Posts

Showing posts with the label মেটাফিকশন

বাসন্তী প্রেম/পিনাকী বসু

Image
অলংকরণ- সুদীপ পরামানিক                             বাসন্তী প্রেম                                                         পিনাকী বসু কো নো এক জ্ঞানী সাধু নাকি মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে বলে গিয়েছিলেন যে ," বিনি পয়সায় দুধ খেতে পারলে গরু কিনবেন না। " ভাবুন , একজন মৃত্যুপথযাত্রী সাধুর কি চূড়ান্ত একটা উপলব্ধি। একদিকে নামকরা সাধু এবং তার প্রবচন বলে কথা - আমাদের এখানে অধিকাংশ ধর্মভীরু কিশোর-কিশোরীরা আজও তাই মনেপ্রাণে সেই ঐতিহাসিক ট্যাগ লাইনটা মেনে চলারই চেষ্টা করেন।   আসুন ,ব্যাপারটা মিলিয়ে নেবার জন্য সরস্বতী পুজোর দিনটাকেই বেছে নেয়া যাক ,কারণ এখনকার কিশোরকিশোরীরা যেমন বিনিপয়সায় শিক্ষার সুযোগ পায় তেমনিই ,ছাত্রছাত্রীদের কাছে সরস্বতী পুজোর দিনটাই হলো "ভ্যালেন্টাইনের দিন" বা খুচরো প্রেমদিবস। - ভেবে দেখুন ,সরস্বতী পুজো বললেই, যে ছবিটা প্রথমে আপনার চোখের সামনে ভেসে উঠবে , সেটা হলো, শাড়ি পড়া স্কুল কলেজের কিছু মেয়ে যাচ্ছে, পাশে পাশে পায়জামা পাঞ্জাবি পড়া কোনো কিশোর ,একমুখ বোকা বোকা দেঁতো হাসি নিয়ে ,তার ছায়াসঙ্গীর মতো হেঁটে চলেছে । যেন ক

কবিতা/বৈদূর্য্য সরকার

Image
  পালটি রোদ বা বৃষ্টির সাথে যারা পালটে নিয়েছে দল তাদের পকেটে ঢোকে অনেক হাসিমুখের ছবি, আমাদের চোখ টাটালেও কেয়ার করিনি কিছু খেলা দেখে গেছি দশ বিশ বছরের কৃষিকাজ।  অনেককিছুর ওপর যারা মুতবে বলেছিল শেষমেশ অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে সরকারি ভাতে, যারা সমাজ বদলে দেবে বলেছিল আজকাল দেখি তারা জড়ো হয় বিলিতি মদের সস্তা ঠেকে  যারা কবিতা দিয়ে ভাঙতে চেয়েছিল দেওয়াল তারা আনমনে লিখে যাচ্ছে 'বিজ্ঞাপন দেবেন না'।  কাউকে গিলে নিয়েছে প্রতিষ্ঠান কাউকে বা দল কেউ মরেছে সংসারে আবার কারো টাকা অসুখ, যারা বাজারে এখন করেকম্মে খাচ্ছে; বোঝা যায় কার কোথায় কী যেন চুলকে যাচ্ছে নিয়ম মেনে ।  কেরানি মাস্টার কর্পোরেট দলগত বুদ্ধিজীবী  সকলের গুহ্যদ্বারে শূল হয়ে প্রবেশ করব যে জিনিস তাকে বলা যেতে পারে প্রকৃত কবিতা,  কেউ কেউ চেষ্টা করেছিলেন যদিও সফলতা ধরা দেয়নি বড় সহজে, কেননা আমরা জানি কোনোদিন প্রসব বেদনা ছিল না খচ্চরদের ।  হিল টপ পাহাড়ে সুইসাইড পয়েন্ট দেখতে এসে বরাবর আমার মনে হয়েছে, সত্যি কি এখানে আদৌ কেউ... যেকোনো হত্যা লোককে ডেকে এনে দেখানো যায় কি !  কারোকারোর মুখে শুনেছি সুন্দর দৃশ্য দেখলে লোকে নাকি পেগলে মরার জন্যে ছটফট করে, সে
Image
“ইয়ে আখরি শম্মেঁ ভি বুঝানে কে লিয়ে আ” সোহম চক্রবর্তী অলংকরণ-নম্রতা বালা (১) জ্বরের গায়ে বাদামী আলোয়ান। একটি লোক হেঁটে গেল হেমন্তের নিঝুম পাড়ায়, একা। ও আসলে রবীন্দ্রনাথের গান। কোন্ গান? ওই যে, ‘বিরহ মধুর হল আজি মধুরাতে’, ওইটা। কী যে বলো, মানুষ আবার গান হয় নাকি? বিরহ আবার মধুর হতে পারে? সাদা কাগজে আঁচড় কাটতে কাটতে এইসব ভেবে চলেছে মাধ্যমিকের ছেলে। ওর জ্বরের গায়ে বাদামী আলোয়ান। আজ বৃষ্টি হয়েছিল খুব। ভূগোল স্যারের গেট দু’ভাগ ছিল জলে। দু’ভাগ ছিল সাইকেল আর সালোয়ারের দল। তার মধ্যেই কোথায় যেন দাঁড়িয়েছিল সেই পাঁচ মিনিট। সেই পাঁচ মিনিট শুধু একসাথে দাঁড়িয়েছিল ওরা। সেই পাঁচ মিনিট পৃথিবীও থমকে যায় যেন, দাঁতে নখ কাটে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। সেই পাঁচ মিনিট হয়ে ওঠে অনন্তকাল। তারপর স্থির জলে ছায়া কাটে সাইকেল, রিক্সাকাকুরা ঘড়ি দেখে নেয়। ফিরতি পথে ‘বহুযুগের ওপার হতে আষাঢ়’ আসে মনে, ভিজে হাওয়ায় পাকিয়ে ওঠে জ্বর। জ্বরের গায়ে বাদামী আলোয়ান। একে ওর বিরহ মনে হয়, অথচ গুটিসুটি জড়িয়ে থাকতে কেমন একটা ইচ্ছেও করে খুব। একটি লোক হেঁটে যায় হেমন্তের নিঝুম পাড়ায়, একা – যেন তেমন কোথাও যাওয়ার নেই তার। মাধ্যমিকের ছেলে গুনগুন করে, ‘

