উপসংহার থেকে ফিরছি —কবিতা সিরিজ


 

(১)

মাঝে মাঝে মনে হয় 
একদিন বোবা হয়ে যাবো 
কোটি কোটি কথা মরে পচে লাশ।
লাশের গন্ধ সয়ে গেছে নাকে, 
অবচেতনায় 

নিজেকে নিজের কাছে বড়ো ভয় লাগে 

মাঝে মাঝে মনে হয় 
প্রায় দু লক্ষ বছর হলো আমি কাঁদিনি।
মনে হয়, 
আধ-দামড়া ঝকঝকে এক দিনে ব্যস্ত চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছি আর 
গোটা দুনিয়ার অলক্ষ্যে খুঁজে চলেছি একটি নিখুঁত হনন।


(২)

সেদিন ভোর তিনটেয় নিজের হাতে খুলতে পেরেছি জট 
পাঁচ-ফুট-আট এক উপদ্রপ 
নাক না ডেকে কীভাবে ঘুমাতে পারে আমি প্রথম দেখছি 

দেশলাই আছে। চাদরে ছড়ানো অবিন্যস্ত কিছু চোঁয়া মেটাফোর ছাড়া সেভাবে কোনো ডাইরি নেই 

ঘুমে ডুবে মহল্লা।
ধীরে ধীরে গাঢ় হচ্ছে অ্যালুমিনিয়াম আলো  
   শুধু একা ছেড়ে যেতে নেই বলে পাহারা দিচ্ছি নিজেকে।

                                         
(৩)

একটি দরজা 
বন্ধও নয়, খোলাও নয়। দাঁড়িয়েছি  

জৈষ্ঠ্যের সন্ধ্যায় অদ্ভুত হিম।
আরেকটু রাতের দিকে 
একমুখী সিঁড়ির গভীর থেকে উড়ে এসে 
শরীর দখলে নিচ্ছে ইউটোপিয়ান বিষাক্ত 
মথ মথ মথ মথ মথ 

পরিত্যক্ত নির্জলা নলকূপ, ল্যাংটো শিশুটা ঝুলে আছে তার হাতে।
রক্ত উঠে আসছে, গন্ধ আসছে তারও আগে।
অলংকরণ—নম্রতা বালা
                                        
(৪)

উৎসুখ কুকুরের মত রহস্যরা পিছন পিছন। ভেবো না, 
গলা তুলবে না কেউ। 
একটু একটু করে ঢুকে পড়ছি তোমার সান্নিধ্যে। বিবর্তনবাদ ও প্রস্তুতির জন্মকথা তুলে দিয়েছি আগের ডাউন ট্রেনে। 
 
উফ্ ! আজ কি বিশাল চাঁদ 
জ্যোৎস্নার গায়ে দিশি মদের মিঠা মিঠা গন্ধ 
রাস্তার শেষ আলো নিভে গেলে শৌচাগারের পাশে শুয়ে থাকা দ্বিতীয় পাগলটিকে বলে যাবো -
কেউ ঘুণাক্ষরে জানে না , কার সাথে কার এইটিই শেষ সাক্ষাৎ।


(৫)

আমি স্বেচ্ছায় চলে গেলে 
রাঁধাভাত সব ফেলে দেবে তুমি 

তারপর অনর্থক রয়ে যাওয়া জুড়ে 
আর কোনদিনও খিদে পাবে না তোমার।

আকণ্ঠ ঘেমে পুড়ে বেড়ে দাও কোরবানি জীবন -
আমি সোনা মুখে সবটুকু না খেলে,
তুমি যে জলের সাথে অভিমান গিলে ঘুমিয়ে যাও,
আমি কি জানি না তা !

প্রতিদিন ভাবি এই কবিতাটা শেষ হলে ওঠা যাক, 
আর প্রতিদিন দেখি কখন যেন নিঃশব্দে এসে পাত আগলে বসেছ
এমন উপক্রমের রাস্তায়।


Comments

আরও পড়ুন

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৩

২৩ | ফেব্রুয়ারি সংখ্যা | ২০২৫

তৃতীয়— মাস-সংক্রান্ত

রঙ্গন রায়

কবিতা গুচ্ছ

জুজুতন্ত্রের সমূহ শ্বাপদ এবং হুজ্জতি

সিনেমা-বিষয়ক নিবন্ধ -- জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

একটি কবিতা সিরিজ —

সৌমিক মৈত্র

মনোজ চৌধুরী