Posts

অনুবাদ —

Image
একজন অনুবাদক যখন একটা বিষয় ভাবানুবাদ করেন তখন তিনি আসলে টেস্কট নয়, অনুবাদ করেন একটা সংস্কৃতি। অনুবাদ করেন মাটি। তার রস। তিনি অনুবাদ করেন সেই সংস্কৃতির হাওয়া, জলবিন্দু আর ভেসে যাওয়া ফুলের রেণু। অনুবাদ করেন অন্দরমহল আর লুকোনো বারান্দা। যে বারান্দা সেই সংস্কৃতির, সেই ভাষাভাষি মানুষের বুকের ভেতর থাকে। একজন অনুবাদকের কাজ গোয়েন্দার মতো সেই বারান্দাকে খুঁজে বের করা আর হাওয়ায় হাওয়ায় তার অস্তিত্ত্ব, তার সুবাসকে ছড়িয়ে দেওয়া দূর থেকে দূরে।  হয়তো তাই, Rainer Schulte বলেছিলেন, ‘Translators never come to rest; they are constantly in two places at the same time by building associations that carry the foreign into the known of their own language.’  অনুবাদক হিসেবে আমিও এ চেষ্টাই শুধু করেছি। হয়তো প্রত্যেকবার সফল হইনি। পড়ে গেছি। কিন্তু আবার উঠে দাঁড়িয়ে চেষ্টা করেছি যে ভাষার অনুবাদ করছি তার প্রতিধ্বনি হয়ে ওঠার।    এ প্রসঙ্গে কয়েকটা কথা বলি। একজন প্রকৃত অনুবাদকের কাছে তিনটে জিনিস থাকা প্রয়োজন। এক, মায়ের হৃদয়, দুই, ম্যাজিশিয়ানের উত্তরীয় আর তিন, অদম্য খিদে। এই তিনটে বিষয় একজন অনুবাদকক...

২৩ | ফেব্রুয়ারি সংখ্যা | ২০২৫

Image
  “অকালে মরার খবর হয়নি আর, এই ভেবে ভালোবাসা হীন যে কটা পাখি এখনো বেঁচে আছে আকাশের বুকে ভবিষ্য তহবিলে রাখা আধুনিক বন্ধনে। কাল রাতে যাকে লুকিয়ে রাখবো বলে ঘুমাতে গিয়েছিলাম, সে খুব ভোরে তুলে দিয়েছে। বাধ্য আইনমন্ত্রী, ব্যারিস্টার, শফিক অন্ধ রাতে বেঁচে থাকা উল্লাসে, মেহগনি ডালের ওপর বোকা পর্দায় সংসার পাতা দেখে খুশি হয়ে গেছে। আহ্! সুজাতা সুন্দর পৃথিবী” (পাঠ করুন লেখক এর নামে ক্লিক করে) সূচিপত্র   কবিতা বিষয়ক গদ্য — জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়  ,  অনিকেশ দাশগুপ্ত ব্যক্তিগত গদ্য — সুরজিৎ বেরা কবিতা — সুকান্ত দে ,  জয়াশিস ঘোষ ,  তন্ময় ভট্টাচার্য অরিত্র দ্বিবেদী ,  সন্দীপন গুপ্ত

একটি কবিতা সিরিজ —

Image
  ১ নক্ষত্রের মাজার সংজ্ঞায়িত ওতে ওষ্ঠ আর চলে যাওয়াটুকু আছে। চিরবিড়ানি সিগারেটে ছ্যাঁকা খায় সত্য, কঠিন স্নায়ুতন্ত্র সরীসৃপ চলাচল  আর শ্মশানের স্থবিরতা। ২ লাল ফুটিফাটা মাটি থেকে যে নীল তাতে সব উৎক্ষিপ্ত হল। শ্যাওলা আর সুখ জ্ঞানাতীত, শ্রুতিগোচর হয়, জ্ঞান থাকলে সমাজের চোখে সফল উন্মাদ হতাম, তবু হাত পা ছুঁড়ি অনিমিখ। ৩ মায়ের মতন অবক্ষয় শিবালিক, জড়িয়ে পোড়া মৃত্যুশব্দ দিতে পারি। উদগ্র দুঃখ নালিশ করেছে আমি বিশ্বাসঘাতক বুকের মধ্যে গুটিসুটি আবেশে শীতমোচন হয়, বুড়ো আঙ্গুলই দেখি তবু সবটুকু চাই সন্ত্রস্ত সিপাই যে উর্বর জমি দিয়ে হাঁটে  তার চাঁদ নক্ষত্র গালে ন্যাকামোয় মাখামাখি হোক,  তবু সবটুকু চাই। ৪ শাদা সমুদ্রে বৈদেশিক আক্রমণে আয় ব্যয় থাকুক, আক্ষেপ ছুঁড়ে মারো এ বুকে, ওষুধ খেয়ে ঘুম আসুক। মালতীগুলঞ্চ মাথার কাছে রাখো  সরোদে বাঁধো বুক, গাঙ ভাসিয়ে চলো। সত্য ঝাপাঝাপি বৈতরণী পার! তুমিই সত্য এটাই সহজপাঠের অক্ষরজ্ঞান এসব নোনা ধবধবে কালো সাদা নিষ্প্রয়োজন। ৫ সরে সরে অন্ধকার উজ্জ্বল পাথরের দৃশ্য উৎখাত করে বাইরে শব্দব্রহ্ম রাত্রি রচনা, সময়স্খলনের সাহসিকতা বুক পাতা সট...

