একটি কবিতা সিরিজ —
১
নক্ষত্রের মাজার সংজ্ঞায়িত
ওতে ওষ্ঠ আর চলে যাওয়াটুকু আছে।
চিরবিড়ানি সিগারেটে ছ্যাঁকা খায় সত্য,
কঠিন স্নায়ুতন্ত্র সরীসৃপ চলাচল
আর শ্মশানের স্থবিরতা।
২
লাল ফুটিফাটা মাটি থেকে যে নীল
তাতে সব উৎক্ষিপ্ত হল।
শ্যাওলা আর সুখ জ্ঞানাতীত, শ্রুতিগোচর হয়,
জ্ঞান থাকলে সমাজের চোখে সফল উন্মাদ হতাম,
তবু হাত পা ছুঁড়ি অনিমিখ।
৩
মায়ের মতন অবক্ষয় শিবালিক,
জড়িয়ে পোড়া মৃত্যুশব্দ দিতে পারি।
উদগ্র দুঃখ নালিশ করেছে আমি বিশ্বাসঘাতক
বুকের মধ্যে গুটিসুটি আবেশে শীতমোচন হয়,
বুড়ো আঙ্গুলই দেখি তবু সবটুকু চাই
সন্ত্রস্ত সিপাই যে উর্বর জমি দিয়ে হাঁটে
তার চাঁদ নক্ষত্র গালে ন্যাকামোয় মাখামাখি হোক,
তবু সবটুকু চাই।
৪
শাদা সমুদ্রে বৈদেশিক আক্রমণে
আয় ব্যয় থাকুক, আক্ষেপ ছুঁড়ে মারো এ বুকে,
ওষুধ খেয়ে ঘুম আসুক।
মালতীগুলঞ্চ মাথার কাছে রাখো
সরোদে বাঁধো বুক, গাঙ ভাসিয়ে চলো।
সত্য ঝাপাঝাপি বৈতরণী পার!
তুমিই সত্য এটাই সহজপাঠের অক্ষরজ্ঞান
এসব নোনা ধবধবে কালো সাদা নিষ্প্রয়োজন।
৫
সরে সরে অন্ধকার উজ্জ্বল পাথরের দৃশ্য
উৎখাত করে বাইরে শব্দব্রহ্ম রাত্রি রচনা,
সময়স্খলনের সাহসিকতা বুক পাতা সটান।
কতটা কল্পমুখরতার উন্মনা তৃতীয় নেত্র উন্মিলন?
মূর্খতার সস্তা নেশার প্রবল ধাক্কায় কপালে অ্যাসিড বৃষ্টি
আবাল্য কংক্রিট জানে কে এই দেহজীর্ণতার দোসর।
৬
যে পুকুরের প্রাচীন অভিশপ্ত ঘাট জল ছুঁয়েছে বট
তার তলায় অশরীরী বাসা বেঁধে আছে,
পাশেই কবর দিয়েছ, আর তার পাশে কবিতা।
এখন থেকে সেখানেই থাকা, দেখলেই ঢিল ছোঁড়ে শ্বাপদের দল।
৭
ব্রাহ্মণকে এঁটো সিগারেট দিই, তারপর
হনহনিয়ে অদেখা নৈঃশব্দ্য বিড়ম্বনায় প্রস্থান।
এখন চর্যাচর্যবিনিশ্চয় পড়েও, বাইরে তালগাছের মাথায়,
দেহ পোড়া কাঠেও, মেট্রোর হ্যাঁশহ্যাঁশানিতেও..
প্ল্যাটফর্মের মেঝেতে রোদ ঠিকরে তোমার উরু দেখা যাচ্ছে আবেদনময়ী, পাহাড়ের সামনে দাঁড়ালে ইচ্ছে করে সেই স্পর্শের কাছে ফিরে যেতে
যেসব নুড়ি পাথর কুড়িয়েছি স্রোতে মিশে মিশে
সে সব বুকের কাছে জড়ো করি
আপাদমস্তক ক্ষমা করতে ইচ্ছে করে এরপর।
৮
শরীর এখন বিধিবদ্ধ সতর্কতা পেরিয়ে অহর্নিশ ঔৎসুক্যে
কোটি কোটি নিদ্রাহীন উন্মেয় নেত্র তোমার রাত্রিতে তাক করা
সফেন করোটির ভেতরে হাজার পংক্তির ঋতুমতী নদীর পাশেও
দীর্ঘ উড়ালপুলের দহনকার্য অন্তে শেষ রাত্রি।
Comments