Posts

Showing posts with the label ১ম বর্ষপূর্তি সংখ্যা

প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী

Image
  প্রত্যক্ষ এত যে অশ্রুঋণ, কার কাছে জমা রেখে যাই নিয়তি চাক্ষুষ করি, নিষ্পাপ দিনলিপি লিখে স্মৃতিও আঘাত করে, বিনাবাক্যে যখন-তখন লিখলে বিষণ্ণতা, না বলে দেখেছি বহুকাল তাকে লুকোবার কোনও স্থান নেই পাঁজরের ভাঁজে ভিতরে অলস মন সারাদিন মন্থর চলে অথচ জীবিকা বলে ওঠো, জাগো দেরি হয়ে যায় পারদের ওঠানামা বিষাদের ঘরবাড়ি যেন নিজেকে বোঝানো তবু, নিজেকে বোঝানো তবু, তবু… ব্যথারও জীবন থাকে – জীবনেরও শেষ থাকে, শেষে পদ্ধতি এবারের টাস্ক হলো, সাম্প্রতিকতম ব্যথাকে অবদমন করা। সম্পূর্ণ নির্মূল করা নয়। তাই ‘পুরনো দুঃখ-নতুন দুঃখের’ খেলাটা নিয়ে বসা যাক। নতুন দুঃখের ওপর ক্রমাগত পুরনো দুঃখের চাপ দিতে থাকলে একটা সময়ে নতুন দুঃখ বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। এই সুযোগে, এই সুযোগে আপনি কায়দা করে পুরনো দুঃখের কাছে চলে যান। পরবর্তীকালে যখন নতুন দুঃখের কাছে ফিরে আসবেন, দেখবেন ততক্ষণে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে ক্ষতের ওপর রক্তেরই আস্তরণ পড়েছে। কারণ সে-ও ধীরে ধীরে পুরনো হওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। কেমন? ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিয়ে নিলেন তো?

পূর্বা মুখোপাধ্যায়

Image
    প্রিয় পদাবলী নিবেদন প্রস্তরজ্ঞানে আলিঙ্গন করি এসো সখাজ্ঞানে অভিমান করি ব্রহ্মজ্ঞানে নিবেদন করি রাগ, শ্বাসের মুকুল... বিরহ আমার আর চঞ্চলতা জানবে না কখনও, ওগো রণছোড় লালা! আমার দুয়ার দেওয়া ঘরের আঁধারে প্রবেশ করবে না কোনও শিখাময়ী জ্বালা... জগৎ নির্বাপিত হলো শুধু একটিমাত্র ওড়নার স্খলনে। ভাবোল্লাস ঝরোখা-সর্বস্ব হয়ে বসে আছি তবু মন পোড়ে পুড়ে ছাইরং হলে খিলখিল হাসি ফোটে নিকষ পাথরে... পাথরে পরাই হার, সে হারে ফুটিল বঁধু কুসুমআকার  শান্ত কিছু অদাহ্যতা, উন্মাদ করেছ তাকে প্রলাপে আবার... তুমি শ্বেতকলিকায় ফোঁটা হয়ে পুনঃপুন নাম নাও, রস আমি তা হৃদয়মধ্যভাগে রাখি ... চিরন্তন, মাধুর্যপরশ  কুসুমের বৃন্তগুলি রক্তরাগে জাগে, ওরা মগ্ন পারিজাত  ঈষৎ আনত, নম্র... পুলকে উল্লাসে কাঁপে দেহকাণ্ডে ঘুমের প্রপাত নীল ঘূর্ণিজল দূরে সাড়া দিয়ে ওঠে 'ওরে, রঙিনের মন জানবি আয়' অথচ আমার মন কুলুঙ্গিতে পোড়ে আজও অর্থহীন, শান্ত ঝরোখায়।

