ভাদ্র—কবিতা সিরিজ
ভাদ্র
দূ রে... উলু দিচ্ছে মেয়েরা
তার কলমিলতার মতো পা দুখানি ডুব দিচ্ছে আলতায়
এরপর মেয়ে ঘরে ঘরে লক্ষ্মীশ্রী ছড়াতে ছড়াতে
ধানের ছড়ার মতো দুলবে
আর
সকলকে শান্তি দিয়ে যাবে
আমাকে তুই ডেকেছিলি ভাদু বলে
আজ দেখ চারপাশে ভদ্রেশ্বরীর শরীর
রোদ রোদ রোদ আর রোদ্দুর!
তুই চোখ বোজ
কোলে এসে শো আমার
জল যদি আসে নয়নে, আমি ঠোঁটে রাখছি তোর ঢেউ
ঘুমো তুই
এই অফুরান চন্দন স্টেশনের চবুতরায়
আমার কোলে দোল দোল দুলুনি ঘুমিয়ে থাক
আমি তোরে দেখি
আর
পাতা ঝরে ঝরে পড়ুক তোর মুখে, গায়ে, পায়ের শিকলে...
আজ ভাদ্রমাস
আজ বড় আকাঙ্ক্ষার মাস অনঙ্গ!
তোকেই সাজাচ্ছি আমি, গ্রামঘর সাজাচ্ছে তোকে
ধূপ দিচ্ছে চৌকাঠে, ধুনো দিচ্ছে সংসারের প্রাণে
আমরা প্রেমিক রোদ, আমরা পালিয়ে এসেছি
আজ এই মন্দিরে বিয়ে কর আমাকে আবার...
ভাদ্র ২
রোদ-স্নান করাই তোমায়
রোদের জ্যোৎস্না দিয়ে বুকের দিগন্তে আঁকি পাখি
ছোট ছোট উত্তীর্ণ পাখি
তোমার ঠোঁটের থেকে চুমু নিয়ে উড়ে আসে আমার স্তনের
তার কলমিলতার মতো পা দুখানি ডুব দিচ্ছে আলতায়
এরপর মেয়ে ঘরে ঘরে লক্ষ্মীশ্রী ছড়াতে ছড়াতে
ধানের ছড়ার মতো দুলবে
আর
সকলকে শান্তি দিয়ে যাবে
আমাকে তুই ডেকেছিলি ভাদু বলে
আজ দেখ চারপাশে ভদ্রেশ্বরীর শরীর
রোদ রোদ রোদ আর রোদ্দুর!
তুই চোখ বোজ
কোলে এসে শো আমার
জল যদি আসে নয়নে, আমি ঠোঁটে রাখছি তোর ঢেউ
ঘুমো তুই
এই অফুরান চন্দন স্টেশনের চবুতরায়
আমার কোলে দোল দোল দুলুনি ঘুমিয়ে থাক
আমি তোরে দেখি
আর
পাতা ঝরে ঝরে পড়ুক তোর মুখে, গায়ে, পায়ের শিকলে...
আজ ভাদ্রমাস
আজ বড় আকাঙ্ক্ষার মাস অনঙ্গ!
তোকেই সাজাচ্ছি আমি, গ্রামঘর সাজাচ্ছে তোকে
ধূপ দিচ্ছে চৌকাঠে, ধুনো দিচ্ছে সংসারের প্রাণে
আমরা প্রেমিক রোদ, আমরা পালিয়ে এসেছি
আজ এই মন্দিরে বিয়ে কর আমাকে আবার...
ভাদ্র ২
আজ
এই যে খুউব রোদ করে আছে চারপাশে
এই রোদ্দুর তোমার সারাশরীরে মাখিয়ে দিই আমি
হাতে, পায়ের পাতায়, নাভির রোমে, তোমার অবোধ মুখটিতে
কথা বলো
টুপটুপ লালা পড়ে আমার হৃদয়ে
আমি তার আলপনা এঁকে রাখি অশথের নিতল পাতায়
এসো
এই যে খুউব রোদ করে আছে চারপাশে
এই রোদ্দুর তোমার সারাশরীরে মাখিয়ে দিই আমি
হাতে, পায়ের পাতায়, নাভির রোমে, তোমার অবোধ মুখটিতে
কথা বলো
টুপটুপ লালা পড়ে আমার হৃদয়ে
আমি তার আলপনা এঁকে রাখি অশথের নিতল পাতায়
এসো
রোদ-স্নান করাই তোমায়
রোদের জ্যোৎস্না দিয়ে বুকের দিগন্তে আঁকি পাখি
ছোট ছোট উত্তীর্ণ পাখি
তোমার ঠোঁটের থেকে চুমু নিয়ে উড়ে আসে আমার স্তনের
বোঁটাতে নীলশিরা কেঁপে ওঠে আমার!
দুটি চোখ বুজে আসে ভাদ্রের দুপুরবেলায়
চলো
আমার এ স্তন থেকে রোদ্দুর পান করাই তোমায়
অফুরান সূর্যের দুগ্ধধারায় মুখ রাখো
সাদা, মুগ্ধ দুধ
গলে গলে ভেসে যাক চঞ্চল ঠোঁট
রোদের ভাদ্রের কাছে, ভাদ্রের রোদ্দুরের কাছে---
আমরা দুজনে আজ সঙ্গম আঁকি সারা আকাশটি জুড়ে জুড়ে...
