মোহনা মজুমদার




জিজীবিষা

ধরো কখনো ইচ্ছে করেই এলাম না
পুনশ্চ হঠাৎ করেই এসে দিয়ে গেলাম
বুনোফুলের ফোঁকড়ে লেগে থাকা মৃদু উল্কাজ্বর ।
সময় ভাঙতে ভাঙতে জড়ো করে চলেছি
কনফেসান আর ভষ্মপাথর ।
কী ভীষণ পারদর্শী চালে চেষ্টা চলছে -
বিটঙ্কে দৃষ্টি ।
অকষ্মাৎ মাংসভুক দানব ঢুকে পড়ে ঝরনার ভেতর
কুসুমে গেথে যায় নিথর ভ্রম।
আমরা কি আদতে পালাতে চেয়েছিলাম ?
এই রুদ্ধতার আড়ালে যেটুকু পরিত্যক্ত
আগুন আজও ভাঙচুর ঘটায় ,
তাকে আমি রচনা করতে পারিনি ।
এই সাইকোপ্যাথিক দংশন কেবল
ফোঁটা ফোঁটা তেষ্টা সাজিয়ে
জলপ্রপাতের সামনে এসে দাঁড়ায় ।
এও কি তবে একপ্রকার জিজীবিষা নয় ?




গর্ভপাত

ফেনার মতো ভেসে উঠছি - কিংবা কাকতালীয়
হোক না এইটুকু থুথু উগড়ে - তবু
থ্যাতলানো রূপান্তর ।
হাঁটার গতি দ্রুত হলে
ক্রমশ সন্ধে নেমে আসে বৃত্তের শেকল বরাবর
আমি পেড়িয়ে যাই এক জানলা থেকে
পরের ,তার পরের ।
কেননা এই আবর্তন দাঁত কামড়ে অবিরাম
ফোপাচ্ছে।
অসম্ভব সব পাইন বনের ভেতর
দিয়ে চলতে চলতে যে দূরত্ব আদিম মুখের
সন্ধান করে ,
ব্যাকরণ সেখানে নির্বাণের বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করে ।
চোখ বাড়িয়ে দেখো- মাঠের কোণে
মৃত আয়ু পরিধির হিসেব কষে চলেছে।
এহেন মানচিত্রে পাখিদের ঘর নেই ।
ঘরের চারপাশে পাক খেতে খেতে
ঘরে ফেরা নেই ।
ভীড় বাড়তে থাকে । তুমি এসে ফিরে গেছো
শুনলাম।
দরজায় কারা যেন কতকাল
তালাবন্ধ করে রেখেছে ।
বাইরে অনন্ত মোহনা । পুড়ছে ।
হে বিদারক,পুড়তে দাও ,এটাই ভবিতব্য।
কমলালেবুর বাগানে এখন যত্ন করে
কেটে কেটে খাচ্ছি রাবড়ির গন্ধ।



কৈবল্য

তারপর ঝলসে যেতে যেতে একসময় মনে হলো
তরঙ্গের দেওয়াল টপকে লার্ভাকীট ঘুমিয়ে আছে।
নিরস্ত্র ছায়া। ফাঁক দিয়ে বেড়িয়ে পড়ে ঈশ্বরের শেকড়।
খুঁড়তে খানিক বিব্রত বোধ হয়।

এবারের মড়কে
বিভূতিভূষন এসেছেন।
বেতারে তখনও বাজছে
মহালয়ার গান ।

স্পষ্টতই নিজেকে ভাঙতে ভাঙতে
পৃথিবীর সব থেকে খারাপ মানুষ
হয়ে ওঠাটাও যে
একটা সাধনা , তাই নয় কি ?
এসো ধর্মভ্রষ্ঠ পুরুষ, মৌরি গন্ধে গলা ডুবিয়ে
পালানোর ফন্দি আঁটি ।




Comments

আরও পড়ুন

ছোট গল্পগুলি

একটি কবিতা সিরিজ

জুজুতন্ত্রের সমূহ শ্বাপদ এবং হুজ্জতি

কবিতা

উপসংহার থেকে ফিরছি —কবিতা সিরিজ

কবিতা সিরিজ

বাসন্তী প্রেম/পিনাকী বসু

তন্ময় ভট্টাচার্য

অবগুণ্ঠন সাহিত্য পত্র ও কিছু কথা— অমিতাভ দাস

সাহিত্য বাজারের হাতে বাংলা ভাষাটার অবস্থা বড়ই করুণ----দীপ শেখর চক্রবর্তী