বৈদূর্য্য সরকার—কবিতা
ছায়াবৃতা
বসন্ত ফুরিয়ে এলে হাওয়ায় ভাসে গন্ধটুকু তার
জলরঙে আঁকা কৈশোরের ছবি ফিকে হয়ে আসে প্রায়,
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি আলোআঁধারি দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় যার
তার মুখ ভাসে রাস্তার ফুলের দোকানের পাশটায় !
কতদিন দেখা নেই একথা ভাবলে ট্রেন থেমে যায়,
কার ঘাড়ে কে পড়ল মেনে নিলে তুমি কবে কার পোষ
ভিখিরিকে দিয়ে গেলে খাঁটি স্বর্ণমুদ্রা, আমার বেলায়
খিদে আর লাজ হাবিজাবি যতো রাজ্যের স্বপ্নের দোষ !
চৈত্রসেল
কেউ কেউ লিখে যায় ততদূর
ঘেন্নার দাগ পৌঁছোতে পারবে না;
ততখানি লেখা যেখানে যায় না
দলদাস কবিদের লম্বা হাত,
অগোছালো করে দিতে পারল না
বড়লোক প্রেমিকার দ্বিধাদ্বন্দ্ব
কিংবা চাকরিতে লাগা অপমান ;
বহুদূর কেউ লিখে যেতে পারে
পড়ে যদি কেউ হাসে শুধু অল্প ।
যদি
'কত কিছু পাল্টে গেল, তবু চৈত্রশেষে ঢাকঢোল
ভিখিরির দল' এতদূর পড়ে তুমি স্মিত হাসো ;
দাঁড়িয়ে থাকছি আবডালে চেনা সন্ধের শহরে
ভাঙাচোরা মনে ততোধিক দশাশই পাড়াঘর
কার বিকেলের খেলা ফুরিয়েছে কবে, ছেলেবুড়ো
রোয়াকে ফেরেনি, সব ধূলিসাৎ করে ওঠা ফ্ল্যাটে
খিল দেওয়া ব্যালকনিতে কারা সব এসে বসে !
মানুষ নাকি ফুরনো কোনও কাহিনি, কেউ আর
খেয়াল করেনি, হিসেব না মেলা শেষে একবার
যদি দেখা হয়ে যায় আলগোছে ফেরবার পথে !
বইমেলা
সেল্ফিজোন কোন প্রকাশন
কাদের ঘরে ঘোগের বাসা
অথবা কোথায় মিষ্টি হাসি
কাদের বুকে মিছরি ঠাসা !
ভাল লেখা বাতিল ক্রিটিক
কোন ছকেতে কে কার ভাই
ভদ্রলোকের ফটোয় মালা
কিং নেই তো কুইন বানাই ।
সব কথা ভাই মঞ্চে উঠে
যায় কি বলা তেলের রাজ্যে
মেলায় এসে কোনের ঘরে
কোন সেয়ানা চপ ভাজছে !
প্রয়াস
অভিমান ছেড়ে লিখতে বসাই ভাল নয়তো এতো গঞ্জনা
ছেলেবেলা থেকে ; বাপ মা জানতো চাকরি করে সংসার
তার আগে বড়জোর খেলাধুলা আড্ডা,সদ্য যুবতী মেয়েরা
যা শুনতে চায় -বন্ধুরা শুনিয়েছিল ফরেন কারেন্সি,
পূর্বজন্মের সুকৃতি না থাকলে পাড়াপ্রতিবেশি
অফিসের বস পাত্রীপক্ষ শরীরে জ্বালা ধরিয়ে
হেসেছে খানিক বিয়েথা সন্তান রোজগার ও ব্যর্থতা ;
মঞ্চ পুরস্কারে ডাকেনি বিশেষ কেউ, তারপর কোন মুখে
হোয়াটসঅ্যাপে আপনাকে লেখা পাঠাবো বলুন !
Comments