কস্তুরী সেন

Image
  বাকি প্রথমে অল্পই আঁচ, ধিকিধিকি হাওয়া প্রথমে ‘আবার কতদিন পরে দেখা হল!’ প্রথম ‘মাধবী’বিতানে হল দেরি পুলকে ততও হয়নি, নাট্যকলা, ধুলো ধুলো নন্দন চত্বর… সকলই তো কতদিন, কতদিন পর – কেউ কিছু টের পায়নি। প্রথমের কতদিন গেলে, বাজ পড়ে, দুমড়ে যায় শরীরের রেখা ‘প্রথম লেখাটি পড়ছি’…অবিশ্বাস, অল্পদূরে জ্বলেপুড়ে আছে সন্দেহ। হে পাঠক, সে আমার আরেকটিমাত্র বাকি লেখা… ভীত অথচ আমিই সে জিহ্বার রক্তদাগ মধ্যরাতে সর্বস্ব ছিনতাই নক্ষত্রের, ফসলের কথা বলে আমিই সে আচম্বিতে পিঠে মারা ছুরি আমিই সে কর আদায়, শ্যেনদৃষ্টি আমিই সে মুক্তির যাচনামাত্র বাতাসে শীৎকারশব্দে ছুটে যাওয়া দুরন্ত চাবুক আমিই করুণাভিক্ষা আমিই স্নানের প্রার্থী একবার চোখ রেখে চোখে ছেড়ে যাচ্ছি, চিনে যাচ্ছি ও বলুক ফেলে যাচ্ছি তোকে...

সব্যসাচী মজুমদার

Image
  সমান্তরালে সমান্তরালে ছুটে যাচ্ছিলে        তুমি… আলো পড়ছিল,পাতা কাঁপছিল, ধুলোর ওপারে দেখা যাচ্ছিল, যার ছবি নেই সেও ছুটছিল তোমার   সঙ্গে… ছায়া নেই তার জল নেই তার সমান্তরালে খুলে ফেলছিল দেহ প্রার্থনা        ছুটে যাচ্ছিল আমি তার কিছু কান্নাকে জানি          পুষ্করপম আমি তার কিছু পাখিকুল চিনি যাদের ওরফে জমি জল ঘটে              রজঃশ্বলাতে… ও ভেজা ও ভেজা,ও মাটি, ও বিষ,ও কেদার, ও মাঠ,ও দল, ও রোয়া,ও বাঁশি, ও মৃদু,ও কাক, শ্রাবণ তোমার কাছে নথিবদ্ধ থাক ও মৌ,ও বাড়ি, ও ফল,ও মাছি, ও ছায়া,ও সুর, ও রাগ,ও ঝিল, বৃষ্টিপাত গড়ে দিল আমার জমিন… ও পা,ও আয়ু, ও রেণু,ও ঘেউ, ও ক্ষোভ,ও ঘুম, ও গাছ,ও বই, ও ফল,ও লোক, সে জলে এখনও বুঝি নামেনি বালক!

সুদীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
শ্লোক বিবিধ জলের ধর্ম আমি তো যাচনা করি তোকে মনে শুধু উচাটন, বিষ নিয়ে অহর্নিশ ঘুরি ঘুরি পথে ক্লান্ত পায়ে, রক্ত ঝরে গমকে গমকে মানি না নিজের ছায়া, ছিঁড়ে নিয়ে দেহজ কস্তুরী দিয়েছি হাঁ-মুখে তোর, বলেছি খা, দ্রুত কর সাঙ্গ বায়ুমাতা জলমাতা—অগণন শিরাউপশিরা তোদের রমণ দেখি, দেখি শতশত জননাঙ্গ বিছিয়ে রয়েছে তীরে, অতৃপ্ত পিশাচী উপোসিরা শরীরে ধারণ ক’রে আমাকে সন্তানস্নেহে ডাকে আমি তো বেদেনি ছাড়া এ-জন্মে জননী কন্যা জায়া কিছুই চিনি না, শুধু বিষথলি আসন্ন বিপাকে ভর্তি হয়ে এলে, দেহ খুঁজি, খুঁজি অনঙ্গ বেহায়া বিবিধ জলের ধর্ম, অতঃপর বাঞ্ছা করি তোকে গরল আধারে ঢুকি পুনরায় আনন্দে ও শোকে বিসর্জন প্রথমে তিলার্ধ ঘূর্ণি, হাত রাখো, ভেবেছ ক্ষতি কী সেও তো জটিল রন্ধ্র, শুরুতে নিরীহ যেন কূপ যেন জল আছে তাতে, পানযোগ্য, এমনই প্রতীকী ধীরে ধীরে বাড়ে ব্যাপ্তি, দেখি আলো ফোটে অপরূপ এবার মন্থনকাল, বাড়ে অন্তরের কোলাহল দু’দিকে প্রবল টান, শুভাশুভ মিশে একাকার যাবে কোন দিকে, কোন পক্ষে গেলে তুমি হলাহল ব্যতিরেকে পাবে সুধা, জানে শুধু সেই টীকাকার গোপনে যে লিখে রাখে অভিসার, চারিচন্দ্রভেদ যাচ্‌ঞা কর তাকে খুব—বিধিবাম পরাস্ত নজর ঘূর্ণন তথাপি

