কবিতা তিন সব্যসাচী ভট্টাচার্য্য
|| কাঁচের ওপাশে কলকাতা
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি পড়ছে,
আমি কাঁচের এপাশে;
কাঁচের ওপাশে কলকাতা
ওসব তুচ্ছ আসলে ক্ষুদ্র একটা বিন্দু!
কিছু দরদী মুখ,
আসলে তারা ছদ্মবেশী
রক্তে হিংস্র আগুন তাদের,
আসলে প্রেম হলো জ্বলন্ত মিথ্যে!
কে যেন বললো অনেকক্ষন বৃষ্টি দেখছো তুমি কে??
অসহায় চোখে তাকিয়ে তার দিকে,
সে আমার চোখের ভাষা বুঝতে পারে নি;
পেটের আগুন নাকি ঘুমালে কমে যাবে,
দিনের অর্ধেক ঘুম আর বাকি অর্ধেক ক্ষিদে!
মানুষ না তার নাম, কাকে ভালোবাসার গভীরতা বেশি??
একটা লক্ষ্মীছাড়া ভিকিরি আমায় দেখছে আর হাসছে, তারপর সে চলে গেলো;
পাশের বারান্দায় আইবুড়ো মেয়ে দড়ি পাকাচ্ছে!
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি পড়ছে,
আমি কাঁচের এপাশে;
কাঁচের ওপাশে কলকাতা,
ওসব তুচ্ছ আসলে ক্ষুদ্র একটা বিন্দু!
|| অষ্টাদশী প্রেমিকা
একটা শেষ রোববার,
রাস্তায় দাঁড়িয়ে শেষবার সূর্য দেখবো
হাসবো!
ভূমিকা : একদিকে লম্বা দড়ি,
কোন উপত্যকায় তোমার শেষ চিঠি হাতে;
পুরনো খবর শুধু প্রতিধ্বনির মতো শোনাচ্ছে,
সামনে হিংস্র স্রোত,
মাথা ব্যথায় ছিড়ে যাচ্ছে
কোন ওষুধ সেদিন কাজে আসবে না,
আবার আমায় তাড়া করবে সেই কথা গুলো --- সব্যসাচী আমি তোমায় ভালোবাসি,
তুমি যেও না আজও আমি সবটা উজাড় করে দিতে পারি নি!
উপসংহার : যে কাজ আমি করেছি তার দায় শুধু আমার,
একটা খবর আসবে,
আর একবার ঝলসে উঠবো এই দড়ির একদিকে আর উঠবো না,
আমি বিপ্লব দেখি নি, আমি মাও সেতুং জানি না;
আমি কোন খালাসির ফেলে আসা এক বিন্দু ঘাম
যে জানে তার জন্য অপেক্ষা করছে এক অষ্টাদশী প্রেমিকা!
|| রাত্রি বেলা জ্বর এসেছিলো
রাত্রি বেলা জ্বর এসেছিলো,
এখন বৃষ্টি এসেছে;
মেঘেরা পিছুটান অনুভব করলে আবার ফিরে যাবে!
ওরা জানে কোথায় কাপড় শুকাতে দেয়,
কিভাবে উনুনে বসানো হাঁড়ির মধ্যে দিয়ে পেটে ঢুকে সব খবর পড়ে ফেলতে হয়;
প্রেম, ঘৃণা, ক্রোধ, বিরক্তি সব ওই বৃষ্টির মতো ঝড়ে পড়ছে!
সেদিন তুমি শাপলা তুলবে বলেছিলে,
চারদিকে জলে ঘেরা শাপলা, হিংসে হয় যদি আমিও শাপলা হতে পারতাম;
বৃষ্টি জানে তুমি শাপলা ভালোবাসো কিন্তু জানে না রাত্রি বেলা আমার জ্বর এসেছিলো!
রাত্রি বেলা জ্বর এসেছিলো,
এখন বৃষ্টি এসেছে তোমার খবর নিয়ে;
হতচ্ছাড়া মেঘ বৃষ্টি নামিয়ে ফাঁকি দিতে চায় কথাটা ভেবেই বুক কেঁপে উঠলো;
Comments