Posts

Showing posts with the label কবিতা তিন

কবিতা—নয়ন রায়

Image
  অলংকরণ-নম্রতা বালা (১) চিহ্ন নেই এমন শোকের দিনেও দারুণ উন্মাদনায় টইটুম্বুর কিশোরীর ঠোঁট। উলঙ্গ পায়ে দু'কদম হেঁটেই– ভীষণ ক্লান্ত! মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে গেয়ে উঠলো আবদুল গাফফার চৌধুরীর– দুটো লাইন। "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি" আমি কি তোমায় ভুলিতে পারি? অথচ তার মনে সামান্য রক্তের চিহ্নও নেই। হায় দুমুখো মানুষ এমন শোকের দিনেও শান্তির খোঁজে বিহ্বল… (২) শোকগাথা স্ফটিকগিড়ি হতে নেমে আসেন দেবাদি-দেব বাতাসে বাতাসে তখন একটিই ধ্বনি,একটিই সংবাদ,একটিই শোকগাথা বিবাহযোগ্য কুমারীর প্রয়াণ তাও এক অকালকুষ্মাণ্ডের জন্য। (৩) আকুতি রাত্রি গভীর হলে আরো গভীরে যাই মনে পড়ে— বিক্ষুব্ধ সৈনিকের আকুতি! আহা প্রেম! আমার উন্মাদ কৈশোরকে তুমি এনে দিতে পারতে, একটি সোনালী দুপুর অথবা বিশুদ্ধ বসন্ত। (৪) অভিশাপ জ্যাকেট জানে── কত জল খেয়ে সে প্রতিদিন ক্ষয় হয়। হে সুশ্রী নারী,শুধু তুমি জানলে না জলের বিন্দুগুলো একেকটি অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। (৫) দহন একটি রাতের মাঝামাঝি এসে যখন দেখি আমার সৃজনের থালা শূন্য তখন বুকে ভীষণ রকম জ্বালা হয়। সেদিন যেভাবে জ্বালা হয়েছিল প্রিয়তম মানুষের কষ্ট কুড়ানো দেখে…

এক গুচ্ছ শিশির আজম

Image
(১) বসরার গোলাপ --------------------------------- এই যে গোলাপ আঁকলাম একে প্রথম খুঁজে পেয়েছিল ওমর খৈয়াম বসরায় এক দরিদ্র প্রৌঢ়া বেশ্যার তাবুর পেছনে রাত্রি দিপ্রহরে আধখানা চাঁদ তাবুর ওপর টলমল করছিল অদূরে বেদুইনদের যাত্রাপথ আর কোলাহল তারপর অনেক রাত অনেক নদী কীভাবে এই গোলাপ আমি পেলাম সে আরেক কাহিনী (২) প্রকৃতির দোলনা ------------------------------------------ ছানাগুলোকে নিয়ে বেড়ায় খাওয়ায় ডানার নিচে নেয় কাক চিল যেন ছুঁতে না পারে কে মা মুরগি কি বিশ্রী মুরগির হাগা আর চেঁচামেচি দূর করো ওগুলোকে বাড়ি থেকে ওগুলোকে তিনবেলা খাওয়ানো সন্ধ্যায় ঠিকঠাক ঘরে তোলা বিরক্তি ছাড়াই এসব নিয়মিত করেন আমার মা কে আমার মা (৩) জবাগাছ ---------------------------------------------------- বিকেলের দেয়ালের পাশে ব্লু ইউনিফর্ম আর জবাগাছ জবাগাছের বিষয়ে আমরা তেমন কিছু জানি না আসলে সে কিছু হারায়ে ফেলছে হয় তো অথবা হারাইনাই কিন্তু চাইতেছে কিছু হারাইতে বড়দির রক্তের পাশে (৪) ইউটোপিয়া --------------------------------------------------- এমন একটা রাষ্ট্র আমাকে দিন যেখানে সবার ক্ষেত আছে নদী আছে আগামীকাল আছে প্রত্যেকেরই সূর্য আছে আলাদা