গুচ্ছ কবিতা —

Image
বাবা আমি আগুন হাতে_ বাবা শুয়ে আমাদের আগুন সম্পর্ক ভাত হয়ে যাচ্ছে। আগুন ঠেকাতে পারিনি _ তবু মুখ থেকে আমি নেমে যাই। জল থেকে আমি নেমে যাই গঙ্গা গঙ্গায় _ ডুবে যায় বাবা। শব্দ যে শব্দ শুনে অন্ধ মানুষেরা রাত বুঝে নেয় সেই শব্দের ধারে আমি বসে থাকি। বসে থাকি ভিজে বেড়ালের ছায়ায়। চিতাবাঘ নেমে আসে ঘরে ঘরের মধ্যে কাঁটা রোদ। চায়ের বাগান বসে রোজ। রোজ নামে চিতাবাঘের নখের দাগ আমি কান পেতে শব্দ শুনি। নিয়মিত অন্ধ হয়ে যায় ইন্দ্রের ভাতের থালা। নদী ও নারী খরগোশের পায়ের তলায় বরফের ঘর নদীটি বয়ে যাচ্ছে বাসন্তী হাওয়ায় সাদা খাতার ভেতর বৃষ্টির আওয়াজ কপালে দুপুরের টিপ। নৌকোর জলে তখন কাগজের স্রোত রান্না ঘরে সবে সকাল। পোড়া দেশলাই কাঠি হয়ে ঘোর মায়ায় আমার অন্ধকার ক্রমশ পেঙ্গুইনের মতো ডুবে যাচ্ছে। মাস্তুল সর তুলে নিচ্ছি বুকের চামচ থেকে আর নুয়ে পড়ছি আপেল তুষারে। চামড়ার ফুল_ নোঙরে জাহাজ। এমন নাভি সমুদ্রে নৌকো ভাসিয়ে দিই সিংহ রাশি ভেসে ওঠে মোহনার দোলনায় রাতে রাতে অভ্রের ভ্রুণ। কৃষ্ণপক্ষ চকচক করছে লেবুর সরবতে। 

একটি কবিতা সিরিজ

Image
  ১. নূহের নৌকাটি ভেসে যায় বুক চিরে প্লাবিত বন্যায় কে তুমি মৎস অবতার, ভেসে যাও দুর্বিনীত স্রোত জল ,আমাকে চেনাও সংসার, অর্থ চিন্তা মরণের খেলা এসবের মধ্যে থেকে পড়ে আসে বেলা ভূমিকায় ছিল কিছু পুরাণ বর্ণনা  সেসব ভুলেছি আমি, আমাকে চিনিনা  অথবা চিনেছি স্রোত-জল, জলের পরশ ভেঙে ফেলি নিরন্তর ভরে আনা পুরানো কলস ২. গোপনে ফেরাবো তাকে, প্রতিবার  ভাবের প্রতিটি কথা যেভাবে বলার  বলা হয়ে ওঠেনি কখনো লীন রাত্রি, রাত্রিমথ উড়ে যায় গান ভেসে আসে অপূর্ব সন্ধ্যায় গান শুনে ফিরে আসা হলো না এখনো সমস্ত বিগ্রহ জুড়ে অসীম জোছনা বিগ্রহে দেবতা ছিল অথবা ছিল না  ভাবের প্রতিটি কথা  তোমাকে বলার ছিল নাকি? আমি সেই দোলাচলে ঝুলে থাকি ৩. এই জল, জলস্রোত, এখানে অতল থৈ নেই, নেই থৈ , শুধু ডুব দেওয়া বাকি আছে এখনও রপ্ত নেই, জানা বাকি কতগুলি সাঁতার কৌশল  তাই বুঝি ভারী জলে ডুবে যাওয়া ছাড়া  এখন আমার কিছু বাকি পড়ে নেই ৪. ফিরে আসি অন্ধকারে, পথে চাঁদ আসে, ধীরে পায়ে আমাদের সাথে যেই রাত চন্দ্রাহত সেই রাতে জ্বালাই আগুনে জলের মতন নীল শিখা, রোশনাই প্রলাপ বকার কথা ভাবি ঘুমের ভিতরে চরাচরে কত...

