Posts

Showing posts with the label ধারাবাহিক

কবিতা— আশীষ সাহা

Image
আশীষ সাহা কৌটো ভর্তি কুমিরের ডানা ঝাপটানোর শব্দ   অলংকরণ-নম্রতা বালা (১) মানুষ যেদিকে যায় সে দিকে আর কাঁকড়া যায় না। কাঁকড়ার অন্য গর্ত আছে, বালির ভেতর। মানুষ যেদিকে যায়  সে দিকে স্প্রিং এঁকে বেঁকে গেছে। জেরক্স করে বানানো বইয়ের ভেতর দিয়ে কি চমৎকার আনন্দ-বুমেরাং থাকে পাতা জুড়ে ভাতমাখা হলে কেউ হারাতে চায় না। (২) টমেটোর ম্যাগাজিন পড়ি অকালে ফুটেছে শাপলা তার ঘাঁটি ধরে তুলে শুঁকেছি শিকড় এইসব করে কেটেছে মাসের প্রথম দিন এখনো বাকি আছে জল ভরা। আর ট্যাংক ভরে গেলে তিনতলায় সুইচ নেভাতে যাওয়া (৩) পতঙ্গ বিশারদ এই অস্তিত্ব প্রণাম করছি মাটিতে ঠোঁট ঠেকিয়ে অস্তিত্ব কালো জেল পেন দিয়ে লেখার পর শব্দ টা কেটে দিলাম কালো জেল পেন মুখ থেকে পা পর্যন্ত একটা দাগ কাটে কাগজের আমি ওকে বাদ দিলাম যেভাবে মরে যায় গোয়েন্দা যেভাবে মরে যায় মাদুর চেটে বানানো মশাল (৪) গায়ে ধোঁয়া এসে লাগে শহরের অপ্সরা চূর্ণ শুনে পথশিশু এদিকে তাকিয়ে খিল্লি করছিল বয়সের আগেই তারা বিড়ি খেতে শিখে যাবে বয়সের আগেই তারা শিখে যাবে ট্রেনে যেতে টিকিট লাগে না। (৫) নখ দিয়ে চামড়া খুবলে দিলে ক্ষতস্থান জেগে ওঠে আবার এখন অদগ্ধ তোমার পরিণত

কবিতা—নয়ন রায়

Image
  অলংকরণ-নম্রতা বালা (১) চিহ্ন নেই এমন শোকের দিনেও দারুণ উন্মাদনায় টইটুম্বুর কিশোরীর ঠোঁট। উলঙ্গ পায়ে দু'কদম হেঁটেই– ভীষণ ক্লান্ত! মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে গেয়ে উঠলো আবদুল গাফফার চৌধুরীর– দুটো লাইন। "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি" আমি কি তোমায় ভুলিতে পারি? অথচ তার মনে সামান্য রক্তের চিহ্নও নেই। হায় দুমুখো মানুষ এমন শোকের দিনেও শান্তির খোঁজে বিহ্বল… (২) শোকগাথা স্ফটিকগিড়ি হতে নেমে আসেন দেবাদি-দেব বাতাসে বাতাসে তখন একটিই ধ্বনি,একটিই সংবাদ,একটিই শোকগাথা বিবাহযোগ্য কুমারীর প্রয়াণ তাও এক অকালকুষ্মাণ্ডের জন্য। (৩) আকুতি রাত্রি গভীর হলে আরো গভীরে যাই মনে পড়ে— বিক্ষুব্ধ সৈনিকের আকুতি! আহা প্রেম! আমার উন্মাদ কৈশোরকে তুমি এনে দিতে পারতে, একটি সোনালী দুপুর অথবা বিশুদ্ধ বসন্ত। (৪) অভিশাপ জ্যাকেট জানে── কত জল খেয়ে সে প্রতিদিন ক্ষয় হয়। হে সুশ্রী নারী,শুধু তুমি জানলে না জলের বিন্দুগুলো একেকটি অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। (৫) দহন একটি রাতের মাঝামাঝি এসে যখন দেখি আমার সৃজনের থালা শূন্য তখন বুকে ভীষণ রকম জ্বালা হয়। সেদিন যেভাবে জ্বালা হয়েছিল প্রিয়তম মানুষের কষ্ট কুড়ানো দেখে…