দুটি চোখ বুজে আসে ভাদ্রের দুপুরবেলায়
চলো
আমার এ স্তন থেকে রোদ্দুর পান করাই তোমায়
অফুরান সূর্যের দুগ্ধধারায় মুখ রাখো
সাদা, মুগ্ধ দুধ
গলে গলে ভেসে যাক চঞ্চল ঠোঁট
রোদের ভাদ্রের কাছে, ভাদ্রের রোদ্দুরের কাছে---
আমরা দুজনে আজ সঙ্গম আঁকি সারা আকাশটি জুড়ে জুড়ে...
![]() |
Click now |
কাল ভাদ্র, মনে পড়ে?
চিরন্তন স্টেশনের কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছিস তুই
বরাভয় কিচ্ছু নেই
কোথাও তাহার কোনও পদচিহ্ন অক্ষত নেই
নেই সীমা
পারাবার
অভূতপূর্ব এই দুপুরের রোদ্দুরের ধারা
ধারা ধরে হেঁটে যাচ্ছে আরূঢ় মানুষ প্রান্তরে
প্রান্তরে প্রান্তরে পদক্ষেপের মতো ঘরদোর
ভিতরে ভিতরে তার সুফলার তীব্র আঁধিয়ারা
এই অন্ন
এ মনসা
এ তীক্ষ্ম সাপের মতো রোদ
কাহাকে শোনাও তুমি তোমাদের আত্মনাশগুলি
পথের পাথরে কাটে পায়ের নিচের উপশিরা
পথের রক্তে কাটে তোমাদের জন্মহীন নাড়ি
তবু দেখো ধান্যক্ষেত্র
অবাধ্য হয়েছে কার চুলে
চুলে তার বিলি দেয় ধানের দুধের মতো ছেলে
ছেলেটি পরম
সেই পুরুষ পরম আগুনই তো
যে অগ্নি মুখে করে খেলো তুমি বিশ্বমহীয়সী
এই ভরা ভাদরের অবজ্ঞার বল্গাহীন জলে
ভেসে যাও ভেসে যাও বেহুলার স্তন ছিঁড়ে নিয়ে
টুপটুপ রক্ত
ঐ দেখো কার বুক থেকে ঝরে
লখিন্দরের হাওয়া এসে লাগে রাঢ়ের অন্তরে
"ভাত দাও! ভাত দাও!" — ডেকে ওঠে ঋতুমতী নদী
তুমি ভাদ্র, তুমি অন্ন, তুমি মোর একান্ন সতী…
তারপর?
স্নিগ্ধ চরাচর
বালিদীর্ণ রিক্ত নারীদের
হাতে হাতে ফণীমনসা, হাতে হাতে নীল সর্পমালা
চারিপাশ
চুপচাপ, চুপচাপ মন্দিরের চাতাল
লাল, বড় লাল হয়ে বাজল কার ব্যথাতীত মূর্তিমতী জল
জল দিল
দিল জল
নাগরিক আঘাতের অর্ঘ্য
এই দীপে তুমি জ্বলে ওঠো!
পুড়ে যাও পুড়ে যাও বিতৃষ্ণ বনাঞ্চল জুড়ে
অন্ধচোখ খুঁটে খায় গ্রামীণ অশিক্ষিত আঁধার
চারিধার
স্তব্ধ রুদ্ধ চারিধার
তোমার কণ্ঠনালি বিক্রি করে প্রতিদিন সস্তাদরে, ট্রেনে—
আর
তুমি মৃত্যু দিয়ে
আর তুমি রক্ত দিয়ে
গরাসে গরাসে খাও বাংলাদেশ!
ভাদ্র ৫
পালকপিতার কাছে বসে
ময়ূরাক্ষী থেকে পাথর নিয়ে এসেছে সে
মায়েরা শিশুদের দাঁড় করিয়ে রেখেছে জানলায়
জানলায় জানলায় খাদ্যলালসা
পথ থেকে কুড়োনো ফকির আসে শিশুদের কাছে
হাসে
হাতে রাখে প্রবহমানতা
হাতে দেয় ঝুমঝুমির ধ্বনি
হাতে রাখে দুপুর
কেউ তার পুরনো বেদনা নিয়ে খেলা করে
সাক্ষী দেয় আবহমানকাল
ধ্বংস আর শৃঙ্গারের ভাষা
কেউ তার গন্ধে মাতাল
এ পাহাড়, এই দীর্ঘ টিলাদের সারি
এ রত্ন, ভীরু পায়ে হেঁটে আসা নারী
শিশুকে যমজ ক'রে রাত্রি আর সায়াহ্নে তোমার
ফিরে যায় ফিরে যায় গর্ভবতী একতারা পথে
পৃথিবীর সমস্ত জানলা খুলে দাও
খাদ্যের অভ্যাসে হাত পাতা ভাদ্রের শিশু
পালকপিতার কোলে ময়ূরাক্ষী-রৌদ্র হয়ে দুলুক
পথিক পিতার কোলে ফকিরের সুর হয়ে দুলুক দুলুক…
![]() |
Order now |
Comments
পরিপক্ক বক্তব্য
আপনার কবিতা এমন এক অন্তর্লীন মায়াসায়রের জলতলে প্রতিফলিত চিত্ররূপের বিমূর্ত স্বরূপ, যার কোন বিকল্প হয়না, পাঠসুখ নিয়ে যায় গভীরতর নিরুদ্দেশের দিকে...আহা!