অংশুমান কর

Image
  দয়াময়   (১) জলের নীচে কী আছে? মাটি। কাদা। ঘাস। নুড়ি-পাথর। ভাঙা শাঁখা। একপাটি চপ্পল। জল কি জানে না? জানে। তবু জল বিশ্বাস করে জলের নীচে আছে রূপোর পালঙ্ক। তাতে শুয়ে রাজকুমারী। তার বয়স ষোলো। মাথার কাছে জিয়নকাঠি। জলের নীচে কী আছে জল জানে। তবু সে গল্প শোনায় ঘাটে আসা ছেলেদের। ওইটুকু মিথ্যে না-বললে ওরা কেন ঝাঁপ দেবে তার শরীরে? কী করে উঠবে জল কেঁপে কেঁপে? দয়াময় ভাবেন আর মিটিমিটি হাসেন। (২) একটিই সন্তান দয়াময়ের। তার লিঙ্গ নেই। সে বালক নয়, বালিকাও নয়। এত বছরেও তার বয়স বাড়েনি এক ফোঁটা। তার বন্ধু শিশুরা। তারাই ওকে খাওয়ায়। ওর সঙ্গে খেলে। কখনও কখনও বাবুই পাখির বাসার মধ্যে সে লুকিয়ে পড়ে। শুয়ে পড়ে ট্রাক্টরের চাকার তলায়। পুকুরের ঘূর্ণির মধ্যে একদিন তাকে ভাসতে দেখেছিলেন স্বয়ং দয়াময়। তবে আজ অবধি নিজের সন্তানকে নিয়ে বিচলিত হননি দয়াময়। ওর মঙ্গলকামনায় বটতলায় লাল সুতোর গিঁট বেঁধেছে রাখহরি কবিয়াল আর যাত্রাপার্টির হরলাল। নিজের চোখে দেখেছেন দয়াময়। সব গ্রামেই আছে রাখহরি আর হরলাল। আর একটি সন্তান দয়াময়ের। নাম বিস্ময়।

সুমন গুণ

Image
  সঙ্গ মঞ্চের উল্লাসে আছ, দূর থেকে দেখে কলেজ স্ট্রিটের দিকে যাই। কোনও দিন সঙ্গে থাকে পরিপাটি পঁচিশ বছর, দাঁড়িয়ে উল্লাস দেখে, আমি মুখ ঘুরিয়ে সামনে এগোই। কবিতাসংলগ্ন কোনও মঞ্চ নেই, আলো নেই, শুধু পরের সংখ্যার জন্য বন্ধুদের উত্তেজনা আছে। যাত্রা মুহূর্ত সামান্য ছিল, অমনস্ক, উচ্চাশাবিহীন। তিনচারমাস পরে আলো পড়ল আচমকা দূরের মৃদুকক্ষে, কোনও বার্তা সত্যিই ছিল না, সাবধানে কয়েকটি দুর্লভ সিঁড়ি ধরা পড়ল ভেতরের দিকে হয়ত সময় তার ঐতিহ্যসম্মত পরিণামে যাত্রা পাবে, হাতে আসবে সমাদৃত শস্য ও কাঞ্চন, নিষিদ্ধে সঞ্চয় হবে, পাশের টেবিলে শংসাপত্র নিয়ে বসবে দূরের তরুণ এই দৃশ্য নির্ধারিত, শেষের আগের অঙ্কে এসে দেখতে পাই পরবর্তী আয়োজনগুলি কীভাবে পালিত হবে শূন্যকক্ষে, সামনে ধূধূ চেয়ারের সারি, অথচ নাটক তার নির্ধারিত সূচি মেনে প্রতিদিনই বিজ্ঞাপিত হবে