কবিতা গুচ্ছ

Image
  বোধ কি লাভ এ মুঠি শক্ত করে পরিযায়ী ওড়াউড়ি !  আদৃত রাখি পরিমিত কমুন্ডলে স্মৃতি-সম্বল, গণ্ডুষে গ্রহণ প্রেমের অক্ষর– শাল্মলী তলায়, শিশিরের নির্মম স্নানে, প্রচ্ছদ – ছন্দ হীন !  উদ্বায়ী মেঘের মতো গৃদ্ধকূট পাহাড়ের দিকে দৃষ্টির ভরে যাওয়া,  বীতরাগের বিভাব জ্বেলে শ্রমনের মাঝে অগ্রন্হুিত মর্মকথা শুনি  পিনদ্ধ বোধের ভগবৎ উচ্চারণ। তবে, ও বালিহাঁস !   কি লাভ এ মুঠি শক্ত করে পরিযায়ী ওড়াউড়ি ! দ্বন্দ্ব নিশঃব্দ আলোর পথে  বিকচ বিশ্বাস—দ্বিধাহীন, প্রথাগত আদরের গরিষ্ঠ চুম্বন জাগায় জিজীবিষা,অধি-বাসে নির্মিতি নিলীন। প্রথাহীন ভাবে যখনই ভেবেছি তোমাকে গভীর জলের মতো তৎসম উৎসাহে, সাগরের শীতে একাকী রোদ মাখি বিষাদ বেলায়, কমলিনী সাগ্রহে।  অফুরান ফসলের মাঠ, উতরোল উৎসারে তানপুরা বাজে কলতান সুরে… দধীচির অণিক প্রমার মতো ঋত-স্বর জীমূত জীবনের কথা বলে।  মিছিল থেকে নির্মোক নীল মাছি হয়ে দেখেছি, হেমন্তের কুয়াশার শেষে জুগুপ্সার জুজু-রঙের প্লাবনে ভাসে চির-দ্বন্দ্বের আমাদের এ ঘর। সাধনা দুপুর-শরীর ধুলো উড়ে চলে যায় শুণ্য-সীমার সীমন্তে লোচন নাচ পরাশর পথে আয়ু দীর্ঘ হলে কনক তৃষার জলে,অসু...

একটি কবিতা সিরিজ

Image
  ১| আনুনাসিক প্যানপ্যানানি থেকে অনেক দূরে সরে গেছে জাদু-যান কোনও বাম্পারে আর থামানো যাবে না গ্রামীণ মূকাভিনয় চ্যাপলিন বসে আছে স্টিয়ারিং ধরে বেখেয়াল ভাইরাস হয়ে খেয়ে যায় মগজের দানা অশ্রুগ্রন্থি জাগলিং করে ট্রাফিকের বাড়ি পিচকারি নিয়ে আসে শরতের মেঘ , নার্সিসাস এই প্যাস্টেল-দেশে কবিতা কাফেলা । ২| পাদানিতে পা দিয়ে আছে ভিখারিনীর খিলখিল দু- পয়সা বেশি ঝনঝন করে মনের থালায় ঢালাই রাস্তা চিরে ঢুকে যায় খিড়কি বা সদরে ছুটে যায় পাতিহাঁস চিনা মুরগির দল পুণ্যিপুকুরে সাঁতার কাটে দুপুরের সূর্যটা  সেও চাইছে না আজ বিকেল হোক কানা নদীটি আগলে রাখে অন্ধ ঈশাণ মাঝি । ৩| কাঁচা বাঁশের মাচায় পাবে তাসের দেশ বিবি খেলা ঘোরালে সাহেবের রাগ কাগজের নক্সায় একদিকে সুখ ,তার ওপারে অসুখ কবরেজমশাই সাইকেল নিয়ে আসে তার স্টেথো আজো জানে না হৃদয়ের আশেপাশে কতগুলো ভাঙা হাড় আছে । ৪| পার্থেনিয়ামকে দেখতে মন্দ লাগে না শিয়াল কাঁটার পাশে ফুটে আছে হলুদ শৈশব রূপ দু-ফোঁটা রক্ত ঝরাবে, অরূপ দেবে সুধা এইপথে কাজললতা বিক্রি করে মোহ ভালবাসা কাঁদে যত , কাঁদায় না তার কণাও ৫| যাত্রী জাদুকর হলে গাড়িটিও জাদুঘর ধানের মড়াই থেকে নেমে আসে ধাতব ...