কবিতা
কাচের ভাষায় লেখা
অনুতাপ
কী লিখেছি এতকাল? কিছু না, কিছু না
সমস্ত জীবন থেকে পাশ ফিরে শুয়ে
অসমাপ্ত তুলি দিয়ে মিথ্যা বুনে গেছি
আধখানা বোবা-কালা মুখের প্রলাপ
আজ এই কুড়ানো বেলায়
আমার উপায় নেই আর, আমার উপায় নেই আর
শিড়দাঁড়া হীন দেহ কেটে কেটে গিলে ফেলি
আমার কবিতা লেখা সমস্ত অন্যায়!
তোমার ভাষায়
তোমার প্রবল নিয়ে
আমি আর আমার পৃথিবী
দু’হাতের পাত্রে পড়ে থমকে গেলাম
ভুল করবার নদীটিও ন্যূনতম নিয়ে
ফিরে গেল ঘরে
তোমাকে ছোঁয়ার আগে
আদি-অন্ত ভুলে, থেমে যায় কবিতা আমার
পাথরের স্বর থেকে বৃষ্টি নেমে এলে
আমাকে জাগায় বলে, সঙ্গে যাব, চল
লিখে রাখি তোমার ভাষায়।
ঘরের কথা
যখন সকাল ছিল তুমি দিগ্বিদিক
আমার ছায়ার কথা কেউ না, কেউ না
কেউ ছাপবে না
দিস্তা দিস্তা লেখা ওজনে বাড়ালে
দিয়ে দেব কসাইয়ের ঘরে
কয়েক পৃষ্টার মুখ ফেরানোর চিহ্ন
ছন্দে ভাঙা দাগ নিয়ে
কেবল গহন থেকে গহনে যেতে যেতে ভাবি
লিখব না, আর লিখব না
সমাপ্ত বয়সে সূর্য ভারি হয়ে গেলে
তোমার পড়ন্ত গুলি ধুলো ঝেড়ে
একটু একটু করে গড়ে তুলি
ঘরে ফেরা মৃদু কথকতা।
তোমার নতুন
একদিন ছুঁয়েছিলে, সেটাই বা কম কী
অনেকটা নদী ছিল, ঘরে ছিল রাস্তা একটাই
বাকিটুকু সামান্যই ঝরে পড়া
এ-কোনে ও-কোনে, ঘাড় গুঁজে পড়ে থাকা
দু’ফোঁটা চারফোঁটা লেখা
কোথায় তাড়ালে তাকে?
কোথায় থামল গিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলা?
তাহলে কী এতদিন কিছুই পারিনি?
আমার আকাশ ভুল সংশোধন করে
কবিতার খাতা ফের খুলে বসি
তোমার নতুন নিয়ে
আবার প্রথম থেকে লেখা শুরু করি।
মেঘের ওপারে তুমি, মেঘ দিয়ে গড়া ঘর
এটুকুই জানা, বাকি সব অনুমানে
ধরা ও ছোঁয়ার কোনও শর্টকাট রাস্তা
লিখে ওঠা হয়নি এখনও
তুমি আছ বৃষ্টি ঝরে মাঝে মাঝে
কিন্তু সে বৃষ্টির বুকে কোনও শরীর ছিল না
ভেসে যেতে চাই, তোমার অনন্ত ছাদে
আপাদমস্তক ভিজে যেতে চাই
আজ থেকে
আমার সমস্ত কবিতায় লিখে যাব
একটাই শ্লোক
এপারে তোমার জন্য রক্ত মাংস দিয়ে
একটা নিবিড় ঘর বাঁধা হোক।
Comments