দীপঙ্কর সরকার



পরিতাপ 

শূন্যের পথে বাড়িয়ে দু-হাত দুঃখের পেলাম
শুধু , ছুঁয়ে দ্যাখা হল না বলাকার শ্রেণি।
ল্যাম্পপোষ্টে দাঁড়িয়ে রোদ অনুভবে বুঝি
আকাশ এখনও উদার সংযত নয় অলিখিত
ইচ্ছাগুলি।

শূন্যের বুকে ফুটে থাকে আজও নক্ষত্ররাজি
আমাদের দৃষ্টি পৌঁছায় না সেখানে চোখ থাকে কামিনী কাঞ্চনে। আর স্বপ্নের বেলুনে হাওয়া
দিই , কখন যে ফানুস হয়ে চুপসে যায় টেরও
পাই না। শূন্যের পথে বাড়িয়ে দু-হাত কেবলই
হাহুতাশ করি।



মেয়েলি ভাষা  

মেয়েলি সব ভাষা কাকতাড়ুয়া যেন বাদে
প্রতিবাদে ব্যঙ্গ বিদ্রূপে ভরা। শুনতে মধুর
ভেতরে বিষ মাখা। রাগে গজ গজ ঠমকে
চমক অপভ্রংশ সব লোকায়ত অকেজো
অধরা।

নাচের মুদ্রায় প্রকাশ তার ভঙ্গি হাত পা নাড়া
অধরে মোনালিসা হাসি কৌতুকে সেরা। মেয়েলি
সব যত না শোনার তার চেয়ে বেশি দ্যাখা। 
কাগজে কলমে নাই বা হল লেখা , মুখে মুখে
ফেরে কুট কচালি রঙ্গ ব্যঙ্গে ঠাসা।



বিহার  

শূন্যতা থেকে কিছু দূরে মহাশূন্যতায় ভেসে যাচ্ছে
 এ হৃদয় আনন্দ গভীরে , জলের উচ্ছলতা মেখে
ডুবে যাচ্ছে জলজ নিকেতনে। চাঁদের স্নিগ্ধতা ছুঁয়ে
নক্ষত্র মালায় হারায় নিজেকে , বীভৎস বনের ভেতর
ঢুকে পড়ে সবুজ সন্ধানে। কখনও বা মেঘ হয়ে ভেসে
ফেরে হাওয়ায় হাওয়ায় , কাগজে কলমে লেখে নাম
এ হৃদয় অমর - অক্ষয়।


উড়ান  

শিশিরে ভেজা একসা হৃদয় কে আমায় মুছিয়ে দেবে
গা ! রোদ্দুর উঠবে যখন জানি শুকিয়ে কাঠ আমার
ছেলে বেলা।

দিগন্তে দেখব চেয়ে ধূসরতা ছড়িয়ে ইতস্তত , নদীর
বাঁকে খেলবে তখন পাতার সমাসমারোহ। ছেঁড়া মেঘ
উড়বে হাওয়ায় দুঃখ অবর্ণনীয়।

স্বজন সুজন কেউ পাশে নেই ফাঁকা মাঠে লাট খেয়ে যায় চাঁদিয়ালি -পেটকাটি , ঘাসেরা দ্যায় সজোরে হাত
তালি , মহাশূন্যের বুকে  বাজে আর্তি করুণ - নৃশংস -
তায় ভরে গেছে প্রচল পৃথিবী ।


Comments

আরও পড়ুন

ছোট গল্পগুলি

উপসংহার থেকে ফিরছি —কবিতা সিরিজ

জুজুতন্ত্রের সমূহ শ্বাপদ এবং হুজ্জতি

বাসন্তী প্রেম/পিনাকী বসু

নগ্ন দিনলিপি— কবিতা সিরিজ

অবগুণ্ঠন সাহিত্য পত্র ও কিছু কথা— অমিতাভ দাস

সাহিত্য বাজারের হাতে বাংলা ভাষাটার অবস্থা বড়ই করুণ----দীপ শেখর চক্রবর্তী

একটি কবিতা সিরিজ

শুভ্র সরকার

সম্পর্কগাছ— কবিতা সিরিজ