বিজয় সিংহ

Image
  হনন হারপুন বাতাসে ছুঁড়ে যাঁরা জলগর্ভ খুঁড়েছেন অক্ষম বংশজ আমি তাঁহাদেরই লিখেছি বিষাদ এফোঁড় ওফোঁড় জিভ করেছে যে নিষাদের মেয়ে আমি তার ছুঁচের বিরহ তবু মনঘুড়ি উড়তেছিল বলে এই হাওয়ার কুটিরে ডেকে নাও তবু এত কঠিন কবিতা কেন লিখেছেন স্যার বলে আমরুত বাগানে ফিরেছিলে এদিকে আত্মহত্যার দিন গত হয়ে যায় এদিকে আত্মহত্যার রাত বেসুমার উপড়ে ফেলে চোখ আর চাঁদের গভীরে গিয়ে মায়াব্রহ্ম ঘুমায়ে গিয়েছে হাঁসেরা উৎসের চূড়ান্তে এসে নিশিচক্র স্থির হয়ে আছে বর্ণ-বিভ্রমের রাত থকথকে মাংসপিণ্ড নিয়ে চাঁদ দেখা দিক অনেক দড়ির ফাঁস আমরুত বাগানে দোলে তথা দুলেছিল বলে বিজয়কুমার ছিলে রজনীর অম্নিবাসে আজ কোয়াক কোয়াক ডাকছে বিদেশি হাঁসেরা তাদের চঞ্চুর রং অবাঙালি লাল চোখে বঙ্গীয় সবুজ

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়

Image
  পথে যেতে যেতে (১) আরে দূর! চলতে চলতে শুধু আনন্দের কথা বলে যাই যদি,মন ভাববে,ঘুমের মধ্যেই সারাটা পথ পেরিয়ে এলাম বুঝি! তোমরা সুখ শুনতে ভালোবাসো।সুখ,শুশ্রূষা দেয়,তাই। তোমাদের হাই-তোলা দুপুরগুলোকে নিভৃতি দেয়।গান পাইয়ে দেয়। আমি বলব বিষফলের কথা।মাগীবাজি আর মস্ত চুরিবিদ্যার কথা।সেই যেখানে গরীব,পান্তা ফুরোলে আরো গরীব হয়,সেইসব কাঁটাওয়ালা সংসারের কথা।পাতা থেকে বৃষ্টিজল ঝরে পড়ার মতো,আঘাতে টুপটাপ ঝরে-পড়া মানুষদের কথা।সব বলব! আনন্দ তোলা থাক উপনিষদের পাতায় বরং (২) একদিন কাঁচবসানো পাঁচিলে হেঁটেছিলাম। একদিন জলেঝড়ে মিছিলে মিশেছিলাম। আজ,বিলাসিতা লাগে।   মৃণাল সেনের ছবিতে ত্রাণের জন্য ফান্ড তুলতে তুলতে ক্লান্ত মেয়েটি পার্কস্ট্রিটে আইসক্রিম খেতে চেয়েছিল যেমন! কন্যা জন্মালে, তার নাম না রেখে, মাটির হাঁড়ি করে নদীতে ভাসাতে যাব, ভাবতে ভাবতেই তারপর কান্না মুছে, চোখে সুরমা পরতে শিখে গেলাম। শুকনো দেয়ালে পুষ্টিকর বিজ্ঞাপন বসল। সকাতর লেখালেখি। এবং, শ্রীহীন কবিতার মতো জীবন,দুধেল গাইয়ের মতো জীবন, এল... এ জীবন নিয়ে কী করব, বঙ্কিমচন্দ্র বলে যাননি আমাকে

তাপস গুপ্ত

Image
  নীল কার্তুজ যে কোনো সুরক্ষিত হত্যার পর মনে হয় ঈশ্বর বসে আছেন প্রান্ত পথে উদাসী যুবকের পদক্ষেপে ঈশ্বর বায়ু অস্থিরতায় নীল কার্তুজ পেয়েছে ঠিকানা মফস্বল গ্রাম্য ঈর্ষার পরিমার্জনে এনেছে সে কিছু শরীরের শ্রমে শিখেছে দাবার বোর্ড ঘর ঘুঁটির চতুর শীতলতা ক্ষরিত ডানায় সময় নামে আলোময় অন্ধকার অথবা আঙুলে জড়ানো তরুলতা শুকিরে নেয় বৃষ্টির পরে রোদে। শ্রীহরি সহায় নক্ষত্র ছায়ায় এখন পাখি আসে না,বরং জোনাকি এলে আত্মীয়তা রং পায় ঝিলমিল, ঢালু জমি গড়িয়ে গেলে তালুতে ধরা পড়ে সবুজ বল, পর্দা ছিঁড়ে ঝাপসা হয়ে উঠছে যে আর্তনাদ সেটা দিগন্ত,ওখানে আলোকিত বাণী পুনঃপ্রচার পেলে পাখিরা নক্ষত্র হয়,গাছেরা গান গায়,জানলা খুলে যায়,অন্ধকার আঁকে আলপনায় শ্রীহরি সহায়।

