Posts

সর্বশেষ

ডিসেম্বর সংখ্যা — অনলাইন ছোট কাগজ

Image
  “One of the risks of being quiet is that the other people can fill your silence with their own interpretation: You’re bored. You’re depressed. You’re shy. You’re stuck up. You’re judgemental. When others can’t read us, they write their own story—not always one we choose or that’s true to who we are.” ― Sophia Dembling (পাঠ করুন লেখক/লেখিকা -র নামে ক্লিক করে) নিবন্ধ - শুভদীপ মৈত্র  ,  সৌমাল্য মুখোপাধ্যায় সাক্ষাৎকার - সাহিত্যিক ও সম্পাদক সব্যসাচী সেন আলাপচারিতায়: জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় লোককথা - আফ্রিকান জনজাতির দু'টি লোককথা অনুবাদ ও পুনঃকথন: শতানীক রায় অনুবাদ কবিতা - জয়া চৌধুরী , শ্রাবণী গুপ্ত ,  মোহনা মজুমদার

গল্প - জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
  (১) অণু-পরমাণুরা এমনিতেও এখানে ওখানে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। আজ অবধি তা নিয়ে কোনো গোলমাল হয় নাই। মাঝ থেকে মানুষ এসে এমন কায়দা করে দিলে… যে দুটো শহর ঝলসে গেল।  প্রথম শো     সুপার মারিও           স্টেশন থেকে ক্রমশ দূরে সরতে সরতে প্রথমে আশেপাশে রাস্তা ঘাটের চেহারা বদলায়, তারপর বাড়ি-ঘরের উচ্চতা হ্রাস পায়... একসময়ে টাউনের আধুনিকতাকে একদম পেছনে ফেলে ক্রমে পাড়া-গেঁয়ে হয়ে ওঠে সব কিছু। এখানে ওখানে উঁকি দেয় হাঁস-পুকুর আর নারকেল-সুপুরির বাগান মাথা তুলে দাঁড়ায়। হাইস্কুলের মাঠে বাঁশের গোলপোস্ট আর তার সামনে ঘেঁটে থাকা কাদা জানিয়ে দেয়, এই মাঠে এখনও দাপিয়ে বেড়ায় দামাল ছেলেরা। কোনও নিচু বাড়ির দেওয়ালে সাড়ি সাড়ি ঘুঁটে শুকোতে দেখা যায় চড়া রোদে। ব্যাটারিতে চলা অডিও প্লেয়ার আর মাইকের চোং নিয়ে কোনও আসন্ন যাত্রা, ম্যাজিক শো অথবা ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রচার করতে করতে চলে যায় সাইকেল ভ্যান। তাঁবু খাঠানো হয় গাজনতলার মাঠে। যাত্রা, কীর্তন, পালা-গান, মেলা… যখন আর কিছু থাকে না, শুধু খুঁটিগুলো পড়ে থাকে এদিক ওদিক... বাঁধা গোরু আর ছাড়া ছাগলে তার চারপাশে চড়ে খায়। গোপীবল...

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৯

Image
  এবার থেকে নীলাদ্রি একটা ভরসা পেল। আর যাই হোক নিজের শহর ছেড়ে এই যে বড় শহরে এসে এখানে থেকে পড়াশোনা করার যে প্রচেষ্টা, সেটা জানো আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবার একটা রাস্তা খুলে গেল। সত্যিই তো এত বড় শহরে এই কদিনের বন্ধুর তালিকায় অভিষেক যেন কোথাও তার কাছে একটা বড় সম্ভাবনা এবং একই সাথে বিরাট একটা আস্থা যেন তৈরি হয়ে উঠল ওর নিজের মনে। যখনই যেভাবেই হোক এবার তাহলে নিজের মতো করে ওকে সবটা বলা যাবে। হয়তো এই কথাগুলোই এতদিন ধরে নীলাদ্রি নিজের মনে চেপে পুষে রেখেছে। এদিকে কলেজের পড়াশোনার চাপ আস্তে আস্তে বাড়তে থাকলো। যেহেতু বাংলায় অনার্স নিয়ে পড়তে হচ্ছে তাকে, সেহেতু পড়াশোনার পাশাপাশি আরো নানা ধরনের পড়াশোনা তাকে অবশ্যই পড়তে হবে -- প্রায়শই এই ধরনের কথাবার্তা ও কলেজের প্রফেসরদের থেকে শোনে। আসলে অনার্স পড়তে আসা মানে অনেকটা বেশি পড়াশোনা, অনেকটা বেশি জানা, বিষয়ের প্রতি গভীর জ্ঞান আরোহন করা এসব কিছুই অনার্সের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর তাই কোনোভাবেই নীলাদ্রি এই অনার্স কি তাচ্ছিল্য করতে পারে না। তাই দিন হোক বা রাত প্রতিনিয়তই পড়াশোনার মধ্যে থাকতে থাকতে কেমন যেন পড়াশোনাটাকে তার অনেকটা ভালো ল...

