কবিতা

 











সাঁকো

গোধূলি-তীরের ধান ও শৃঙ্গারে থেমে আছে পৌরুষ-সন্দেহ
আলোছায়া সংসারের ফাঁদ এক ফালি রোদে জেগে ওঠে
দূর গমনের সাক্ষী ,
লাউডগা আলো ঘুরে-ঘুরে ওঠে মেঘে
নিমিত্ত-কিশোরী যায় ধড়াচূড়ার ধ্রুব আবছায়া মেখে
সে পথে সরল কাহিনীর মেষ
উদ্বেল মনে হ’ল এতদূর তরঙ্গে
রৌদ্র-কুটিরের অচেতন পরজন্মে
ভালোলাগা লাল মাটি সড়কে খ’সে পড়ে নির্মোহ
নরম পাতার ঘ্রাণে ডুবে থাকা হরিৎ বল্লভ
দ্বিধাকর্ণে ওড়ে তার দুধসাদা পায়রাদল
সোনালি ঊরুর রেশ আলোর ঝরোকা-মাখা কালো
সব বিচ্ছুরণ সে মেলে ধরে অতীতে,নির্লোভ কৈশোরে
আমাদের যোগাযোগে ডুবে যায় ম্লান সাঁকো ।


সমর্পণ

পাখির প্রবলতার ভেতর অকুন্ঠ গান
মৃত্যু-উজাগর দেশ, ভিক্ষু-গোধূলিতে
কাঠকয়লার মৃগজীবন
গোল রোদ্দুরে পা ফেলে কিশোরী-যৌনতা গতি পায়
চাবি দোলে ট্রেনের ছায়ায় ;
বেত-কুশলতা রমণীর পাড় ধ'রে উঠে এলো
অবোধ দুই স্তনে তার, রাজ-ভাস্কর্য ঘনিয়ে ওঠে আকাশে
কষে ফোঁটা ফোঁটা বেআব্রু সময়
কঠিন চোয়াল সরে গেছে আঠালো জ্যা ভ'রে
বিদ্যুত-পুরুষ , মধ্যমাঠে দিবা-তালিকা ফুরোয়
গ্লানির মতো আধুলি পড়ে আছে হিম জলে ।


সকাল

যে আহ্বান দিয়ে সরে দাঁড়াল আড়ালে
তার স্বপ্ন শরীরের দু’টি পাখা মৃত্তিকায় স্থির
সে এখন মুখ ফিরিয়ে সুদীর্ঘ আয়ুষ্কালে চোখ রাখে
দৃশ্যের অভিসম্পাত , অনেক জীবনের সংযোগ,
কাঁধে তার হাত রেখে ভাবি আড়ালে শাপদষ্ট সংসার
সে ম্লানতা পিছনে প’ড়ে থাকুক ,
পাঠশালার চূর্ণ বাতাসে উড়ে যাচ্ছে নতুন রুক্ষতা
খুব নিকটে গন্তব্য , চোখে রাখা অচেনা চেটোর ঘ্রাণ
এখন বিশ্বাস করি কাকে !
স্মরণ-ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে আসে,
সব ঘ্রাণ , পাশে বসা সব প্রস্তরখণ্ডে
অল্প-বিস্তর প্রাণ টের পেলাম,
স্পর্শে ক্লান্তিকর দিব্যতা তার ঘুম ভাঙিয়ে দেয় ।


ব্যয়

যোগিনী ঘাটে মৃত্যুর উপকথা হাওয়ায় ভাসে
প্রতিটি মৃত্যুতে হাবি হয় অসঙ্গত ফুল
এই তার জ্যোৎস্না-চোখ
প্রাচীন উঠোনে ঝুঁকে
কুম্ভের জাগতিকতা অন্তরে ঘূর্ণির মতো
হলুদ কুটো-কথা , আস্তাবলের ছায়া ,
ক’দিন এই ইহ-সংসার ঘরে আসে
ভরা কুম্ভ ভেঙে রৌদ্র উপচার প’ড়ে আছে
জগন্ময় আর্তি নিটোল পৃথিবী জ্ঞানে একা
শূন্য মেঝে,অনন্ত প্রান্তর ,
ছবিটির প্রপাত চলমান ঈশ্বরী কাঁধে তুলে নেয়
সব পথ , জন্ম-সফলতা
নীরব দুরাশা নিয়ে বুকে বেড়ে ওঠে প্রবীণ অরণ্য ।


পাশে হাঁটা রেখা

শিশুর গ্রাসে শূন্যতা টেনে মায়া আঁকে গ্রাম
বৃষ্টির পৃথিবী সমান্তরাল ঘরে সাজানো
শরীরে হামা দেওয়া একলা মাছির নিস্তব্ধতা
জীবনের সুতো ,উল্কি ,নেশায় স্বপ্নিল
গোলা ভরা শস্যে নীল রঙ ছোপানো অন্তরাল
স্বপ্নে পাপ , গোধূলির পেট ফুঁড়ে গর্ভজলে
পৃথিবীর নিঃশ্বাস দ্রবীভূত ,না হ’লে কতবার
ভাঙা ব্রিজে পাপের ফোঁপানি ,নতুন পথঘাট
কিশোরের অন্তরাত্মা অব্দি যে ভুল ভাঙে নি
যে বৃষ্টিতে খাবি খায় মেরুন অসুখ
সব জানলা বন্ধ ক’রে দ্রুতি অরণ্যের
তাকে অল্প আলতো গ্রাস দিই
যেন অবিস্মরণীয় কিছু নিঃশ্বাসে মুখ ডোবানো
স্রোতে হারিয়ে ক্রমে ফিরিয়ে নেয় ডোর ।



Comments

আরও পড়ুন

কবিতা সিরিজ

বি শে ষ সা ক্ষা ত কা র : শ্রী সন্দীপ দত্ত

কবিতা

কবিতা