সংবেদন চক্রবর্তী

Image
  আমারই তো কাজ কিছু কথা বলে যাচ্ছি পরিচর্যা ইতিহাস থেকে কোন শিশুটি পথের ধারে বন তুলসীর ঝোঁপে এক পুরুষের এক মহিলার আনন্দের ভ্রুণ আর খেসারত দিতে হচ্ছে ঈশ্বরকে কাটা ছেঁড়া ভারতবর্ষের রংবেরঙের ফুল তাকে বুকে তুলে নেওয়া আমারই তো কাজ— কোন ছানাটি গাছের নিচে চোখ ফোটেনি এখনও ভবিষ্যৎ চিন্তা করে শটান দাঁড়াই দূরে জ্ঞানহীন ক্ষুধার্ত মাংসাশী তাকে বুকে তুলে নেওয়া আমারই তো কাজ— আমাকে ল্যাং মেরে চলে যাচ্ছে যেজন,সেজন বুদ্ধিজীবী।আমি তাঁর গোপনতা তুলে রাখি বুকে কারণ যেদিন পিছলে পড়ে যাবে নিচে তাঁকে বুকে তুলে নেওয়া আমারই তো কাজ— উদাহরণস্বরূপ অবজ্ঞা অনেকখানি খেটে খাওয়া মানুষের মতো যাদের শরীর থেকে ধারণারা টুপটাপ ঝরে উইয়ের ভঙ্গিমা জানে মহীরুহ ধ্বংসের কারণ— উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে কিছু মানুষ এখন গৃহপালিত পশুর মতো কিছুতেই নাকি কিছুই হয় না তবু কিছু শব্দটাকে গৌণ করে এগিয়ে গেলেই চাঁদ তারা পাখি ফুল এখানেই সব পাওয়া যাবে ধরা যাক একটা ঘরের দরজা জানালা সব বন্ধ যখন করার আর কিছুই থাকে না তখন শুধুই বদ্ধ ঘরে নখ সম্বলএ দাঁড়ায় না ,না আমার না। একটা বেড়াল প্রথমেই লক্ষ্য স্থির করে নেবে চোখের উপর

বিপ্লব ভূঞ্যা

Image
  বহমান আপাতত তেমন কিছুই খুঁজছি আমার সঙ্গে রাজা ও ব্যাধ এক ঘরে শোয় একদিন রাজার অভিষেক হবে সাথে সাথে ব্যাধেরও আমার সঙ্গে এক ঘরে রাজা ও ব্যাধ আমি তেমন একটা গুরুগৃহ খুঁজছি যেখানে বুড়ো আঙুলের দান নেই নেই অস্ত্রশিক্ষা শুধু ভিক্ষাবৃত্তি আর নদী বয়ে যাওয়া... ব্যাসার্ধ জানালা হেমন্ত পাতাই হলুদ চ্যাপ্টার পাতার রমণে ছুঁয়ে পড়ে তিল তিলে তো বসন্ত পোড়ো, বনও বনের পাখি, তারপর তোমার দাবানল অবশিষ্ট জলাধার জানালাকে ব্যাসার্ধ মনে হয় খুলে দেখি নগর পোড়ানো তিলের অসম্ভব বামদিক নিয়ে চোখ ও ব্যাসার্ধ ব্যাসার্ধ মানে জল, মাটি জানালা বন্ধ হলে আর একটি নতুন গ্রহে আসি এসো দীন আজ কৃষ্ণচূড়া বানাই...