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৮

Image
  পরের দিন খুব সকালেই নীলাদ্রি ঘুম থেকে উঠে পড়ল। মাথার মধ্যে তখন একটাই চিন্তা আর দুশ্চিন্তা পাক খাচ্ছে থেকে থেকে। যদি পড়াশোনাকে ঠিকভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে হয় তাহলে তো পড়াশোনার পাশাপাশি নানান ধরনের যোগাযোগ ও পড়াশোনা কেন্দ্রিক চর্চা তাকে চালিয়ে যেতেই হবে। আর তার জন্য শুধুমাত্র এই শহর থেকে কলকাতা যাতায়াত করে সম্ভব হয়ে উঠবে না। স্বপ্ন দেখা ভালো, কিন্তু স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে জীবনের প্রতিটি সময় থেকে মুহূর্তকে যেভাবে একটু একটু করে তৈরি করতে হয়, আজকের সকাল হওয়া দিন থেকে যেন ঠিক সেই রকমই তৈরির প্রথম পদক্ষেপ সুনিশ্চিত হল নীলাদির জীবনে। কিন্তু এই তৈরি করার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষ, সমাজ এবং সময় সবইতো তার হাতের বাইরে। কাকে নিয়ে এগিয়ে যাবে, আর কাকে না নিয়ে ফেলে রেখে যাবে তার শৈশবের স্মৃতি থেকে আজকের সময়। এই ধরনের নানা ভাবনা-চিন্তা মাথার মধ্যে উদ্ভট হয়ে সবকিছুকে যেন আচমকায় ভুলিয়ে দিল। সামান্য লাইব্রেরির কাজ করে ফিরে এসে বড় মামার কাছে তাকে যে কটু কথা শুনতে হয়েছে, সে কথাই যেন তাকে বারবার বিদ্ধ করছে। কিন্তু উপায়ও যে খুব একটা বেশি রয়েছে এমনটা নয়। বাড়ির আর্থিক অসংগতির একট...

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৭

Image
  কোনো রকমে নীলাদ্রির লাইব্রেরির টাকাটা জোগাড় হলো। এবার আর যাইহোক কিছুটা স্বস্তি। কলেজের পর এবার লাইব্রেরিতে কিছুটা কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে পারবে। একটা যেন ম্যাচ জিতে গেল। টান টান সে খেলা। শেষমেষ জিততে পারবে কিনা, এই সংশয় আর দ্বন্দ্ব ছিল। এভাবে কোনোদিন টাকার জন্য এতোটা লড়াই করতে হয়নি। এই ছোট্ট ঘটনা যেন ওকে জীবনের অনেকটা পথ চিনিয়ে দিল। পরের দিন কলেজে আবার তিন বন্ধু এক জাগায় হয়েছে। কথা বার্তা চলছে, যে সন্ধ্যায় যাবে লাইব্রেরিতে মেম্বারশিপ নিতে। ওইদিন কলেজে বাংলা বিভাগের একজন প্রফেসর উপন্যাস পড়াতে এলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর চোখের বালি। নীলাদ্রির প্রথম উপন্যাস পড়া। তাও আবার চোখের বালি। কতটুকুই বা জ্ঞান, অভিজ্ঞতা রয়েছে যে চোখের বালি পড়ে ফেলতে পারবে! ক্লাসে ওর প্রফেসর জিজ্ঞেস করল, কী বই পড়তে ভালো লাগে?  - ম্যাম মোটামুটি সব।  - গান শোনা হয়? - হ্যা।  - কোন লেখক প্রিয়? - একটু আমতা আমতা করে বলল, ম্যাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। - কী কী পড়েছ? ব্যাস এবার আর তেমন কোনো উত্তর নেই। আসলে নীলাদ্রি কোনদিনও বাংলা সেভাবে পড়েনি। ওই বাবার কাছে বার বার শুনতো রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিম, শরৎচন্...

