব প্রতারক হয়ে  শ্মশানবন্ধুরা কোনো গুজব ছড়াবে, নাকি রাত ক্রমশ বাড়ছে দেখে তাড়াহুড়ো, দাহের জোগাড়  বাড়ি-অব্দি কেউ নেই, মাঝপথে যে-যার রাস্তায় কিছুদিন মনোকষ্ট, সোঁদাচোখ, আহা-রে-বয়স  সকলি ফুরায় মা গো, কুহকিনী আশা, বেঁচে থাক্‌— আমি তো লেখাও কিছু, অমোঘ সন্ততি, রেখে যাব!  (খ) রৌরব  মৃত ইঁদুরের মতো একপ্রান্ত ধরে তুলি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখি পটুত্ব কেমন ঘুম ও যৌনতা ছাড়া আর কী কী দেবে, দেখি সৌভাগ্য, লেখার ভাষা, তামসব্যঞ্জন হজম না-হোক, সাধ্য আছে কিনা মেপে দেখি আমাকে সহ্যের চেষ্টা, অফুরন্ত মন— হে মৃত ইঁদুর, তোমরা অভিজ্ঞতা থেকে বলো এর সঙ্গে থাকা যায় কিছুটা জীবন?  (গ) দর্শন বা প্রেম, প্রেমের ইচ্ছা, প্রেমনামে আকুতি যেন-বা তোমাকে ছুটিয়ে মারে পথে  কোথায় দর্শন পাবে? ছায়াচিত্র, মাঘীরাত— জেনেছ যেহেতু, আছে আছে এমন প্রবল থাকা, না-দেখে কাটানো দায় দেখা পেয়ে গেলে ভয় করে     (ঘ) পুরুষার্থ তোমাকে মুক্তির পথে ঠেলে দিয়ে আমি আজ উন্মুক্তপুরুষ এত হালকা কবে শেষ নেশামুক্তি কেন্দ্রের মালিক ফিরে যাচ্ছ সুস্থ-স্বাভাবিক তোমার মু

চিরপ্রশান্ত বাগচী

Image
এক গুচ্ছ কবিতা চিরপ্রশান্ত বাগচী   || মুহূর্তে জীবনানন্দ তর থেকে তম হয়ে উঠেছে এখন অসুখ ও অন্ধকার।  আপনার কথাই বেশি করে মনে পড়ছে এখন।  সভ্যতার এমনই অবনমন, পুরনো ইতিহাসের পুনরাবির্ভাব।  ন্যায়-বিচার অধিকার শিক্ষা--- সমূহ শব্দ থেকে এখন  বিদ্রুপ-হাসির সংকেত মুহুর্মুহু মস্তিষ্কে রেখাঙ্কিত।  স্পষ্ট বোধগম্য নয়, মানুষের কোনটা মুখ ও মুখোশ।  তবুও আদমশুমারির সব আদমী লুঠপাট আয়োজনের পক্ষেই  মাথা নত করে।  কিয়ৎকাল পরে বাঁশ সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা...।  শাসন ও শোষণ এমন পরস্পর-সম্পর্কিত যে,  প্রতিবাদে সোচ্চার হলেই কণ্ঠরোধের বিপুল আয়োজন।   রাজপথ এ ভাবেই বুকে ধরে দুঃসহ বেদনার ভার।  কিন্তু ধর্ম?  রাজার পোশাক শুধু নয়, চামড়া ছাড়িয়ে তাকে  শূন্যে ঝুলিয়ে রাখবে ততদিন, যতদিন সূর্য জ্বলনশীল। || রতির্যা সেদিন তোমার কণ্ঠস্বর শোনার পর থেকেই আমি নির্জন একটি দ্বীপে পৌঁছে গেছি।  খনিজ পদার্থের মতন প্রতিটি শব্দ আমি ভাঙছি।  দেখছি কতটা জ্যোতি-সম্ভব, পাউন্ড বা ইউরোর অধিক তার মূল্য-মান।  সেখানে আমিই একা।  শব্দ থেকে ধ্বনির কম্পাঙ্ক এবং কতটা শ্রুতিমধুর---  যা আমাকে যে-কোনও মুহূর্তে ক্রোধী করতে অপারগ,  বরং, ঠিক মরীচিকা নয়

