Posts

Showing posts with the label কবিতা

একটি কবিতা সিরিজ

Image
  ১. নূহের নৌকাটি ভেসে যায় বুক চিরে প্লাবিত বন্যায় কে তুমি মৎস অবতার, ভেসে যাও দুর্বিনীত স্রোত জল ,আমাকে চেনাও সংসার, অর্থ চিন্তা মরণের খেলা এসবের মধ্যে থেকে পড়ে আসে বেলা ভূমিকায় ছিল কিছু পুরাণ বর্ণনা  সেসব ভুলেছি আমি, আমাকে চিনিনা  অথবা চিনেছি স্রোত-জল, জলের পরশ ভেঙে ফেলি নিরন্তর ভরে আনা পুরানো কলস ২. গোপনে ফেরাবো তাকে, প্রতিবার  ভাবের প্রতিটি কথা যেভাবে বলার  বলা হয়ে ওঠেনি কখনো লীন রাত্রি, রাত্রিমথ উড়ে যায় গান ভেসে আসে অপূর্ব সন্ধ্যায় গান শুনে ফিরে আসা হলো না এখনো সমস্ত বিগ্রহ জুড়ে অসীম জোছনা বিগ্রহে দেবতা ছিল অথবা ছিল না  ভাবের প্রতিটি কথা  তোমাকে বলার ছিল নাকি? আমি সেই দোলাচলে ঝুলে থাকি ৩. এই জল, জলস্রোত, এখানে অতল থৈ নেই, নেই থৈ , শুধু ডুব দেওয়া বাকি আছে এখনও রপ্ত নেই, জানা বাকি কতগুলি সাঁতার কৌশল  তাই বুঝি ভারী জলে ডুবে যাওয়া ছাড়া  এখন আমার কিছু বাকি পড়ে নেই ৪. ফিরে আসি অন্ধকারে, পথে চাঁদ আসে, ধীরে পায়ে আমাদের সাথে যেই রাত চন্দ্রাহত সেই রাতে জ্বালাই আগুনে জলের মতন নীল শিখা, রোশনাই প্রলাপ বকার কথা ভাবি ঘুমের ভিতরে চরাচরে কত...

কবিতা গুচ্ছ

Image
  বোধ কি লাভ এ মুঠি শক্ত করে পরিযায়ী ওড়াউড়ি !  আদৃত রাখি পরিমিত কমুন্ডলে স্মৃতি-সম্বল, গণ্ডুষে গ্রহণ প্রেমের অক্ষর– শাল্মলী তলায়, শিশিরের নির্মম স্নানে, প্রচ্ছদ – ছন্দ হীন !  উদ্বায়ী মেঘের মতো গৃদ্ধকূট পাহাড়ের দিকে দৃষ্টির ভরে যাওয়া,  বীতরাগের বিভাব জ্বেলে শ্রমনের মাঝে অগ্রন্হুিত মর্মকথা শুনি  পিনদ্ধ বোধের ভগবৎ উচ্চারণ। তবে, ও বালিহাঁস !   কি লাভ এ মুঠি শক্ত করে পরিযায়ী ওড়াউড়ি ! দ্বন্দ্ব নিশঃব্দ আলোর পথে  বিকচ বিশ্বাস—দ্বিধাহীন, প্রথাগত আদরের গরিষ্ঠ চুম্বন জাগায় জিজীবিষা,অধি-বাসে নির্মিতি নিলীন। প্রথাহীন ভাবে যখনই ভেবেছি তোমাকে গভীর জলের মতো তৎসম উৎসাহে, সাগরের শীতে একাকী রোদ মাখি বিষাদ বেলায়, কমলিনী সাগ্রহে।  অফুরান ফসলের মাঠ, উতরোল উৎসারে তানপুরা বাজে কলতান সুরে… দধীচির অণিক প্রমার মতো ঋত-স্বর জীমূত জীবনের কথা বলে।  মিছিল থেকে নির্মোক নীল মাছি হয়ে দেখেছি, হেমন্তের কুয়াশার শেষে জুগুপ্সার জুজু-রঙের প্লাবনে ভাসে চির-দ্বন্দ্বের আমাদের এ ঘর। সাধনা দুপুর-শরীর ধুলো উড়ে চলে যায় শুণ্য-সীমার সীমন্তে লোচন নাচ পরাশর পথে আয়ু দীর্ঘ হলে কনক তৃষার জলে,অসু...