অঞ্জন দাস

Image
  ডাক কোনো এক প্রলোভন ডেকে ছিলে গাছের আড়ালে দেহ ফেলে কতবার আড়াল হয়েছি ডাল ডাক সেতো সমদূর পাতা পাতা চিঠি অথবা পালক ইহকাল পরকাল পড়ে ও দেখিনা হায় উপায় বিহীন প্রলোভন ময়ূরে কখনো যেওনা সমস্ত মদের নেশা মাতালের নষ্ট বেচে খায় সে বীরত্ব খসে পড়ে আঙুল ছোঁয়ালে। ফর্দে জমে ঝমঝম টুকরো - কিছু স্নান । এক সিটি, সেদ্ধ হয় যুদ্ধের পেশী। তরবারি ভেঙে দিও- আপেল বাগান ফ্রিজে ফেরে যতসব ন্যাস্টিক চলন। টাটকা মোড়ক খোলো কবিতার ভার। শুনশান গাড়োয়ান উড়ানে উঠেছে। মাথা হ্যাঙ্গ সিগন্যালে ট্রাফিক কুমার আশ্রমে আলো লেখে হরিনীর চোখ। সাতক্ষীরে জ্বর কমে ডানা ফিরে গেলে। রং মুখে বাঁধা হয় আদালতী রাত। বীরত্ব খসে পড়ে আঙুল ছোঁয়ালে

চিরপ্রশান্ত বাগচী

Image
  তর্জনী তর্জনী কি শুধুই আঙুল? না কি অনেক বেশি ধ্রুব? অথবা, অসংখ্য হিংস্র বাঘ-সিংহ... এইসব ভাবতে গিয়েই আমি--- প্রকৃতিপুঞ্জের ঘাম-রক্তের গন্ধ খুঁজে পাই। তাদেরও তর্জনী ছিল। আছে। তবে সেই আঙুল ছিল আলোক-সম্ভব। এখনও আছে, যাদের সমস্তই ন্যূনতম... আর বিশ্বাস; এখন যা চিতার চোখের মতো পুরোটাই আগুন। ডিগবাজি ডিগবাজি বা পাল্টি খাওয়া কিংবা দু'হাত তোলা— এগুলির পিছনে একাধিক কারণ বিদ্যমান। ধরে নাও তোমার ঔদ্ধত্য তোমার কিছু হারানোর ভয়... বরং কিছু মিলতে পারে, এই ভেবেই ডাকতে হবে হুক্কা হুয়া। এই ভেবেই শিক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত যে অস্ত্র, তা-ও দুষ্কৃতীর মতো যথাস্থানে জমা দিতে হবে। কখনও-বা বিবেক-বুদ্ধি। কারণ এখানেও তোমাকে ক-অক্ষর গো মাংসের জুতো খুলে পরিয়ে দিতে হতে পারে। কিংবা হতে পারো ছত্রধর। লোভ এমনই বিষম বস্তু! কিছুদিন আগেই যে বিষয়ে বিষোদ্গার করেছিলে, আজ সব উল্টো। আছে আছে, সমস্ত ফাইল চিত্র। আর্কাইভ। অথচ আপাদমস্তক না কি তোমার নীতি-আদর্শ! এমনকি মৃত্যুকেও তুচ্ছ জ্ঞান... মনে হল আমাদের একটি ভাষা আলোকিত, অন্যটি অন্ধকার।

পরানসখা ব্রজবাসী

Image
  জলে ভেসে যায় হরিদাস ঠাকুর ◾ তবে, যে দেহ দেহশূন্য আলোর শরীর— তার তো অবগাহন নাই ; হাওয়াযানে সখাসনে ভ্রমণ শূন্যদেশ ... তবে, আমাকে গ্রহণ কর নীলসত্তার গহীন পরদেশ— এ দেহ সাদা হল এ দেহ ভঙ্গুর হল ; তোমাতে মিলাতে মন— এ দেহ দিয়েছে আদেশ ৷ ◾ তবে জনমপর যবনিকার দিকে আমাদের পথ ... পথের ওপারে ওই আলোরঙের পথ — ওপথে ময়ূরডানা-রঙের ছায়া পড়েছে কার ? তারাদেশের নদী সাতজন — সে দেহ দেহশূন্য আলোর শরীর সেও স্বর্গত, বায়ুবাহিত অথবা স্থির ; মর্ত্যদেশে ত্রিবেণী ধারায় নামে -- নদীদেহ জলগত হয় ; জান তো, এদেশে সরস্বতী মৃত নদী— সেও আমাদেরই মতো দেহশূন্য শূন্যপথে সে তার দেশে ফিরে যায় ...

