তিরিশের যুবক, জন্মদিন ও চিয়ার্স— কবিতা সিরিজ
(১)
বৃদ্ধ হচ্ছ তুমি— নতজানু ভাব আদল নিচ্ছে বাবার
যৎসামান্য সাশ্রয়, নুন আনতে পান্তা ফুরনো বিকেল
সংসারে আড়াইহাজার টাকা নেই— বই আছে, নেশা
খবরের দিনকাল ভালো না জেনে গোরক্ষ উঠোনে
রোদ এসে পড়ে, যেভাবে মাটি আঁকড়ে
পোয়াতি দেশের মতো ভাগ হয় দুধের হলুদ রং
আজ কেবল পায়েসের দিন
(২)
পরমান্ন রাঁধতে গিয়ে লিখেছি কবিতা
চিনিরই অভাব কিছু
কেমন গৃহিণী আমি বলো?
সুস্বাদু জিভের আগায় ভেসে আসছে বেহুলার গোঙানি
এত সামান্য স্বাদে মন ভরবে তোমার?
মনুবাদ অস্বীকার করি, ঠাপ খাওয়া জীবনের নীতি ও রমণ
টরেটক্কা দান ফেলে কৃতঘ্ন কারে কয়, জানি নে হে প্রভু
দাও করতালি, বাঁ-হাতে ঘুষের খেল
তিরিশ হল তোমার?
(৩)
তুষারপাতের মতো বরফ পড়ছে আজ
এখনই তোমায় আমি গিলে নেব খুব
আলজিভে, বীজে, সামান্য রসিকতায়
স্লোগান তুলেছি এবার, “পিতৃতন্ত্র সে আজাদী”
হায় আজাদী, তুমি যদি জানতে হে সখা
বাড়ি ফিরে ঠোঁটে ধরব চা ও স্তন
চুলের পাশে গুঁজে দেব কালো ক্যামেলিয়া
দু-পাত্তর “আমায় ভালোবাসো না তুমি?”
প্রেম আসলে তোলাবাজি, বন্ধ কারখানা, মধু-মধু
অলংকরণ — নম্রতা বালা |
(৪)
দেওয়ালে লিখেছে কেউ—”নির্যাতিতার রক্ত, হবে নাকো ব্যর্থ”
অতিকায় ব্যর্থ আমি, গ্যাঁজানো নিমের রস
অতি শ্বাসরোধে চোখ ফেটে বেরিয়ে আসা
মাতৃজঠরের কাদা, থকথকে
খানিক নোনা, চিনি কি এখনো কম?
পরম যত্নে খেও এতখানি, এতখানি যাতে সন্তান আসে না আর
তোমাকে গাছ ভাবি
উড়ে যায় লক্ষ্মী প্যাঁচার দল
উড়ে যায় লক্ষ্মী ঠাকরুন
পরমান্ন
বোলাই দাঁতে
খাও আস্তিন, সাপ, সানাই
আমি ও সন্তান…
Comments
আত্রেয়ী, নিজের ভেতরকার আমিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ উপলব্ধি করতে পারা ছাড়া এ লেখা শরীর পাওয়ার কথা নয়। একেকটি শব্দের অভিঘাত হু হু করে বেজে উঠছে ব্যথার তারে, রণনের শৈলীতে আহা! মন, তুমিও মগ্নশিশু, খেলা কর একাকী বিজনে...স্বকীয় যাপন ফুঁড়ে যখন সাম্প্রতিক জেগে ওঠে, ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলে সব নমনীয় আসক্তিকে, এভাবেই শব্দে নেমে আসে তুলকালাম...থৈ থৈ অনুভূতির ভেতর দিয়ে চলেছি, যাপনের ধকলকে জিম্না রেখে তোমার গাতে, নিয়তি! তোমাকে শক্তিমান করে তৈরী করেছি, বোঝনি কি এ আমার ছল!