Posts

Showing posts with the label কবিতা চার

কবিতা—নয়ন রায়

Image
  অলংকরণ-নম্রতা বালা (১) চিহ্ন নেই এমন শোকের দিনেও দারুণ উন্মাদনায় টইটুম্বুর কিশোরীর ঠোঁট। উলঙ্গ পায়ে দু'কদম হেঁটেই– ভীষণ ক্লান্ত! মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে গেয়ে উঠলো আবদুল গাফফার চৌধুরীর– দুটো লাইন। "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি" আমি কি তোমায় ভুলিতে পারি? অথচ তার মনে সামান্য রক্তের চিহ্নও নেই। হায় দুমুখো মানুষ এমন শোকের দিনেও শান্তির খোঁজে বিহ্বল… (২) শোকগাথা স্ফটিকগিড়ি হতে নেমে আসেন দেবাদি-দেব বাতাসে বাতাসে তখন একটিই ধ্বনি,একটিই সংবাদ,একটিই শোকগাথা বিবাহযোগ্য কুমারীর প্রয়াণ তাও এক অকালকুষ্মাণ্ডের জন্য। (৩) আকুতি রাত্রি গভীর হলে আরো গভীরে যাই মনে পড়ে— বিক্ষুব্ধ সৈনিকের আকুতি! আহা প্রেম! আমার উন্মাদ কৈশোরকে তুমি এনে দিতে পারতে, একটি সোনালী দুপুর অথবা বিশুদ্ধ বসন্ত। (৪) অভিশাপ জ্যাকেট জানে── কত জল খেয়ে সে প্রতিদিন ক্ষয় হয়। হে সুশ্রী নারী,শুধু তুমি জানলে না জলের বিন্দুগুলো একেকটি অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। (৫) দহন একটি রাতের মাঝামাঝি এসে যখন দেখি আমার সৃজনের থালা শূন্য তখন বুকে ভীষণ রকম জ্বালা হয়। সেদিন যেভাবে জ্বালা হয়েছিল প্রিয়তম মানুষের কষ্ট কুড়ানো দেখে…

কবিতা/অন্যের ডায়রি পড়তে নেই--শুভদীপ রায়

Image
অলংকরণ-নম্রতা বালা   প্রথম রাত একটা একটা পাঁজর সাজিয়ে বাক্স বানিয়েছি। বিদ্যুৎবিবর্ণ ডায়রির পাতাগুলো লুকিয়ে রাখতে হবেই, কারণ এরপর আমি আর কিছু দেখতে চাইনা।  " আমাকে প্রিভিলেজ গ্রাস করিয়াছে " চন্দ্রগ্রহণ হেলেনের কম্বল টেনে খুলে মেঝের বমি পরিষ্কার করব, এর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে খুব মুশকিল- আমি ভালো মানুষ এটা বিশ্বাস করাতে করাতেই  আমার গা গুলিয়ে উঠছে একশোবার। ঐ পোকাগুলোর উপর করুণা হয়- একটুপরেই একসাথে ফ্লাস করে দেব সবশুদ্ধ, তখন ওদের লাশ ঘিরে জন্মের ভোজ ভিখিরি আর পূর্ণিমারাত একশোহাত কাপড় নেমে গেছে সিঁড়ির পাশ দিয়ে। কলঘরের জানলায় চোখ রেখে গোটা সিলেবাস শেষ করে এখন পরীক্ষার জন্য তৈরী হয়েছি- কিন্তু এতগুলো নারকেল দড়ি একসাথে এই ফ্যানে কি ঝোলানো যাবে? আমার জানলার দরজা খুলে যায়- জ্যোৎস্নায় মাখামাখি হয়ে একে একে সব বহুব্যবহৃত গৃহবধূরা হুহু করে ঘরে ঢুকে আসে, বিছানায় এলিয়ে দেয় রমণক্লান্ত শরীর, অনাঘ্রাতা যৌবনের গল্প শোনাতে থাকে  হাসিমুখে, আর থেকে থেকে ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আপশোষ জানায়; আমার পাখায় যে সমস্ত প্রেমিকের ঠিকানা- একথা অজানাই ছিল এতকাল এতকাল পর আমার শরীরে আবার ...