দেবার্ঘ সেন

Image
শর্বর শরীরে একটা আশ্চর্য অস্বস্তি হচ্ছে। যেন মনে হচ্ছে— আমার চারপাশে উড়ে বেড়াচ্ছে আরশোলা তারা মনে করাচ্ছে তোমার কথা। আমি, ঘরের মেঝেতে ফাঁকা বাটি উপুড় করে রাখছি। আর মেঝেতে পা ফেললে মেঝেকে মনে হচ্ছে যেন, সুকোমল পনির। তবে কি, আরশোলা মেজাজে বাটির মুকুটে এভাবেই পনির হবে স্বীকৃত শর্বর!! দূরের হরিণ মনের ভেতর আরেকটি মন, পাপড়ি খুলে দিয়ে লেপে দিল সকাল এমন, কোমল প্যাস্টেলে— দূরের হরিণ কাছে এসে, মেলে ধরল খয়েরি বিষাদ যেন। মনের বিম্বে আরেকটি মন, গুললো বরফ, নুন চিনির জল— ঘামের কথা, ঠাণ্ডা হাওয়ায় সংশ্লেষিত হয়ে আবর্তনের বৃষ্টি দিল, তোমার উপেক্ষা...

শীলা বিশ্বাস

Image
জীবন্ত দেবী  (১) আমি নিজের থেকে দূরে গিয়ে দেখেছি আমি বাংলা কবিতার কেউ নই শুধু আঁচল ছাড়োনি বলে এ মহল্লায় আমারও কিছু যাতায়াত আমি কি শ্মশানে গিয়ে অপেক্ষা করব তোমার পুড়ে যাওয়ার নাকি বেদীতে তোমাকে প্রতিষ্ঠা করব হে আমার পড়ে পাওয়া জীবন্ত দেবী তুমি কি আমার খোঁড়া শিশুর ভিক্ষা মা হবে তুমি কি এনে দেবে তাকে শুশ্রূষার ঝুমঝুমি জখমের লাল পেরিয়ে যাওয়া আগুন ও লোহা তুমি কি সন্ধ্যা হলে তার কপালে পরিয়ে দেবে জোনাকির আলো টিপ (২) ভাতের গন্ধ ম ম করছে তবু পুড়ে যাওয়ার আগে কেউ কেন উপুড় দিল না হাঁড়ি এখানে শুধু মড়ক হা হা চিৎকার নদীর কফিনে মানুষ ভেসে যায় এ বিষাদ নগরীর সম্রাজ্ঞী করো না আমাকে যেখানে অনুভূতি রক্ত চুষে খায় আর ইঁদুর পচা গর্ভ চাটে এখানে ঝরোকায় কোনো শীতল নেই এখানে সময় ধ্বংস নগরীর মুসাবিদা লেখে হে আমার জীবন্ত দেবী তুমি কি ছড়িয়ে যাওয়া বিষবাস্পে চন্দনগন্ধী ভোর এনে দেবে প্রার্থনা নয় জেনো এ বাঁচার কঠিন শর্ত  

চন্দন রায়

Image
  ভিতরটা এড়িয়ে গেলেই দেহের ভিতরটা এড়িয়ে যেতে পারলেই করতলে ভীষণভাবে বৃষ্টির শব্দ গান শুনিয়ে যাবে পুষ্প এবং পল্লব দুজনেই একসাথে তোমার সঙ্গে আকাশ পরিক্রমা— ভিতরটা কোনমতে এড়িয়ে যেতে পারলেই রক্তের ভিতর জমা লাল রঙ কোন বিষাদের ছবি এঁকে দেবে না। আত্মপরিচয় ছাড়া অন্য কোন পরিচয় শিরদাঁড়ার কাছে নেমে এসে যুথীর গন্ধ চাইবে না— ভিতরটা এড়িয়ে গেলেই তুমি মহান,তুমি রাজবেশ একটু সরবেন ভাই ! একটা ক্লোজআপ নেব— এত কাছে তবু এত কাছে তবু দীর্ঘ সুদূর মনে হয় এই ছুঁয়ে নেব , মুহূর্তে ডুবে যাই কালো মেঘ স্মৃতি— হাত চঞ্চল হয় , বুক পলাশ কৌতুক পাখিরা উড়ে যায় , ছায়া ছায়া রেখা কাছে নানান পাত্র , ক্রমাগত দুর্নিবার এত নিবিড় তবু দীর্ঘ সুদূর— অনেক পথিক ছুঁয়ে পথ , হেঁটে যায় , সে জানে যেও আমার নয় , তবু ধুলো বুক আঁধার রোদ্দুর জড়ায় , প্রাচীরের মত দেহ আচ্ছন্ন কবিতা এত কাছে তবু এত সুদূর, গ্রন্থি ছেঁড়া সমাধি পল্লব—

