কবিতা গুচ্ছ

 



বোধ

কি লাভ এ মুঠি শক্ত করে

পরিযায়ী ওড়াউড়ি ! 


আদৃত রাখি পরিমিত কমুন্ডলে স্মৃতি-সম্বল,

গণ্ডুষে গ্রহণ প্রেমের অক্ষর–

শাল্মলী তলায়, শিশিরের

নির্মম স্নানে, প্রচ্ছদ – ছন্দ হীন ! 


উদ্বায়ী মেঘের মতো গৃদ্ধকূট পাহাড়ের দিকে

দৃষ্টির ভরে যাওয়া, 

বীতরাগের বিভাব জ্বেলে শ্রমনের মাঝে

অগ্রন্হুিত মর্মকথা শুনি 

পিনদ্ধ বোধের ভগবৎ উচ্চারণ।


তবে, ও বালিহাঁস !  

কি লাভ এ মুঠি শক্ত করে

পরিযায়ী ওড়াউড়ি !




দ্বন্দ্ব


নিশঃব্দ আলোর পথে 

বিকচ বিশ্বাস—দ্বিধাহীন,

প্রথাগত আদরের গরিষ্ঠ চুম্বন জাগায়

জিজীবিষা,অধি-বাসে নির্মিতি নিলীন।


প্রথাহীন ভাবে যখনই ভেবেছি তোমাকে

গভীর জলের মতো তৎসম উৎসাহে,

সাগরের শীতে একাকী রোদ মাখি

বিষাদ বেলায়, কমলিনী সাগ্রহে। 


অফুরান ফসলের মাঠ, উতরোল উৎসারে

তানপুরা বাজে কলতান সুরে…

দধীচির অণিক প্রমার মতো ঋত-স্বর

জীমূত জীবনের কথা বলে। 


মিছিল থেকে নির্মোক নীল মাছি হয়ে

দেখেছি, হেমন্তের কুয়াশার শেষে

জুগুপ্সার জুজু-রঙের প্লাবনে ভাসে

চির-দ্বন্দ্বের আমাদের এ ঘর।



সাধনা


দুপুর-শরীর ধুলো উড়ে চলে যায়

শুণ্য-সীমার সীমন্তে লোচন নাচ

পরাশর পথে আয়ু দীর্ঘ হলে

কনক তৃষার জলে,অসুখী মাছ


তুমি দেখাচ্ছো, সশব্দ প্রদোষকাল

শরণম স্বর অঙ্কুরিত ঘাসে ঘাসে

বৈরাগী উঠোনে মাধুকরী হরে যায়

চতুর্বেদীর দীপ উন্মনে হাসে


আমাদের পূজা বিতনু জীবন পথে

প্রাপ্তি-ফুলে শ্বাস লেগে থাকে ভারি

শরীর সাধনা, বাউলের সহজিয়া

পরাণ পদ্মে প্রেমের আশা-বরি




জীবন শরৎ ঋতু


এই যে এতো শত কিংশুক মেঘ

ঐশী সংগীত বাজায় অঙ্গুরীয় মীড়,

রক্ত-স্বেদ-অপবাদ শোকাতুর ঘ্রাণে 

গড়ে তোলে মালাকার, কবিতা কুটীর !


এই আমি, হায়, নিরাময় মন খুঁজি

নিত্য আশা ভাঙ্গি-গড়ি…অরীয় ভ্রমণ…

অলক্ত রসে দ্রাব হই, আলাত হৃদয়

পূর্ণ জ্বালি কাহ্ণ-বিভায়, কালীয়দমন !


বিভ্রমে আঁচল ভেজায় বাঞ্ছা নির্ঝর,

প্রপাত হয়ে নেমে আসে অপূপ পাপ–

আচম্বিতে, হেমন্তের শিশির বাতাসে 

হিম ঝরে, নুয়ে পড়ে আরোগ্য গোলাপ !


প্রতিভোরে জন্ম রচি ঐতরেয় জ্ঞানে,

জীবন শরৎ ঋতু ,বিবস্বান স্নানে !  




তোমায় নিয়ে লিখি


তোমাকে নিয়ে লিখি কিছু, ভাবলেই

রোদ্দুর কমে আসে,

বিকেল মনে হয়। 

খানিক বাদেই লাল হবে আকাশ

যেন নির্বিবাদী বালুতট, যেখানে আংটির মতো

বর্তুল হয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে আমাদের মন

স্হির, প্রজ্ঞ হয়ে যায়।  



আঁধার যপেছি সেদিন 

হিঙ্গুলরসে সাজাবো বলে,

চন্দ্রাহত স্পৃহা মরমি হয়েছে অনিমিখ অক্ষরে,

গান্ধার দুহিতা জিতসোমা দাঁড়িয়ে

লোকহিত ঋদ্ধির জ্ঞানে।



বিতত বিকেল

হলুদ পাখি ঠোঁটে নিয়ে যায়

টুকরো টুকরো মেঘ, রক্তিম আকাশ'পারে

নিরঞ্জনা তীরে – অতল ভূয়োদর্শন! 


তোমাকে নিয়ে লিখি কিছু, ভাবলেই

রোদ্দুর কমে আসে

বিকেল মনে হয় এখন,

নিক্কণ বাজে দুরে বাঁশির সুরে।





Comments

আরও পড়ুন

বীথিকা ধরে হেঁটেছে দীন

সংবেদন চক্রবর্তী

উপসংহার থেকে ফিরছি —কবিতা সিরিজ

এক গুচ্ছ কবিতা

প্রচ্ছদ আখ্যান

একটি কবিতা সিরিজ

তৃতীয়—মাস-সংক্রান্ত

তিস্তা পাড়ের মেয়েটি— কবিতা সিরিজ

দেবজ্যোতি দাশগুপ্ত

ছোট গল্পগুলি