কবিতা — বিধান ঘোষ

ময়ালের শিকার 


(১)

বালিকার কাছে প্রেম ও আলাপ নিয়ে বসি

হাত চুলকাতে থাকে এমন,
যে সবই তুচ্ছ লাগে।

ভাবি, কীভাবে শুরু করবো

কীভাবে পেঁচের ওপর পেঁচ দিয়ে একদম
নিশ্চল বানিয়ে ছাড়বো।

যেন ময়ালের শিকার।


(২)

তথাপি তোমাকে ক্ষমা করতে পারি না,
কেবল মাংসের লোভে এই উঠে আসা

শুধুই আলাপের নাটক,

তারপর সিনেমা সচল
অথচ তোমাকে উপেক্ষা করতে পারছি না

শরীরের প্রতি জীবনের কিছু দায়বদ্ধতা থাকে তো…


(৩)

এবার জীবনে
প্রবেশ করা যায় কি না ভাবছি…

না হওয়া স্ত্রী'র ডাক রান্নাঘর থেকে,

না জন্মানো সন্তান ডাকছে ঘুমের ভেতর…
কল্পনাতে দেখি চোদ্দগুষ্টির বিবাদ, 

তাই

ঘুমের ওষুধ কিনে ফিরে যাচ্ছি।


(৪)

ছাদে দাঁড়ালে অলস লাগে খুব
ঝাঁপ দিতেও ইচ্ছা হয় না

এখন যদি কেউ আকাশ থেকে নেমে আসে
বলবো "পাস কাটিয়ে চলে যাও

আমার চাকরি নেই, ভগবানে ভক্তি নেই,
সরকারে মতি নেই। বিদ্রোহ করে করে আমি এখন ক্লান্ত।"


(৫)

কিছুই বুঝিনা
তাই শুধু শুধু চেয়ে থাকি।

হাভাতের এই তো স্বভাব।

আমাদের পেটের নিচে কে যেন

এক অদ্ভুত ছুরি রেখে ফিরে গিয়েছে,

শিকার দেখলেই সে বেরিয়ে আসে।
এখনো আমি তার গায়ে হাত বুলিয়ে শান্ত করি,
এরপর কী হবে জানি না!


(৬)

আধমরা জলের কাছে 
সোহাগ চলে না

এসব ছেনালি বরকে দেখিও,

বৈধ অবৈধের খেলায় তো অনেক হেরেছি…
তুমি আমার কাছে 
মদের মত প্রিয়।



(৭)

খেয়ালের কাছাকাছি মিশে যায়
জলঙ্গী ও ভাগীরথী

রাত বাড়ে...
আমি তুমি নেশায় বিভঙ্গ
নৌকা ছেড়ে মাঝি ঘুমিয়ে পড়লে

আমরা ভেসে যায় কুয়াশা কুয়াশা ভোরে

বাড়ি ফিরে আসি গায়ে জ্বর নিয়ে!

(৮)


ঘুমের মধ্যে সোনালী মাছ ভাসে
ধার নেই,
 ধার নেই, একদম ভোঁতা…

বিছানায় আঁশ বটি উঠে আসে!
রাত ভোর ঘ'ষে চলে চামড়ার তোতা।

উপসে উপসে বাড়ে তরবারি
একাদশী শেষ হলে ময়ালের মার,

শরীরে শরীরে ওই ঘোড়সওয়ারি
নিশি দিন ফাটিয়েছে উষ্ণ তপ্ত গাঁড়।
তবু তুমি বিছানা, তবুও তুমি…
এইভাবে খুঁড়ে খাও মানবের জমি!

Comments

আরও পড়ুন

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৩

২৩ | ফেব্রুয়ারি সংখ্যা | ২০২৫

তৃতীয়— মাস-সংক্রান্ত

রঙ্গন রায়

কবিতা গুচ্ছ

জুজুতন্ত্রের সমূহ শ্বাপদ এবং হুজ্জতি

সিনেমা-বিষয়ক নিবন্ধ -- জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

একটি কবিতা সিরিজ —

সৌমিক মৈত্র

মনোজ চৌধুরী