তৃতীয়— মাস-সংক্রান্ত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সেক্যুয়া ও কিংস ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্কের প্রথম পোয়েট ল্যরিয়েট। ‘দ্য বেস্ট স্মল ফিকশনস্ ২০১৬’-সহ বহু পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে তাঁর লেখা। এখনও পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ও ফিকশন-বইয়ের সংখ্যা মোট দশ, যাদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ‘দ্য এল্-এ ফিকশন অ্যান্থোলজি’ (রেড হেন প্রেস) এবং ‘আ সাবলাইম অ্যান্ড ট্র্যাজিক ডান্স’ (কোলা নিডলস্)। কবি পেশায় মাউন্ট সান অ্যান্টোনিও কলেজের অধ্যাপক। জন ও তাঁর স্ত্রী অ্যানি সেক্যুয়া ও কিংস ক্যানিয়নের জায়েন্ট ফরেস্টের বিটল্ রক সেন্টারে বিনামূল্যে কবিতা, গল্প, ও চিত্রশিল্পের ক্লাস নেন। এই ক্লাসের দরজা সবার জন্য খোলা, অবারিত। নিউ জার্সি-নিবাসী অনুবাদক সোহম চক্রবর্তী ডিসেম্বর’২০২২ – জানুয়ারী’২০২৩-এ ক্যালিফোর্নিয়া ভ্রমণে গিয়ে সেক্যুয়া ন্যাশনাল পার্কের জায়েন্ট ফরেস্ট মিউজিয়াম থেকে সংগ্রহ করে ২০১৯ সালে প্রকাশিত কবির এই কাব্যগ্রন্থখানি
‘ক্রসিং দ্য হাই সিয়েরা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে চারটি কবিতা;
বাংলা ভাষান্তর
—সোহম চক্রবর্তী
(১)
প্রথম উষ্ণ ভোর, অবিলম্ব বসন্তের আগে
সকালে, গেট খোলার আগে, মিনারেল কিং-গামী রাস্তাটার দু’ধারে নিসর্গটুকু আমরা দেখতে চাই, কিন্তু সম্প্রতি এ উচ্চতায় যেহেতু আর কেউ আসেনি, তাই সূর্যধোয়া পথের পিচে রোদ পোয়াচ্ছিল বনবিড়ালেরা, আমাদের গাড়িটা কাছে আসতেই পাহাড় কিংবা ঝোপের পিছনে তড়িঘড়ি ওরা অদৃশ্য হ’য়ে গেল। তৃতীয়টিকে দেখামাত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে পথের কিনারা অবধি আমি তার পিছুপিছু ছুটি, পাহাড়ের গা বেয়ে তার নেমে যাওয়া দেখতে। ও পালিয়েছে। আর আমার জন্য প’ড়ে আছে এই উপত্যকা, এই নদী, আর ওকগাছের বন।
(২)
আগুনের ঋতু
কেবল আগুনের ঋতুতেই আমি বুঝতে পারি কতখানি অরণ্য আছে আমার ভিতর। আজ সে আমার কণ্ঠ চেপে ধরে। আমার শরীর বলে ওড়ো, কিন্তু উড়ে যাবই বা কোথায়? ডগলাস কাঠবিড়ালিটি হয়তো এতে কিছু মনে করবে না, তবু আমি তা কী ক’রে বুঝব? কেননা আমার যে জানা নেই ওর বীজেদের ভাষা, পেঁচাদের ভাষা, ভালোবাসবার ভাষাও।
(৩)
মিস্ট প্রপাতের উপরে মেঘ
মধ্য-আগস্ট আর বজ্রগর্ভ মেঘেরা
জড়ো হ’চ্ছে মাথার উপর,
এবং কে যেন আমাকে জিজ্ঞাসা করল
বৃষ্টি হবে কি না
যদিও আমি স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি
এই ঘূর্ণমান বিশৃঙ্খলা
কিংবা নিয়ন্ত্রণ কিংবা যা-হোক কিছু একটা থেকে
জন্ম নিচ্ছে মেঘ
এবং সে আমাকে আবারও জিজ্ঞাসা করল
বৃষ্টি হবে কি না,
কিন্তু তার উত্তর ক’রি না আমি কোনও
বরং নিজস্ব সকল চিন্তা
রহস্যই রাখি
কেননা জঙ্গল
রহস্য ভালোবাসে, যেমন ভালোবাসে
মেঘ, এবং আমাকেও।
(৪)
সুগার পাইন
সুদূরবিস্তৃত তৃণভূমির ওপারে একটি সুগার পাইন দেখিয়ে অ্যানি বলল, “কী বিরাট গাছখানা, দ্যাখো”। ও বলছে তার উপরদিকের জংলা প্রশাখাগুলি নীল আকাশের গায়ে মাঝেমধ্যে কেমন বন্যজন্তুর সিল্যুয়েট তৈরি করে। ও বলছে সেগুলি কীভাবে আমাদের ছেলেবেলার স্বপ্নে নিয়ে যায়।
Comments