ধৃতিরূপা দাস

Image
  পালতোলা পাথর ধৃতিরূপা দাস (১) শেষ পয়সার মুড়ি মাখা ঠোঙা পড়ে গেল যার আর যে বাকিটা কুড়িয়ে হাঁটছে দুটো লোক জেনো আলাদা আলাদা। নাটকীয় মেঘ ঝরিয়ে ওভাবে মুড়ি পড়ে যায়! ---ভাবতে পারিনা! সমান্তরালে দুটো লোক হেঁটে আলাদা আলাদা পেরিয়ে যাচ্ছে হাত ধরাধরি স্পার্ম ছিটকোনো কাঠ-মড়াগুলো এই আয়ুতেই! আলোতে আলোতে ঘষা লেগে এতো অনতিদূরের ভুট্টা পোড়ায় মিঠে উত্তাপ! গায় এসে লাগে। মসীহর ছুরি,দালাল পতাকা, তেঁতুল বিছে ও চশমা ঘোলানো ছ্যাঁচড়া বৃষ্টি অমীমাংসিত প্যাডেল ঘোরায়। গায় এসে লাগা যে পোহায় মুখে বলতে পারেনা। ছড়ানো মুড়ির নিঃস্ব,ন্যাংটো গায় লেগে থাকা… বলতে পারেনা। (২) অদ্বিতীয় ফুল ফোটে। এতো একা! ধারে কাছে লিলি-ঝোপ বলতে আধ কিমি দূরে কমলা সিঁদুরের পাড়া। গলি হীনমন্যতায় রাস্তা ঘেঁষে বাছে শাক। কতদূর! কতদূর ভরসা করা যায় কীটকে?  তবু দেখো, অপারগ স্নায়ু আরও অপারগ দেহ নিয়ে,চাকা নিয়ে ভোমরা হয়নি কোনোদিন! রেণু বওয়া থলিদের অপেক্ষায় বরং পোস্টার ছেপে কাঠাম করেছে চুরি। টাঙিয়েছে চূড়ামণি। 'আহা কেষ্ট ননি খাও। খাঁটি কিডনি দিয়ে ছাঁকা দুধজাত।' খেয়ে ছোড়ো টিপ করে, লেগে যাক।আধো খাই। বাকি--- এঁটো,

অনিরুদ্ধ সুব্রত

Image
  এক গুচ্ছ কবিতা অনিরুদ্ধ সুব্রত                                   (১) বাড়িটা পরিত্যক্ত সফল হয়েছে, মধ্য নিশির চামচিকিরা উড়ছে এবং ঝুলছে দেয়ালে, খেয়ালে পছন্দ মতো বিপরীত বর্গক্ষেত্রে, বর্গ গুণনে স্তব্ধ সিলিং ফ্যানকে 'ফুঁ'-এ তাচ্ছিল্য করে। জানলার বাইরে কতগুলো জোনাকি তাদের প্রশ্ন অন্য, অবান্তর ধরণ, যা নাকি রাত বাতির অবকাশে, মুখ্য হতে পারত সবুজাভ ঝিকমিক, নিশ্ছিদ্র অসুখের সুখে। দুটি আরশোলা আজ বিছানায় শুয়েছে শুয়ে শুয়ে হাসছে---'বিছানা বা গড়ের মাঠ' মুখে বলছে--- মেঝের নিচের ফুটো গুলোতে দম বন্ধ হয়ে আসত, আপদের কীটনাশকে। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে, জল ঢুকছে গর্তে এক বিবাগী সাপ ফটকের ফোঁকর দিয়ে ঢুকল, অথচ সারারাত ঘুমোতে পারল না সে-- পাথরের বুকে, কোনো স্যাঁতসেতে প্রত্ন-গন্ধে। (২) পুরনো গানের গায়ে ঠোঁটের কাছে, তোমাকে বলবার নতুন কোনো কথা, গচ্ছিত নেই আর কতক প্রতিধ্বনি, দূর পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসে, পুরনো উচ্চারণে, আবার লেগেছে শ্রাবণের ছাঁট তাতে আবৃত্তি করতে গেলেই দেখি, ভিজে ভাব জানি না ভবিতব্য নতুন গান খোঁজে কিনা কেবল কিছু মেঘ রয়েছে হাতে গান গুলো কি রোজ নতুন হয়ে আসে গাইতে গাইতে