সৌমিত ভট্টাচার্য্য

Image
নিজস্ব আঁধারের থেকে সৌমিত ভট্টাচার্য্য (১) আমাদের ঘুমের নীচে– আমাদের ক্ষমতায়নের নীচে সারিবদ্ধ মানুষের অতন্দ্র মুখ  দেখা যায়  ভয় পেতে অক্ষম উদ্ধত দু'হাত  ইচ্ছার নগ্নতাও আমাকে লজ্জিত করে না আর!  রক্তাভ অতীতকে মেনে নিয়ে, কী সহজেই  কেটে যাচ্ছে অসংখ্য বর্ণান্ধ দিন  তবুও আমাদের ভবিষ্য ঘেঁটে, ডেকে এনো সেই মেয়েটিকে যে তার শৈশবকালে  ছবি আঁকা শিখতে পারেনি...  (২) শব্দ থেকে শব্দে সিঁড়ি বেয়ে দীর্ঘশ্বাস ওঠে  যেন  কেউ না শুনতে পায়, কবিতার পদচারণা তোমাকে দেখিনা বহুদিন,  এ-ও তো অভাবেরই সমান!  নির্লিপ্ত কলম তবু চেয়েছে এটুকুই–  অগুনতি স্রোতের মতো, হিসেবি খুচরোর সমুদ্রে  ডুবে যাক নিত্যপ্রয়োজন  ভেসে উঠতে গেলে,  তোমার সর্বস্ব যেন শুধু আমি হই!  (৩) যে ফিরে আসবে না কোনোদিন,  তার পাশে বসো। শোনো হাওয়ার গতিপথ  শোনো কীভাবে তার হৃদয়ের নীচে বয়ে যাচ্ছে উন্মাদ লাভা  দু'ঠোঁটের মাঝে তার জেগে ওঠে জ্বালামুখ, যেন  মৃত্যু লিখছে তার শেষতম লাইন–  উচ্চারণের শেষে, একবার চোখ মুছে নিও। মনে রেখো, জ্বলেপুড়ে ছাই হবে  এই কবিতাও 

স্বপ্নদীপ রায়'র কবিতা তিন

Image
  || ধ্বনিতত্ত্ব শব্দগুলোকে দিন _দুপুরে পোশাক পড়ালেও রাত্রি হলে সেই পোশাক খুলে যোনি হাতড়ায় একটা কৃষ্ণসাগর! শীৎকার জড়ো হতেই দুধে-বালিশে বেশ তুলতুলে হয়ে ওঠে 'সেফার্ডস্ পাই'__ কাঁটাচামচ দিয়ে তাকে দুপাটির মাঝে চেপে ধরে মধুকর__ ভদ্রাসনে থমকে দাঁড়ায় গলে পড়া হবিষাণ‍্যের সেই দুটি রক্তশূন‍্য আদিম শুকনো চোখ-- অতঃপর কবিতা সাবালক হয়। || বায়োডেটা একটা দীঘল ছায়া সর্বক্ষণ ঘুরছে  অণুকবিতার চারপাশে   ছোট্ট ছোট্ট হাত ছোট্ট ছোট্ট পা--  ঘাপটি মেরে আছে একটা আস্ত উপন‍্যাস! চরিত্রেরা সাদামাটা। জলজ শ‍্যাওলার মত হড়হড়ে। বাল্মীকি থেকে বোধিসত্ত্ব ছায়ায় ছায়ায় একটা দীর্ঘ পাকুড় হয়ে উঠছে তবু ছায়া পরিচয় হীন পৃথিবী চায় কেবল আলোর বায়োডেটা..... || নদী সন্ধ‍্যা হলেই রাত্রি আঁকড়ে ধরে চেনা শরীরগুলো। তলিয়ে যায় চেনা খাটের আয়েশি  তেত্রিশ বছরের চৌষট্টি রকম কলায়-- একদিন ভোরে তার বহুকাঙ্ক্ষিত জনজীবনে এসে নদী হঠাৎই দেখে,একদল বধিরকে এতকাল সে শুনিয়ে এসেছে পাথর ভাঙার প্রবল শব্দ__ সহজ নদী কি আজও চিনেছে ওল্টানো ভাতের হাঁড়িতে মজে ওঠা সারারাতের ফ‍্যানের গন্ধ? ওরা ভীষণ সুখী__ কারণ, ওরা চিন্তা শক্তি হীন! কবি পরিচিতি: জন্ম:৮ঐ আগস্ট