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৬

Image
  সেদিন বিকেলে এগলি সেগলি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এসে পৌঁছল কলেজ স্ট্রিট। ছোটবেলা থেকেই নীলাদ্রি এই কলেজ স্ট্রিট সম্পর্কে জেনে এসেছে। কারণ ছোটবেলাতে ওর মামার বাড়ি এই অঞ্চলেই ছিল। তাই যতবার নিজের বাড়ি থেকে মামার বাড়িতে বেড়াতে আসতো তখন মাঝে মাঝেই এই কলেজ স্ট্রিট চত্বরে বেড়াতে আসতো বাবার হাত ধরে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ স্কোয়ার, কফি হাউজ, বসন্ত কেবিন এই সবগুলোই কেমন যেন চোখের সামনে পুরনো সেই ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট এর মত ভেসে উঠলো। আসার সময় দুই বন্ধুকেই বলেছে আজকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যাব। তাই একটু আগেই বেরিয়ে যাব।  কিন্তু তাড়াতাড়ি বাড়ি না ফিরে সোজা চলে এলো এই কলেজ স্ট্রিট পাড়ায়। সেই পুরনো বইয়ের দোকান, শত শত মানুষের আনাগোনা। বইপত্র ঘাটাঘাঁটি। বইপত্র কিছু কেনাকাটি, দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পড়ুয়া থেকে কত শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক প্রফেসরদের চলে এই বইপাড়ায় আনাগোনা। একটা চায়ের দোকানে নীলাদ্রি বসলো। এরপর ভাবনা চিন্তা করতে লাগলো যদি তাকে এই কলেজের পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় তাহলে নিজেকে কিছুটা উপার্জন করতে হবে। কেননা বাড়ি থেকে কিন্তু টাকা আসার অনিশ্চয়তা একট...

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৫

Image
আসলে তিন বন্ধুর মধ্যে অভিষেক অনেকটা হয়ে উঠেছিল কাছের। যেহেতু অভিষেকের বাড়িতেই বেশিরভাগ সময় নীলাদ্রি থাকত। কলকাতায় কলেজ। আবার কলেজ শেষে ট্রেনে করে যাওয়া অনেক সময় খুব সময় সাপেক্ষ হয়ে যেত,তাই মানিকতলা রোডের বাড়িতেই ছিল ওর থাকা। এই থাকতে থাকতে কত কথা,আলোচনা বা নিজেদের মতো করেই সময় কাটাত দুজনে। প্রকৃত বন্ধু পাওয়াটা সত্যিই অনেক ভাগ্যের- এমনই মনে করত, মাঝে মাঝে নীলাদ্রি। কেননা গ্রাম থেকে আসা কোন ছেলের পক্ষে কলকাতা নামক এই বিরাট শহরের ছায়ায় সুযোগ থাকে কম। আলিঙ্গন অপেক্ষা ঠকানোর কাজ থাকে বেশি। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে ওর এমনটা হলো না। একটা সময় থাকা খাওয়া সবই এই মানিকতলার বাড়িতে হতে থাকল। কলেজে তিন জনে সব সময়ের জন্য এক হয়ে থাকত। কলেজের সময় লাঞ্চ টাইমে ওরা তিন জনে প্রায় চলে যেত লেবুতলা পার্কে।যার অন্য নাম সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার। সেদিনের সব স্মৃতি মনেপড়ে যায় ওর আস্তে আস্তে। কলেজের পড়ার চাপ বাড়তেই থাকল। বইপত্র,যাতায়াত। এ লাইব্রেরি থেকে ও লাইব্রেরি। আবার সেখান থেকে অন্য লাইব্রেরি এভাবেই বাড়তে থাকল পড়াশোনার ব্যস্ততা ও চাপ। কিন্তু এই চাপ জোগানোর জন্য দরকার টাকা। মাসে মাসে ওর বাড়ি থেকে যে টাকা আসত, তাতে তেমন ...