সৌমিত ভট্টাচার্য্য

Image
নিজস্ব আঁধারের থেকে সৌমিত ভট্টাচার্য্য (১) আমাদের ঘুমের নীচে– আমাদের ক্ষমতায়নের নীচে সারিবদ্ধ মানুষের অতন্দ্র মুখ  দেখা যায়  ভয় পেতে অক্ষম উদ্ধত দু'হাত  ইচ্ছার নগ্নতাও আমাকে লজ্জিত করে না আর!  রক্তাভ অতীতকে মেনে নিয়ে, কী সহজেই  কেটে যাচ্ছে অসংখ্য বর্ণান্ধ দিন  তবুও আমাদের ভবিষ্য ঘেঁটে, ডেকে এনো সেই মেয়েটিকে যে তার শৈশবকালে  ছবি আঁকা শিখতে পারেনি...  (২) শব্দ থেকে শব্দে সিঁড়ি বেয়ে দীর্ঘশ্বাস ওঠে  যেন  কেউ না শুনতে পায়, কবিতার পদচারণা তোমাকে দেখিনা বহুদিন,  এ-ও তো অভাবেরই সমান!  নির্লিপ্ত কলম তবু চেয়েছে এটুকুই–  অগুনতি স্রোতের মতো, হিসেবি খুচরোর সমুদ্রে  ডুবে যাক নিত্যপ্রয়োজন  ভেসে উঠতে গেলে,  তোমার সর্বস্ব যেন শুধু আমি হই!  (৩) যে ফিরে আসবে না কোনোদিন,  তার পাশে বসো। শোনো হাওয়ার গতিপথ  শোনো কীভাবে তার হৃদয়ের নীচে বয়ে যাচ্ছে উন্মাদ লাভা  দু'ঠোঁটের মাঝে তার জেগে ওঠে জ্বালামুখ, যেন  মৃত্যু লিখছে তার শেষতম লাইন–  উচ্চারণের শেষে, একবার চোখ মুছে নিও। মনে রেখো, জ্বলেপুড়ে ছাই হবে  এই কবিতাও 

পল্লব গোস্বামী'র একগুচ্ছ কবিতা: বাউন্ডুলের চিঠি | এবং

Image
  (পাঁচ) ‌যে ট্রেন আর থামবে না কোনোদিন, সেই ট্রেনের জলভর্তি কামরায় কীভাবে যে আমি ঢুকে পড়েছি নিজেই জানিনা ! নক্ষত্রদের মতো ছুটে চলেছে ম্যাজিক ট্রেন। দু'পাশারি খসলার ক্ষেত, মিশকালো বাবলার বন। দূরের পাহাড়ে কেউ যেন আগুন জ্বেলে দিয়েছে মনে হচ্ছে। জ্বলছে আমার কাছের মানুষটিও। এমন জ্বলন এড়িয়ে আমার খালি মনে হচ্ছে, এখানে একটি নোঙর হলে খুব ভালো হতো। খুব ভালো হতো যদি থাকতো, একটি খেয়াঘাট, আকাশ ধোয়া জল। এই জলই তো আমার মায়া সোনাই। তুমি কি জানোনা এই জল দিয়েই রোজ আমি তোমার পা ধুইয়ে দিই ?  জলকে যে আমি বড়ো ভালোবাসি, যেকোনো পাহাড় গড়িয়ে নেমে আসা, খুঁট ভেজা মানুষের চোখের জল।  (ছয়) তুমি কি জানো, কেমন থাকে ভালোবাসার মানুষ অপমানের পর ? কেমন থাকে, অনাদরের মানুষ বারবার লাথি খেয়ে ? এসব কিছুই জানবে না তুমি। ছোটোবেলায়, এক জ্যোতিষী কুষ্ঠি বিচার করে বলেছিলেন, এ ছেলের লগ্নে চন্দ্র। জন্মছকে, প্রবল গ্রহণ দোষ। দশমে শনি। জাতক খুব দুর্বল, তবে কল্পনাপ্রবণ হবে। খুব কষ্ট পাবে আর শনির মতো জীবন হবে। আশ্চর্জনকভাবে, শনির মতোই একটা জীবন ভেসে যাচ্ছে দেখো। এখন আর তেমন কোনো পড়াশোনা নেই, পড়াশোনা অনুযায়ী কাজ নেই, কাজ করার মতো শরীরও

