তৃতীয় — মাস-সংক্রান্ত

1981 সালে বেলারুশের মিনস্কে শহরে (প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ) জন্মগ্রহণ করেন, ভালজিনা মর্ট। আইরিশ টাইমসে "আন্তর্জাতিক কবিতা জগতের উদিত নক্ষত্র" হিসাবে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন । তিনি যখন 2005 সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন, তার আগেই তিনি তার প্রথম বই প্রকাশ করেছিলেন,

" আই অ্যাম অ্যাজ থিন অ্যাজ ইয়োর আইল্যাশস "এবং সারা বিশ্বের পাঠকমহলে তার কবিত'রা যথেষ্ট পরিচিত হয়ে পড়ে । আমেরিকায় তার প্রথম সংগ্রহ, ফ্যাক্টরি অফ টিয়ার্স (2008), প্রশংসা পেয়েছে: নিউ ইয়র্কার লিখেছে, "মর্ট তার জন্মভূমির জন্য একজন দূত হওয়ার চেষ্টা করেছেন, বেলারুশ এবং এর ভাষার জন্য একটি স্পষ্ট পরিচয় প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে সে সম্পর্কে প্রায় উদ্বেগজনক সোচ্চারতার সাথে লিখেছেন।" তিনি যে বেলারুশিয়ান ভাষায় তার কবিতা রচনা করেন তার কারণ হচ্ছে ঐতিহ্যগত ভাষাকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা, যা তার কাজকে প্রচলিত এবং যুগান্তকারী উভয়তই প্রকাশ করে। মর্ট 2005 সালে স্লোভেনিয়ায় ক্রিস্টাল অফ ভিলেনিকা পুরস্কার এবং 2008 সালে জার্মানিতে বুর্দা কবিতা পুরস্কার পান। তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন এবং নিউইয়র্কের ইথাকাতে থাকেন।



আমি কোথা থেকে আসছি –ভালজিনা মর্ট

বাংলা ভাষান্তর

তনিমা হাজরা 



(১)

আমার মাতৃভূমি তাদের হাড়ের চাবিগুলিকে ঝাঁকুনি দিয়ে বলে, ওই দেখো আদিজননী ইভ তার লাল চোখের পাতা খুলে তোমাদের দেখছে।

মথ-খাওয়া বরফের নীচে
আমার মাতৃভূমির উত্তম কঙ্কালগুলি
শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে।

আমার মাতৃভূমিতে মানুষ কুয়োর জলের কাছে নতজানু হয়,

আমার মাতৃভূমিতে লোকেরা উড়ন্ত 
পাখিদের ক্রুশচিহ্ন যূথে উড়বার গতির কাছে প্রার্থনা করে।

এক একটি হাড়
আমাদের মানুষদের জেগে উঠবার একটি একটি চাবিকাঠি.

আমাদের নাগরিকদের মধ্যে
কেবল মৃত মানুষদেরই একটা করে মুখ আছে।

তবুও একটাই প্রশ্ন,
আমি কোথা থেকে এসেছি?


(২)

সোনার সুতোর বেরেটে এমব্রয়ডারি করা পোশাক পরণে
ওই যে মহিলা সন্তদের দল

তারা কেন তোমার পায়ের কাছে,
অমন পোষা প্রাণীর মত বসে আছে?

ময়ূরের পেখমওয়ালা কোনো দেবদূত,
যাদের মুখাবয়ব মানুষের মতন,

কিন্তু
তোমার পায়ের কাছে ওরা কারা,
পোষ্য প্রাণীর মতন অমন করে বসে আছে?

এখন, 
তুমি যদি এই ধরনের সোনার বেরেট পরে ফেলতে পারো
তুমি যদি ঠিক একই ভাবে

শিশুদের এবং ফেরেশতাদের বশ করে 
নিয়ন্ত্রণ করতে পারো,

তাহলে তোমার সাদা হাড়বিহীন আঙ্গুল একটি বইয়ের পাতার উপরে উপুড় হয়ে যেমন করে শ্লোকগুলি খোঁজে, ঠিক তেমন করে কাঠের কফিনের উপর লিখিত যন্ত্রণাময় লিপিকাগুলিকে খুঁজে ফিরবে,

তখন কি সোনার বেরেট পরিহিতা
হে পবিত্র সাধ্বীগণ, আপনারা আপনাদের
নিজস্ব কবরী খুলে আমার জিভের উপর তা বিছিয়ে দেবেন?


(৩)

খুব বড় জলাশয়ের জন্য সুবিদিত কোনো একটি গ্রামে যেখানে সমস্ত শিশুগুলি দুটিভাগে ভাগ করে গুণে ফেলা যায়,

এক, যারা জীবিত জিনিসকে আঘাত করে এবং
দুই, যারা নির্জীব জিনিসকে আঘাত করে,

এমনই একটি সবুজ
সুজলা সুফলা গ্রামে
যেখানে আমি নেহাতই অপরিচিত একজন আগন্তুক,
(আমি কোথা থেকে এসেছি?),

সেই গাঁয়ে প্রবেশ করে দেখি
একটি পুরানো গির্জার চারপাশে একটি কবরস্থান,

সেখানে লিখিত ভয়ঙ্কর সব বর্ণমালা
গ্রামের চারপাশে,
সমাধির পাথরের উপর লিখিত সেই বর্ণমালারা

মার্বেল অক্ষর হয়ে তুষারের উপর অজস্র মৃত
মথের মতন পড়ে আছে।

মথ-খাওয়া সেইসব বরফের নীচে শায়িত আছে
আমার মাতৃভূমির উত্তম কঙ্কালগুলি।

ভালজিনা মর্ট






Comments

আরও পড়ুন

সৌমাল্য গরাই

কবিতা সিরিজ

কবিতা সিরিজ —

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৪

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৮

একটি কবিতা সিরিজ —

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ২

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৬