কবিতা তিন সব্যসাচী ভট্টাচার্য্য

Image
  || কাঁচের ওপাশে কলকাতা ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি পড়ছে, আমি কাঁচের এপাশে; কাঁচের ওপাশে কলকাতা ওসব তুচ্ছ আসলে ক্ষুদ্র একটা বিন্দু! কিছু দরদী মুখ, আসলে তারা ছদ্মবেশী  রক্তে হিংস্র আগুন তাদের, আসলে প্রেম হলো জ্বলন্ত মিথ্যে! কে যেন বললো অনেকক্ষন বৃষ্টি দেখছো তুমি কে?? অসহায় চোখে তাকিয়ে তার দিকে, সে আমার চোখের ভাষা বুঝতে পারে নি; পেটের আগুন নাকি ঘুমালে কমে যাবে, দিনের অর্ধেক ঘুম আর বাকি অর্ধেক ক্ষিদে! মানুষ না তার নাম, কাকে ভালোবাসার গভীরতা বেশি?? একটা লক্ষ্মীছাড়া ভিকিরি আমায় দেখছে আর হাসছে, তারপর সে চলে গেলো; পাশের বারান্দায় আইবুড়ো মেয়ে দড়ি পাকাচ্ছে! ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি পড়ছে, আমি কাঁচের এপাশে; কাঁচের ওপাশে কলকাতা, ওসব তুচ্ছ আসলে ক্ষুদ্র একটা বিন্দু! || অষ্টাদশী প্রেমিকা একটা শেষ রোববার, রাস্তায় দাঁড়িয়ে শেষবার সূর্য দেখবো হাসবো! ভূমিকা : একদিকে লম্বা দড়ি, কোন উপত্যকায় তোমার শেষ চিঠি হাতে; পুরনো খবর শুধু প্রতিধ্বনির মতো শোনাচ্ছে, সামনে হিংস্র স্রোত, মাথা ব্যথায় ছিড়ে যাচ্ছে কোন ওষুধ সেদিন কাজে আসবে না, আবার আমায় তাড়া করবে সেই কথা গুলো --- সব্যসাচী আমি তোমায় ভালোবাসি, তুমি যেও না আজও

সংবেদন চক্রবর্তী'র তি ন টি কবিতা

Image
    ||তো খিদে হাহাকার মৃতপ্রায়। শব্দের ভঙ্গিমা দেখে নিচ্ছি কবে কোনখানে কোন গলিতে গলিতে ধ্বনি বাজছে উড়ে যাচ্ছে দিনদিন প্রতিদিন প্লাস্টিকের মতো বাতিঘর অন্ধকার আলো জ্বলে না সেভাবে আর একটা একটা শব্দ তুলে এনে অক্ষরের সঙ্গে পোশাক পরাই খুব সাবধানে ব্যবধান ভুলে এপার ওপার প্রেম বাংলা গাঁথি কাঁটা তার ছিঁড়ে ইচ্ছে হয় একদিন ভীষণ গম্ভীর হয়ে যাব হাহাকার মৃতপ্রায়। বিপ্লবের গান বেজে ওঠে একমুঠো ভাত চাই, অব্যয় থাকে কি বুদ্ধিজীবী? ভাবছেন ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে বেরিয়ে যাবেন বুভুক্ষু স্টপার কিন্তু জেগে আছে মাঠের ভেতরে || নারী দিবস মা- তোমার লালপেড়ে গরদের শাড়ি তুলসী তলায় প্রদীপ জ্বলবে আর বোন তোর জন্য জ্যোৎস্না সুমনা সীতাহার সানাই বাজবে সুরে ছাঁদনাতলায় স্বপ্ন দেখতে দেখতে এতগুলো কাল কেটে গেল কবিতা লিখতে গিয়ে একাকী বয়স বেড়ে গেছে হলো না কিছুই... ঠাকুরের সঙ্গে মদ খেয়ে নাচা হলো না তাসার                                                              তালে নির্জন দুপুর বেলা কৃষ্ণচূড়া গাছের তলায় আড় চোখে দেখা হলো না স্কুল ছুট  নবম শ্রেণীর মেয়েদের এ জীবনে হলো না কিছুই... নারী দিবসের দিন ঝান্ডা ময়দানে গ্