শুভ্র সরকার

Image
বন্ধ, ভাঙা হলুদ একটা জানালা শুভ্র সরকার নীতেশ, ভুলে কামড় পড়ে যাওয়া জিভের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বিব্রত একটা দাঁত। সে দাঁড়িয়ে আছে চেনা কিন্তু পরিচিত নয় একটা জানালার পাশে। বন্ধ, ভাঙা একটা জানালা। হলুদ রঙ করা। চলটা ওঠা। যেন উঠোনে কেউ হলুদ একটা পেটিকোট নেড়ে দিয়ে গেছে—যা মূলত উঠোনটাকে আরও বেশি দৃশ্যযোগ্য করে তুলেছে ।  ঠিক কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে নীতেশের জানা নেই। তবে আমপাতার ফাঁক দিয়ে মাঝেমধ্যেই মুখ ফসকে যাচ্ছে ভোরের আলোর। নীতেশ যখন এসেছিল, উঠোনের সারামুখে লেগেছিল চাঁদের কষ। মেঘ আর চাঁদের কথা কাটাকাটির মধ্যে উঠোনে কিশোরীর ফ্রক উড়য়ে গোল গোল ঘুরছিল অন্ধকার। বোবার ইশারার মতো সেই অন্ধকারটা এখন দাঁড়িয়ে আছে আলোর কাছাকাছি। দাঁড়িয়ে আছে মাথা নিচু ক’রে। চাঁদটাও ততোক্ষণে বৃদ্ধার শুকনো স্তন—আভাহীন। একটা থান কাপড়ের প্রাদুর্ভাবেই নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে বসে আছে।  অন্ধকারের এমন আলো হয়ে যাওয়া ব্যাপারটা নীতেশের অদ্ভুত লাগে। মৃত্যুকে এতো সহজভাবে আর কে মেনে নিতে পেরেছে! মানুষের বেঁচে থাকার যৌক্তিকতা চুরমার করে দেয় এই দৃশ্য। নীতেশের মনে হয় বেঁচে থাকা মূলত জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা। বন্ধ, ভাঙা একটা জানালা—যেটা হতে পারতো এক