“মহানগর” - ধীমান ব্রহ্মচারী | পর্ব ৪

Image
  কেন জানিনা সেদিনের সেই অনর্গল বলতে থাকা এই বিরাট শহরের কোলাহল থেকে নিঃশব্দে -অন্তরালে কোথাও কোন একটা অদৃষ্ট তার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে। সেখানে অবাধ উচ্ছাসকে নিজের পরিসরের বাইরে আগলে রাখা যায়। সেই আগলানোর কাজেই অপেক্ষা করে রয়েছে ভবিতব্য। নিজের ফেলে আসা স্মৃতির সঙ্গে কোথাও যে তার এক যোগসূত্রতা তৈরি হয়েছে। এমনকি তা খুব সহজেই অনুকরণীয়, তার একটা পূর্বাভাস লক্ষ্য করা গেল। সেদিনের রাতের পুরো শ্রীকান্ত তাকে নিয়ে গেল এক অজানা দেশে। যেখানে কোন এক গোপন ঘরের কোণে, একটা ছোট্ট প্রদীপের আলো জ্বেলে শাহজিকে অন্নদাদি রাতের খাবার হাতে করে মুখে তুলে দিচ্ছে। চারিদিকের অন্ধকার তখন অনেকটা কেটে গেছে। ভোরের দু'একটা পাখি ডাকছে পাশের বাড়ির বাগানে। বই হাতে নিয়ে কখন নীলাদ্রি ঘুমিয়ে গেছে। ঘরের ফ্যান লাইট সবই জ্বলছে। (তৃতীয় পর্ব থেকে কিছু অংশ) কলেজ শুরু হতে হতেই ওর বেশ একটা সময় কেটে যেতে থাকল । ওর শহরের অনেক বন্ধু-বান্ধবও নিজেদের শহর ছেড়ে এই কলকাতায় পড়াশোনার জন্য এসেছিল । সবার সঙ্গেই ও যোগাযোগ রাখত । রাখার কারণ, সবার সঙ্গেই ওর একটা নিবিড় সম্পর্ক ছিল । তাছাড়া বাইরে থেকে কোন ছেলে যখন কলকাতা নামক এই শহরের বুকে প...

কবিতা সিরিজ —

Image
(১) আমাদের সিঁড়িভাঙা অঙ্কে সে-অন্ধকার কাঙ্খিত ছিল কয়েকটি স্পর্শ... যেক'টি আলোর মতো কথা চুইয়ে চুইয়ে ছড়াল শরীরে                              গল্প হবে না তা তবুও শালুকবুকে দৃপ্ত মধুকর, সমাধান চেয়ে কত জমা হল রোদ (২) কোলাহল স্তব্ধ হয়েছিল                             সিঁড়িটির কোণে মিশে গিয়েছিল দুটি ছায়া কৌশলী সাঁতারে                     খুলেছিল তরঙ্গের পথ নাছোড় বালকটি কি চিনেছিল                                   ইমনকল্যাণ (৩) উষ্ণতার বিজ্ঞাপন ছিল না শহরে শরীরী হোর্ডিংয়ে বিরোধের নীলচে নোটিশ                 ছিঁড়ে এসেছিল কেউ আততায়ী! আততায়ী! তিরতিরে বাসন্তী হাওয়া তবুও তো দুই ঠোঁটে প্রণয়ী সময় ...