কবিতা—শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায়

Image
  অলংকরণ-নম্রতা বালা উৎসর্গ : তথাগত পলাশ ও ক্লিশে লেখা (১) বসন্তে যুগল দেখি ব্যালকনি থেকে দূরের রাস্তার মোড়ে, হলুদ আলোয় খোঁপায় পলাশ রাখে, কোমল স্বভাবে সিঁথিতে ছুঁইয়ে দেয় ,আবীর গুলাল নাকি ও সিঁদুর! দেখি রেখেছে কোমল ঠোঁট; ঠোঁটদুটি, হাত দুটি এক হয় মিলেমিশে যায় ছায়া, সুদীর্ঘ ছায়াটি এসে পড়ে, মিশে যায় অন্ধকার গেটে আমার হস্টেল গেট মাঝরাতে একা কেবল মনের কোণে ধুকপুক করে এমন সুন্দর ছবি, সুদীর্ঘ ছায়ার আমার বসন্তকাল বড়োই প্রখর আমার বসন্তকাল বিয়োগ সম্ভব কখনো পলাশ ফুল ছুঁয়েও দেখিনি (২) সামান্য পলাশ ফুল, গেরুয়া রঙের ফুটে আছে শীর্ণকায় রোদমাখা গাছে যে প্রেমিক তুলে আনে তাকে, আনমনে মালা গাঁথে, চিন্তা করে প্রেমিকার গলা নরম রোমশ গ্রীবা, আবীরে রাঙানো ঘামবিন্দু তায়, চেয়ে থাকে কামনায় আঙুল ছুঁইয়ে তাকে মুছে নিতে কতটুকু আর পরিশ্রম লাগে বলো, হে প্রেমিক তোমাকে কখনো কেউ বলেনি তুমিও নতুন বসন্ত-ফুল ছিনিয়ে নিয়েছো আগুনে আগুন ঝরা শীর্ণ গাছ থেকে খোঁপায় সাজাবে বলে কেড়েছো ফুলের ঘ্রাণ, স্বপ্ন, গেহ,গর্ভ আর সবটুকু একদিন অভিসার হবে বলে, পাপী!

আলো ছায়া —সুদেষ্ণা ব্যানার্জি

Image
অলংকরণ–বিজয় দাস কো নো কোনো গল্প আধভাঙা থেকে যায়, শেষ হয়েও হতে চায়না। চরিত্রগুলোর ঘুষঘুষুনি জ্বর কাটতেই ক্রুদ্ধ জলের স্রোতে ভেসে যায় গল্পের নৌকো। আকাশ থেকে খসে পড়ে ইতিহাসের শোক মোচনকারী বিষণ্নতা। স্মৃতির ভুবনডাঙ্গায় মেঘ করে আসে। প্রতিটা আত্মার সাথে খেলা করে অসময়। কর্ম ব্যস্ত জীবনের বাইরে ও ভেতরে লেগে থাকে বিকেলের অমসৃণ বাতাস। আত্মার কুচো টুকরোগুলো কাজ না পেয়ে মুখোমুখি বসে থাকে হুল ফুটিয়ে। হাওয়া ভাঙে মেঘ ।বাদ বাকি যা কিছু সব অকস্মাৎ ঘুরে দাঁড়ায় জাদুঘরের ঘড়ির ভিতরে। ছাতিম গাছে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে প্রেম। কখন যে গল্পের মোড় ঘুরে যায় টের পায় না চরিত্ররা। ক্রমে সব দৃশ্য ,পথ ও মানুষ মুছে যায়। কেন্দ্রবিন্দুতে থেকে যায় দুটো মূর্তি। জীবনের ঘেরাটোপে বস্তুত চুরি হয়ে যায় সুডৌল সম্পর্ক। উড়ে যায় প্রজাপতি। বিষণ্নতার কাছে মুক্তি মূল্য পেয়ে যায় সময়। সব ধ্বংসের পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম থেকে যায় কেবল। চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা বিশ্রাম। বেদনাহত মাছি প্রাগৈতিহাসিক পান্ডুলিপির বিছানায় ঘুমিয়ে মরে। থেমে থাকা মানে তো হেরে যাওয়া নয়; তাই এক গল্পের মধ্যাহ্নে শুরু হয় আর এক ঘুম ভাঙা গল্প। প্