বেবী সাউ

Image
  সীতা যে রাস্তা তোমার, তার মাটিতে পায়ের ছাপ এখনো জাগ্রত কাদের পায়ের ছাপ জুড়ে জুড়ে কোনো একটি পথ গড়ে ওঠে? দু'পাশে চাষের মাঠ, শস্য খেত জুড়ে কার আত্মীয়তা আজও আলপথে পড়ে আছে, শুনেছি লুকিয়ে থাকে এখানেই আদিম মাদল চাষীবউ ধান বোনে, লাঙল তাকেও খায় বৃষ্টি পড়ে অন্ধকার থেকে দেখি কোনও জলটুঙ্গি ভেসে আছে, কেউ কেউ মুখ লুকিয়ে তার স্বাভাবিক নৌকো থেকে জাল ফেলছে মাছেদের গ্রামের ভেতর। এসময় নিজেকেও মাছরাঙা পাখিটির সরু চেনা ঠোঁট মনে হয়। তোমাকে এসব বলি আমি চুপিচুপি কে এসেছে দেখ---ঝোঁপের ভেতর থেকে বাঘের শরীর দেখি অনন্তে শয়ান। লিলিথ রঙিন চুলের মেয়ে বসে আছে পৃথিবীর ধারে একটি দুটি পাখি তাকে কেবলই তপ্ত করে আজও আকাশ কি ভুলে গেছে তারও ছিল মুখ দেখবার নদী শান্ত সবুজের পথ ছিল তারও এখন তুমুল কোনো জনপ্রিয় রোদ এসে তাকে বলেছে, অনেক হলো ; এবার আলোর দিকে হাঁটো রঙিন চুলের মেয়ে, রঙে ও বসন্তে মিশে গিয়ে একটি গাছের মতো নিজের শেকড়ে ডুব দেয়...

তমোঘ্ন মুখোপাধ্যায়

Image
রাখালযুগ আমায় ছিঁড়ে ফেলবে, ফুল? আমি তোমার তেমন শত্তুর আদপে নই। আজ আমার উপায়হীন মেষপালন দিন। প্রতিটি পশু অনেক দূর, প্রতিটি পশু ছদ্মবেশী যম। ঘাসের প্রাণ তলিয়ে যায়; ওপর থেকে লক্ষ কোটি হুর সমস্বরে উঠল হেসে। এদিকে বিধি এমন সঙ্গীন, ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যাই; জলের পিঠে শিশুকালের ভ্রম... আমার বুড়ো মাটির থান ভাসিয়ে কারা দিয়েছে অবেলায়? আমায় কেটে ফেলবে, ফুল? অথচ আমি রক্তবীজ নই। হাত-পা গেল, শিশ্ন গেল, চক্ষু গেল... জয় জগন্নাথ! মাটির থান স্রোতের গ্রাস। স্রোতের নীচে পাথর কেঁপে যায়। পাথর ছিল গ্রহের হাড়। ও ফুল! আমি গ্রহের পশু হই। একটি পশু চরায় আজ হাজার মেষ, ঘনিয়ে আসে রাত। উপায়হীন মেষপালন; মেষের মুখে রাতের কঙ্কাল হরিদ্রাভ ঘাসের বেশে ঢুকছে। জানি বছর পেরোলেই মেষের নাভি ফাটিয়ে দিয়ে জন্ম নেবে নরক-গুলজার। অথচ এই রাখালযুগ স্বর্গ আর নরক ভেঙে কাল ছড়িয়ে দেবে শূন্যতায়... ছড়িয়ে গেল আকাশপথে যেই, ও ফুল! তুমি বিবাহ চাও, অথচ যায় পাতালে সংসার। পাতাল থেকে মর্ত্যমাঠ প্রবাদমতে কোটি জীবন দূর। পৌঁছবার উপায় নেই। পশুর যোনি পেরিয়ে গেছে দিন। জলের নীচে মাটির থান। ফিরব কোথা মারণী শঙ্কায়? আমায় ছিঁড়ে ফেলবে