এক গুচ্ছ শিশির আজম

Image
(১) বসরার গোলাপ --------------------------------- এই যে গোলাপ আঁকলাম একে প্রথম খুঁজে পেয়েছিল ওমর খৈয়াম বসরায় এক দরিদ্র প্রৌঢ়া বেশ্যার তাবুর পেছনে রাত্রি দিপ্রহরে আধখানা চাঁদ তাবুর ওপর টলমল করছিল অদূরে বেদুইনদের যাত্রাপথ আর কোলাহল তারপর অনেক রাত অনেক নদী কীভাবে এই গোলাপ আমি পেলাম সে আরেক কাহিনী (২) প্রকৃতির দোলনা ------------------------------------------ ছানাগুলোকে নিয়ে বেড়ায় খাওয়ায় ডানার নিচে নেয় কাক চিল যেন ছুঁতে না পারে কে মা মুরগি কি বিশ্রী মুরগির হাগা আর চেঁচামেচি দূর করো ওগুলোকে বাড়ি থেকে ওগুলোকে তিনবেলা খাওয়ানো সন্ধ্যায় ঠিকঠাক ঘরে তোলা বিরক্তি ছাড়াই এসব নিয়মিত করেন আমার মা কে আমার মা (৩) জবাগাছ ---------------------------------------------------- বিকেলের দেয়ালের পাশে ব্লু ইউনিফর্ম আর জবাগাছ জবাগাছের বিষয়ে আমরা তেমন কিছু জানি না আসলে সে কিছু হারায়ে ফেলছে হয় তো অথবা হারাইনাই কিন্তু চাইতেছে কিছু হারাইতে বড়দির রক্তের পাশে (৪) ইউটোপিয়া --------------------------------------------------- এমন একটা রাষ্ট্র আমাকে দিন যেখানে সবার ক্ষেত আছে নদী আছে আগামীকাল আছে প্রত্যেকেরই সূর্য আছে আলাদা ...

অরবিন্দ লাহড়ী'র কবিতা: তিন ।

Image
  ০১|| একলব্যের বৃদ্ধাঙ্গুলি  হাত বনাম নাম। অদৃষ্টের অদৃশ্য ঈশ্বর প্রণাম  ভেতরে গুপ্ত তপোবন  মুখ, সম্মুখ—মুখোমুখি বুড়ো সন্ন্যাসী  স্বর অতঃপর শর—ধনুকের টঙ্কার খেলা—খেলাঘর—খেলোয়াড় হাতজোড়—হাতের জোর—জোড়হাত হাত বনাম নাম,গুরুদেব প্রণাম —আঙ্গুলি,নাও প্রণামি ০২|| বিষন্নতা হাতে নীল পেন্সিল। মুখ আঁকার জন্য এঁকে নিলাম একটি বৃত্ত। কিন্তু কারো মুখ মনে পড়ছে না। শেষমেষ দাড়িয়ে পড়লাম বৃত্তের ভেতর। বৃত্ত এখন বদলে হলো শূন্য। আমি বিষন্নতার কাটাছেঁড়া দাগ কেটে ভরাট করছি শূন্যের অভ্যন্তর। বিষন্নতা এখন বদলে হলো শূন্যতা। এখন একটি মুখ মনে পড়ছে। যার হাতে আছে রাবার। শূন্যতা মুছে দিলে আমি আঁকতে পারি একটি মুখ। ০৩|| দূরুত্ব  এক পা এগিয়ে গেলে কত ইঞ্চি পথ ফুরিয়ে আসে? তুমি হাতঘড়ি টেবিলে রেখে পড়তে বসেছো ক্যালকুলেশন সেকেন্ডের কাঁটা ঘুরে যাচ্ছে—পা মাড়িয়ে যাচ্ছে চৌকাঠ  তুমি যোগ করতেছো দূরুত্বের হিসাব।

শৌনক দত্ত'র কবিতা চার।

Image
  ০১|| পরকীয়া অন্য  বিছানায় শুয়ে সমুহ সময় ধাতস্থ হবার আগে অন্যকেউ মুখস্থ করে ফেলে নকশীকাঁথা বুনন। বৃষ্টির নকশীকাঁথা তুমি আমাকে উপহার দেবে আর আমি তোমাকে উপহার দেব নিঝুম দ্বীপের শাড়ি। ০২|| ডুবসাঁতার-৩ রোদ হরিণ ফিরে গেছে। মুখরিত পাখিদের মতো আমাদের যাপন, তখন বুকের সন্ধ্যায় সাগরদীঘির আড্ডা। কোচবিহার রাজবাড়ীর শূন্যতায় তোমার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছি,প্রথম। তখন সেখানে জাদুঘর ছিলো না। সেদিন ও শ্রাবণ।আমার জন্মদিন। তুমি ফিরে গেছো এই দিনেই বহু বছর আগে আকাশের সাথে।আজ হৃদয়ে তোমার জাদুঘর। বাইশে শ্রাবণ. জন্ম নাকি মৃত্যু? সেই খতিয়ানে লিখে দিয়েছি রক্তের উত্তপ্ত ঘামে ভাসতে থাকা উন্মুল উদ্বাস্তু মানুষের শেষের কবিতা! ০৩|| ডুবসাঁতার-৬ আমার মা যখন গাইতো 'আমার সকল দুখের প্রদীপ'প্রায়ই উঁচুতে গিয়ে গলা খুলতো না মা-র, গলা বুজে আসতো।আমার মনে হতো মা কাঁদচ্ছে গানে গানে।মা কি কখনো গলা খুলে গাইতে পেরেছে... 'আমার মুক্তি আলোয় আলোয়' আমার বাবার খুব বাগানের শখ। বাহারী গোলাপের কালেকশনে কেবল কোথাও মা নেই!আমার বাবা যে রাতে সন্ন্যাস নিতে ঘর ছাঁড়লো সেই রাতে মা ও বদলে নিলো জীবন রাত্রি মেখে শোক চোখের চতুর্পাশে, সংসারে প...