একটি কবিতা সিরিজ

Image
  ১| আনুনাসিক প্যানপ্যানানি থেকে অনেক দূরে সরে গেছে জাদু-যান কোনও বাম্পারে আর থামানো যাবে না গ্রামীণ মূকাভিনয় চ্যাপলিন বসে আছে স্টিয়ারিং ধরে বেখেয়াল ভাইরাস হয়ে খেয়ে যায় মগজের দানা অশ্রুগ্রন্থি জাগলিং করে ট্রাফিকের বাড়ি পিচকারি নিয়ে আসে শরতের মেঘ , নার্সিসাস এই প্যাস্টেল-দেশে কবিতা কাফেলা । ২| পাদানিতে পা দিয়ে আছে ভিখারিনীর খিলখিল দু- পয়সা বেশি ঝনঝন করে মনের থালায় ঢালাই রাস্তা চিরে ঢুকে যায় খিড়কি বা সদরে ছুটে যায় পাতিহাঁস চিনা মুরগির দল পুণ্যিপুকুরে সাঁতার কাটে দুপুরের সূর্যটা  সেও চাইছে না আজ বিকেল হোক কানা নদীটি আগলে রাখে অন্ধ ঈশাণ মাঝি । ৩| কাঁচা বাঁশের মাচায় পাবে তাসের দেশ বিবি খেলা ঘোরালে সাহেবের রাগ কাগজের নক্সায় একদিকে সুখ ,তার ওপারে অসুখ কবরেজমশাই সাইকেল নিয়ে আসে তার স্টেথো আজো জানে না হৃদয়ের আশেপাশে কতগুলো ভাঙা হাড় আছে । ৪| পার্থেনিয়ামকে দেখতে মন্দ লাগে না শিয়াল কাঁটার পাশে ফুটে আছে হলুদ শৈশব রূপ দু-ফোঁটা রক্ত ঝরাবে, অরূপ দেবে সুধা এইপথে কাজললতা বিক্রি করে মোহ ভালবাসা কাঁদে যত , কাঁদায় না তার কণাও ৫| যাত্রী জাদুকর হলে গাড়িটিও জাদুঘর ধানের মড়াই থেকে নেমে আসে ধাতব ...

একটি কবিতা সিরিজ

Image
(১) ফেরি করি মিছে গন্ধের শোক। সায়ম ফেরি করি                                                ধ্বংসকাল... বৃথা অভিঘাত ভন্তের যোজনায়। স্থিরচক্ষু ;  শ্রাবণ সন্তাপে স্থির। শাদাপত্র সম্মুখে দেখি,  নাকফুল ঝরে আছে... তাই লিখি। নিশ্চিন্দায় লিখি আলো। গর্ভাকারে ভুল ? এত বর্ষা গেল তুমি, না পেয়েছ মাটি তাপ শ্রীপান্থের, কদমের ঘ্রাণ। বণিকের কাছে যাও— আদি সিংহল জলে পর্ণীপথে... পরমদ্রব্যশিষে সেতু ক’রে যাও সে সময়ে কাঙালিয়া ধন শালপাতাটির মতো চেয়ে আছে ; বুনোশিশু হাতে তুলে নেবে না কখনো ? (২) আমারে দেওয়ার মতো কিছুমাত্র ধনী নও, জানি মোক্ষে কী দিতে পারো কল্পনার দিনকানা মেয়ে ! এত লেখো আশাবাদ, রাতপাখি চরাচরে আঁখিমিলন সুরভিরে লেখো। শ্মশানে ব্যথার ঘাটে আনপক্ষী আনমনে ভাবে, এমনই অথর্ব আমি ! সৎকার শিখিনি এখনও !  আহারে শাবক তোর, অবিশ্বাস পুড়ে যায় যেন— হতভাগ্য দম্পতির শোক উড়ে যায়... আমারে শোকের গাঙ মনান্তরে কলস ভরে দেবে ? দাও গ্রীবা, দাও চঞ্চু, পালকপর্ব দাও— অগ্রদান শিখিনি জী...

একটি কবিতা সিরিজ

Image
  নিসর্গতাড়িত (১) বিষন্নতা, অংশত ঝুঁকে আছে, দূর ঝাউবনে গুলিগোলা চলার পরে বেশ শুনশান রাস্তাটি— একটি পাখি শুধু মেঘের দিকে তাকিয়ে ছিল সামান্য টাকার বিনিময়ে, তাহলে সব বিকিয়ে গেল? আর আমাদের রাস্তা হয়ে গেল ওদের রাস্তা! ইথারে কবেকার পুরনো গান ভেসে চলেছে  সময় এক হাত-পা ভাঙা পাথর,         কোমরে ফিক লাগা সাইটিকা আগুন-ঝড়ে পুড়ছে এতদিনের জমানো ভুল দস্তাবেজ। (২) কালো চশমার ভিতর থেকে দেখা সমুদ্র, ঢেউহীন— ভেসে চলেছে উদ্দেশ্যবিহীন নীল নক্ষত্র, ভ্রষ্ট দেবশিশু দূরে দূরে শোকচাপা ঝাউবন।                 উদ্বেগে হাওয়ায় উড়ে যেতে চায়— কিছু না পাওয়া বাতাস আজ একটানা উড়িয়ে নিয়ে  চলেছে শতছিন্ন পাতা,             দিশেহারা গোঁয়ার পাতাটি কতদূর যাবে?  অন্তহীন ধুলোমাখা রাস্তা                        বারবার ছুটে গেছে নিসর্গতাড়িত। (৩) বাবা মা তখনও ঘুমিয়ে  দাঁড়ের ময়নাও বুঝি ঘাড় গোঁজা অন্ধকারে সিঁড়ি গুলো         ...