কবিতা/বৈদূর্য্য সরকার

Image
  পালটি রোদ বা বৃষ্টির সাথে যারা পালটে নিয়েছে দল তাদের পকেটে ঢোকে অনেক হাসিমুখের ছবি, আমাদের চোখ টাটালেও কেয়ার করিনি কিছু খেলা দেখে গেছি দশ বিশ বছরের কৃষিকাজ।  অনেককিছুর ওপর যারা মুতবে বলেছিল শেষমেশ অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে সরকারি ভাতে, যারা সমাজ বদলে দেবে বলেছিল আজকাল দেখি তারা জড়ো হয় বিলিতি মদের সস্তা ঠেকে  যারা কবিতা দিয়ে ভাঙতে চেয়েছিল দেওয়াল তারা আনমনে লিখে যাচ্ছে 'বিজ্ঞাপন দেবেন না'।  কাউকে গিলে নিয়েছে প্রতিষ্ঠান কাউকে বা দল কেউ মরেছে সংসারে আবার কারো টাকা অসুখ, যারা বাজারে এখন করেকম্মে খাচ্ছে; বোঝা যায় কার কোথায় কী যেন চুলকে যাচ্ছে নিয়ম মেনে ।  কেরানি মাস্টার কর্পোরেট দলগত বুদ্ধিজীবী  সকলের গুহ্যদ্বারে শূল হয়ে প্রবেশ করব যে জিনিস তাকে বলা যেতে পারে প্রকৃত কবিতা,  কেউ কেউ চেষ্টা করেছিলেন যদিও সফলতা ধরা দেয়নি বড় সহজে, কেননা আমরা জানি কোনোদিন প্রসব বেদনা ছিল না খচ্চরদের ।  হিল টপ পাহাড়ে সুইসাইড পয়েন্ট দেখতে এসে বরাবর আমার মনে হয়েছে, সত্যি কি এখানে আদৌ কেউ... যেকোনো হত্যা লোককে ডেকে এনে দেখানো যায় কি !  কারোকারোর মুখে শুনেছি সুন্দর দৃশ্য দেখলে লোকে নাকি পেগলে মরার জন্যে ছটফট করে, সে

দীপ্তিমান বন্দ্যোপাধ্যায়

Image
  ( ১) এইসব একলা দুপুরে আমি তোমার সান্নিধ্য কামনা করি যেমন কামনা করি মনখারাপের দিনে মৃত্যুকে অথবা চরম কষ্টের দিনে শ্রামণ্য-সন্ন্যাস, তেমনই তোমাকে চাই অকৃত্রিমভাবে রোদ আর হাওয়ার এই মাঘে যখন স্নানের শেষে জ্বরমুখে আমি বসে আছি ছাদের ঘরে নিশ্চুপ একাকী  তখন তোমাকে চাই, তোমার সান্নিধ্যটুকুও, যেমনভাবে মৃত্যু চেয়েছি  তোমার চুম্বন চলাকালীন (২) শুধু তোমার মুখ এই একটুখানি দেখব বলে চিরজন্মের ব্যথা নিয়ে বসে থাকি আমার যত ঝগড়াঝাটি,যত গাল যত স্বপ্নকথা সব কিছু তোমার মুখের ওপর নিক্ষেপ করব বলেই মরণের আগে তোমিকে শেষ বার ছুঁয়ে যেতে চাই বিচ্ছেদের আগে শেষবার কানে শুনতে চাই তোমার ঝরণার প্রবাহধ্বনি। (৩) তুমি যাও আর আমাদের আকাশের চাঁদটা উজ্জ্বল হয়ে যায় আরও খানিক তুমি যাও আর রাতের বুকে কুয়াশার স্থবির নিশ্বাস শুনে ভালো লাগে তুমি যাও আর আমার কবিতার হিমবাহ থেক প্রাণ পায় একটি নদী তুমি গেলে আর পথে  কুকুরে অযথা চিৎকার ক্যারাম বোর্ডের জীর্ণ স্ট্যান্ড হলুদ বাল্ব বড় অসহ্য লাগে আর তুমি গেলে তাই  তোমার আসার জন্য আমি অপেক্ষা করি । (৪) এইসব একেকটি  চলে যাওয়ার ঘনঘটা পেরিয়ে আমি আর তুমি যুগ যুগ ধরে বসে থাকি সম্মিলিত