ছুঁয়ে যাও, নিশাচরী---রক্তিম ভট্টাচার্য

Image
  (১) নিশাচর হতে পারা সহজ কথা নয়। দিনের আলোর মতো স্পষ্ট একটা অন্ধকারে ডুব দিতে হয় গা বাঁচিয়ে। তারপর সাঁতরে পেরিয়ে যেতে হয় প্রত্যেকটা পূর্বজন্মের স্মৃতির পাতলা সর। ফেনা উঠতে থাকে পাকস্থলীর গভীরে। বমি হয়ে যায় মুখস্থ করে আসা সমস্ত সময়ের ক্রীতদাসত্বের ক্রোধ। কোনো এক অযাচিত দুর্নিবার আকর্ষণ টেনে নিয়ে যায় নিশ্ছিদ্র চক্রব্যূহের কেন্দ্রে। হে অনুতাপ, উগ্র ক্ষমাশীলতাই তো আমার লেখা উপন্যাস। ঘৃণার পাত্রে পূর্ণ করে রাখা আছে চরিত্রের কালসন্দর্ভ। সেখান থেকে এক আঁজলা অন্ধকার তুলে নিলে কী এমন ক্ষতি হয়ে যেত, প্রসবযন্ত্রণা? নাকি তুমিও শুধুমাত্র বিখ্যাত হতে পারবে ভেবে চেটে নিয়েছিলে আমার পেচ্ছাপ? এই রাতের মতো সহজটুকু গ্রহণ করো। ফিরিয়ে দাও আমার অসংলগ্ন কৌতূহল। ফিরিয়ে দাও, আমার ছিঁড়ে ফেলা শৈশবের একাধিক বিচ্ছিন্ন ঘটনা। (২) ভারী ভারী কথা আমার ধাতে নেই প্রিয়। তোমার মুখটা দেখতে পাবো না বলেই এই অশনিজর্জর রাত বেছে নিয়েছি আমি। জ্যোৎস্নার মতো অসভ্য মালা আর একটাও নেই এই মহাজগতে। যে শয়তান নারীর নগ্নতার ওপর দিয়ে জিভ বুলিয়ে দেয়, পাতার ঢেউ থেকে চুঁইয়ে পড়া ভিজে ভিজে আলোর স্বেচ্ছাচারিতায় জারিত করে তোমার নাভি, তাকে আর যাই হ

ক বি তা দুই সব্যসাচী মজুমদার

Image
  || একটা দিন একটা দিন,একটা করে জল এগিয়ে যায় গ্রাম্য...নিষ্ফল একটা করে দেবীর মতো গাছ খাদের গায়ে সে যেন মন্তাজ ঘোড়ার মতো মেঘের পিছু নিয়ে পৌঁছে যায় যেখানে উস্কিয়ে রয়েছে কিছু শিশুর দুই হাত আঙুলগুলো কামড়ে আছে দাঁত আবার ফাটে আকাশ তলে হাড় ফুল ফোটার মতন বিস্তার... একটা দিন একটা মনোলগ আলোর মতো হলদে হলো বক || তার মুখোমুখি তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ভেবেছ তোমার যৌন হিড়িকের তৃণভূমি আছে। একটা মধ্যমবর্গের বাতাস কেবল আসে আর যায় ওদিকে চর্বি ভাজার গন্ধ উঠে আসলে আমি ক্ষিদের যথেষ্ট দূরে অপেক্ষা করছি কখন মুরগি পালকের মেয়ে এসে গিলে মেটে দিয়ে যাবে তুমি ভাবছ তৃণভূমি ট্রেন চলে যায়...