উপসংহার থেকে ফিরছি —কবিতা সিরিজ

Image
  (১) মাঝে মাঝে মনে হয়  একদিন বোবা হয়ে যাবো  কোটি কোটি কথা মরে পচে লাশ। লাশের গন্ধ সয়ে গেছে নাকে,  অবচেতনায়  নিজেকে নিজের কাছে বড়ো ভয় লাগে  মাঝে মাঝে মনে হয়  প্রায় দু লক্ষ বছর হলো আমি কাঁদিনি। মনে হয়,  আধ-দামড়া ঝকঝকে এক দিনে ব্যস্ত চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছি আর  গোটা দুনিয়ার অলক্ষ্যে খুঁজে চলেছি একটি নিখুঁত হনন। (২) সেদিন ভোর তিনটেয় নিজের হাতে খুলতে পেরেছি জট  পাঁচ-ফুট-আট এক উপদ্রপ  নাক না ডেকে কীভাবে ঘুমাতে পারে আমি প্রথম দেখছি  দেশলাই আছে। চাদরে ছড়ানো অবিন্যস্ত কিছু চোঁয়া মেটাফোর ছাড়া সেভাবে কোনো ডাইরি নেই  ঘুমে ডুবে মহল্লা। ধীরে ধীরে গাঢ় হচ্ছে অ্যালুমিনিয়াম আলো      শুধু একা ছেড়ে যেতে নেই বলে পাহারা দিচ্ছি নিজেকে।                                           (৩) একটি দরজা  বন্ধও নয়, খোলাও নয়। দাঁড়িয়েছি   জৈষ্ঠ্যের সন্ধ্যায় অদ্ভুত হিম। আরেকটু রাতের দিকে  একম...

সম্পর্কগাছ— কবিতা সিরিজ

Image
  (১) ভালোবেসে বহুবার ঠকেছি। সম্পর্কের ভিতর যতই রোদ উঠুক কোথাও যেন মেঘ লুকিয়ে থাকে। কখনো কখনো সেই মেঘ সরে যায়। দূরে কোথাও বৃষ্টি হয়ে প্রাণে শীতল পরশ ছোঁয়ায়। কিছু মেঘ ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করে। ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো। শরীর থেকে খুবলে খুবলে মাংস বার করে।   সকাল থেকে বৃষ্টি পড়ছে। অঝোরে বৃষ্টি। শরতের বৃষ্টি। এই মেঘের ভিতর কি লুকিয়ে আছে সম্পর্কের রোদ? বৃষ্টির ফোঁটা গায়ে লাগে। ভাঙা নৌকায় বসে থাকা কোনো ক্ষুধার্ত নেকড়ে কি এগিয়ে আসবে? জলের ভিতর যত ডুব দিই, ততই মাছ, ততই গভীরে... কাউকে বিশ্বাস করছে না... ভেসে থাকার আনন্দ মানুষ বোঝে যখন সে ডুবতে ভুলে যায়... (২) বিশ্রী হাওয়া বইছে। যেন বাঘের দাঁত। গায়ে এসে দাগ বসিয়ে দেবে। সারাজীবন কতরকম দাগ নিয়ে আমরা জীবনমঞ্চ সাজিয়ে তুলি, কিন্তু হাওয়ার দাগ! এই হাওয়ার ভিতর তুমি দাঁড়িয়েছিলে, বলেছিলে বসন্তবাতাস। শীত ফুরোবার আগেই শীত জাঁকিয়ে বসল। তুমিও তোমার অধিকারে শান দিয়ে হয়ে উঠলে ধারালো। এখন ভাবার, হাওয়ার ভিতর যে দাঁত তা কি কোনো চিরুণি কারখানায় গ্রহণযোগ্য হবে? (৩) সবাইকে খুশি করা তোমার একমাত্র কাজ। তুমি জানো না, কে কীভাবে খুশি হবে। জোকার সাজো, ভাঁড় হও কিংবা বহুর...