কবিতা/অন্যের ডায়রি পড়তে নেই--শুভদীপ রায়
একটা একটা পাঁজর সাজিয়ে বাক্স বানিয়েছি।
বিদ্যুৎবিবর্ণ ডায়রির পাতাগুলো
লুকিয়ে রাখতে হবেই,
কারণ
এরপর আমি আর কিছু দেখতে চাইনা।
"আমাকে প্রিভিলেজ গ্রাস করিয়াছে"
চন্দ্রগ্রহণ
হেলেনের কম্বল টেনে খুলে
মেঝের বমি পরিষ্কার করব,
এর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে খুব মুশকিল-
আমি ভালো মানুষ
এটা বিশ্বাস করাতে করাতেই
আমার গা গুলিয়ে উঠছে একশোবার।
ঐ পোকাগুলোর উপর করুণা হয়-
একটুপরেই একসাথে ফ্লাস করে দেব সবশুদ্ধ,
তখন ওদের লাশ ঘিরে জন্মের ভোজ
ভিখিরি আর পূর্ণিমারাত
একশোহাত কাপড় নেমে গেছে সিঁড়ির পাশ দিয়ে।
কলঘরের জানলায় চোখ রেখে গোটা সিলেবাস শেষ করে এখন পরীক্ষার জন্য তৈরী হয়েছি-
কিন্তু এতগুলো নারকেল দড়ি একসাথে এই ফ্যানে কি ঝোলানো যাবে?
আমার জানলার দরজা খুলে যায়-
জ্যোৎস্নায় মাখামাখি হয়ে একে একে সব বহুব্যবহৃত গৃহবধূরা
হুহু করে ঘরে ঢুকে আসে,
বিছানায় এলিয়ে দেয় রমণক্লান্ত শরীর, অনাঘ্রাতা যৌবনের গল্প শোনাতে থাকে হাসিমুখে,
আর থেকে থেকে ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আপশোষ জানায়;
আমার পাখায় যে সমস্ত প্রেমিকের ঠিকানা- একথা অজানাই ছিল এতকাল
এতকাল পর আমার শরীরে আবার শিহরণ জাগে
তাহলে কি ওকেও ফিরতে হবে এই পাখার নীচে!
ভোলেবাবা শুড়িখানার বাইরে বাংলার ভিখিরি…
মুদ্রারাক্ষস
আমায় বিলি কেটে দাও মায়ের মতোন,
আমায় ঠেলে দাও আরেকটু ভিতরে,
দরজায় টোকা দিলে চারপায়ে হামাগুড়ি দেব কিনা
এটা ভেবে ভেবেই একঘন্টা চলে গেল,
আড়াইশো টাকায় বাকি রাত চালানোর মতো ফর্দ করতে-
এখন ফিরে যেতে হবে
বাজারফেরতা বাবার বুকপকেটে;
আমি একহাতে মুখ ঢাকি আর আরেকহাতে তোমার স্তন,
আমার ক্যানাইনদুটো আরো বড় হচ্ছে
এসো আরেকটু হামি খাই এখনো অভুক্ত- মাংসের গন্ধ পাঁউ
ত্রহ্যস্পর্শ
এই সময়টার জন্যই অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে গেছিলাম,
ভেবেছিলাম- দশ গাঁয়ের লোক জড়ো করে হল্লা করব,
ভেঙে দেব আড়তদারের মাজা, জমিদারগিন্নীর রান্নাঘর…
কিন্তু হঠাৎ এত খিদে পেল!
আলসারের ব্যথা আমার কোনকালেই ছিল না;
কিন্তু হতেও তো পারে-
তাই দালানে বসে গেলাম উপনয়নের ভোগ খেতে:
ভাতঘুম ভেঙে এখন আমার আড়ত হয়েছে,
আলসারের ব্যথা হয়েছে, রক্ত আমাশা হয়েছে;
গোলাভরা পায়খানায় বসে এখন ভাবতে হচ্ছে-
কীকরে দশ গাঁয়ের লোক ডেকে আমাকে এখান থেকে বার করব!
Comments