মোহনা মজুমদার

Image
জিজীবিষা ধরো কখনো ইচ্ছে করেই এলাম না পুনশ্চ হঠাৎ করেই এসে দিয়ে গেলাম বুনোফুলের ফোঁকড়ে লেগে থাকা মৃদু উল্কাজ্বর । সময় ভাঙতে ভাঙতে জড়ো করে চলেছি কনফেসান আর ভষ্মপাথর । কী ভীষণ পারদর্শী চালে চেষ্টা চলছে - বিটঙ্কে দৃষ্টি । অকষ্মাৎ মাংসভুক দানব ঢুকে পড়ে ঝরনার ভেতর কুসুমে গেথে যায় নিথর ভ্রম। আমরা কি আদতে পালাতে চেয়েছিলাম ? এই রুদ্ধতার আড়ালে যেটুকু পরিত্যক্ত আগুন আজও ভাঙচুর ঘটায় , তাকে আমি রচনা করতে পারিনি । এই সাইকোপ্যাথিক দংশন কেবল ফোঁটা ফোঁটা তেষ্টা সাজিয়ে জলপ্রপাতের সামনে এসে দাঁড়ায় । এও কি তবে একপ্রকার জিজীবিষা নয় ? গর্ভপাত ফেনার মতো ভেসে উঠছি - কিংবা কাকতালীয় হোক না এইটুকু থুথু উগড়ে - তবু থ্যাতলানো রূপান্তর । হাঁটার গতি দ্রুত হলে ক্রমশ সন্ধে নেমে আসে বৃত্তের শেকল বরাবর আমি পেড়িয়ে যাই এক জানলা থেকে পরের ,তার পরের । কেননা এই আবর্তন দাঁত কামড়ে অবিরাম ফোপাচ্ছে। অসম্ভব সব পাইন বনের ভেতর দিয়ে চলতে চলতে যে দূরত্ব আদিম মুখের সন্ধান করে , ব্যাকরণ সেখানে নির্বাণের বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করে । চোখ বাড়িয়ে দেখো- মাঠের কোণে মৃত আয়ু পরিধির হিসেব কষে চলেছে। এহেন মানচিত্রে পাখিদের ঘর নেই । ঘর

প্রবন্ধ: সুরজিৎ বেরা

Image
  ইতিকথায় জটার দেউল : উৎপত্তি ও জন্মতথ্য  বাংলা প্রবন্ধ সাহিত্যে ইতিহাস আলোচনার স্থান প্রায় শূণ্য বললেই চলে। কিছু পুরাতত্ত্ব অনুসন্ধান চললেও তাতে ইতিবাচক দর্শন তেমনভাবে প্রতিফলিত হয়নি। শুধুমাত্র মধুহীন ফুলের মত সৌন্দর্য বহন করেছে; প্রত্নতাত্ত্বিক আলোচনা তো অনেক দূরের ব্যাপার। তার একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণায় অবস্থিত জটার দেউল। ইতিহাসবিদ, প্রত্নতত্ত্ববিদ, সুন্দরবন গবেষকগণ প্রমুখ প্রচুর সময় ধরে গবেষণার পরেও 'জটার দেউল' এর ইতিহাস নিয়ে সম্পূর্ণ ইতিবাচক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করতে পারেননি। একের পর এক তর্ক বিতর্ক জমেছে এই দেউল নিয়ে।কুজ্ঝটিকাচ্ছন্ন ছায়ামূর্তি যেন নৈবেদ্য সাজিয়ে রেখেছে সৌধ জুড়ে। বিষয়সমূহের মধ্যে পার্থক্য থাকলেও সবগুলিতে বিশেষ আলোচনা প্রণালী রয়েছে।শ্রী বিনয়কুমার সরকার তাঁর 'ঐতিহাসিক প্রবন্ধ ' পুস্তকে বলেছেন -" মানব কখনও কোন দেশেই সার্বজনীন চরম সত্যের উপলব্ধি করে নাই। সকল যুগেই মানবসমাজ কালোপযোগী সমস্যার মীমাংসা করিয়া সাময়িক ও প্রাদেশিক ধর্মের প্রতিষ্ঠা করেছে মাত্র।" মণিনদী, আদি গঙ্গা ও তাদের অজস্র শাখানদী, উপনদীর